বাবাকে ভালোবাসার জন্য বিশেষ কোনো দিনের প্রয়োজন নেই। প্রতিটা মুহূর্ত, প্রতিটা দিনই বাবাকে ঘিরে। তবে প্রতি বছর জুনের তৃতীয় রবিবার পুরো বিশ্বে পালিত হয় ‘বাবা দিবস।’ আর তাই পুরো বিশ্বেই বাবাদের নিয়ে দিনটি বিশেষভাবে উদযাপন করেন সন্তানেরা। বাবা দিবসে বাবাকে নিয়ে দেখে ফেলতে পারেন চমৎকার একটি সিনেমা। জেনে নিন কিছু সিনেমা সম্পর্কে যেগুলোতে বাবার সঙ্গে সন্তানের সম্পর্কের মাধুর্যটাকে চমৎকার ভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।
ফাইন্ডিং লাভ ইন কোয়ারেন্টাইন: এক দুর্যোগের কারণে কোয়ারেন্টাইনে থাকা এক বাবার গল্প দেখানো হয়েছে ছবিতে।
ফেইথ আওয়ার ফাদার্স: ভিয়েতনামের যুদ্ধে অংশ নেন দুই তরুণ বাবা। পচিশ বছর পরে তাদের সন্তানদের দেখা হয় অচেনা দুজন মানুষ হিসেবে। তারা তাদের বাবাদের চিঠিগুলো থেকে জানতে পারে ভিয়েতনামের যুদ্ধে তাদের আত্মত্যাগের কথা।
সামার স্নো: স্ত্রী বিয়োগের পরে তিন সন্তানকে বড় করে তোলার দায়িত্ব পড়ে বাবার কাঁধে। ছোট মেয়ে নানা উপায়ে তার ভালোবাসার পরীক্ষা নেয়। তবে বাবা তার মেয়েকে বুঝতে পারেন। এটাও বুঝতে পারেন যে সৃষ্টিকর্তার ভালোবাসায় সবই সম্ভব।
সুইট, সুইট সামারটাইম: গরমের ছুটিতে ক্যালেবের বাবা জানিয়ে দেন তারা শিগগিরই গ্রামের বাড়ি ছেড়ে শহরে স্থায়ী হতে যাচ্ছেন। কাছের বন্ধুদের নিয়ে ছুটিটি পুরোপুরি উপভোগ করে নেয়ার জন্য ক্যালেব নানা পরিকল্পনা করে।
ফাদার্স: রিক টারিন্নো তিন বছর আগের এক দুর্ঘটনায় স্ত্রীকে হারান। সেই দুর্ঘটনার পর থেকে তিনি সৃষ্টিকর্তাকে সবকিছুর জন্য দোষারোপ করতেন। সন্তানের মুখের দিকে তাকিয়ে শান্তি পেতেন তিনি। আর তাই তিনি দুঃখ ভুলে থাকার চেষ্টা করা শুরু করেন।
বাইসাইকেল থিভস (১৯৪৮): দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধোত্তর ইতালিতে অর্থাভাবে থাকা এক বেকার বাবাকে তার পরিবারের সব চাহিদা পূরণ করতে দেখা যায়। অনেক কষ্টে একটা পোস্টার লাগিয়ে বেড়ানোর চাকরি জুটে তার কপালে। তবে সেই চাকরিতে সাইকেল থাকা আবশ্যক। স্ত্রী একটি চাদর বিক্রি করে সাইকেল কিনে দেয়। কিন্তু একদিন চুরি হয়ে সাইকেলটি। ছেলের সঙ্গে চুরি হয়ে যাওয়া বাইসাইকেল উদ্ধারের চেষ্টা করতে থাকে বাবা।
ফাদার অব দ্য ব্রাইড(১৯৫০): আর্থিক টানাপোড়েনে থাকা এক বাবার তার বেড়ে ওঠা মেয়েকে সুন্দর জীবন উপহার দেয়ার চেষ্টা নিয়ে তৈরি হয়েছে ছবির কাহিনী।
দ্য সাউন্ড অব মিউজিক (১৯৬৫): খুব কঠোর একজন বাবা ক্যাপ্টেন ভন ট্র্যাপ। স্ত্রী ছাড়া সাত ছেলে মেয়েকে বড় করার দায়িত্ব তার কাঁধে, তাই কড়া শাসনে রাখেন সন্তানদের। স্ত্রী বিয়োগের পরে আনন্দ এবং গান বন্ধ হয়ে যায় তার ঘরে। সন্তানদের দেখাশোনার জন্য মারিয়া নামে একজন ন্যানি মারিয়াকে রাখেন তিনি। মারিয়া সন্তানদেরকে গানের প্রতি অনুরক্ত করে। নানা কাহিনীর পরে সংগীত বিদ্বেষী ভন ট্র্যাপই একসময় সন্তানদের গানের ভক্ত হয়ে ওঠেন। নাৎসি বাহিনীকে সহায়তা করতে নৌবাহিনীর অফিসার ভন ট্র্যাপের যুদ্ধে যাওয়ার ডাক এলেও যুদ্ধে না যাওয়ার জন্য তিনি সন্তানদের সঙ্গে গানের প্রতিযোগিতায় অংশ নেন এবং জিতে যান। কিন্তু এতে নাৎসি বাহিনী তার পেছনে লাগে। তিনি দুর্গম আলপ পর্বতের মাঝে সন্তানদের নিয়ে হেঁটে সুইজারল্যান্ডের দিকে রওনা হন।
লাইফ ইজ বিউটিফুল (১৯৯৭): কৌতুক আর আবেগের মিশ্রণে তৈরি ‘লাইফ ইজ বিউটিফুল’ সিনেমাটিতে গুইডোর প্রেমকাহিনী এবং মৃত্যুপুরী থেকে তার ছেলেকে রক্ষার জন্য অবলম্বন করা বিভিন্ন কলাকৌশল দেখানো হয়েছে। ইতালির রাজনৈতিক পরিবেশ ঘোলা হওয়া শুরু করার পর জার্মান সৈন্যরা জুইশদের ধরে নিয়ে ‘কনসেইন্ট্রেশন ক্যাম্প’-এ পাঠাতে লাগলো। ছেলের জন্মদিনের দিন গুইডোসহ তার ছেলে এবং চাচাকে জার্মান সৈন্যরা ধরে নিয়ে যায়। যাবার পথে তার ছেলে যখন প্রশ্ন করে ‘বাবা আমরা কোথায় যাচ্ছি?’ গুইডো তার ছেলের কাছে কঠিন বাস্তবটাকে গোপন করে বিভিন্ন হাস্যরসাত্মক ঘটনার মাধ্যমে পরিস্থিতি হালকা করার চেষ্টা করতে থাকে। তারপর শুরু হয় তাদের ক্যাম্পে টিকে থাকার লড়াই।
ফাইন্ডিং নিমো (২০০৩): এক ক্লাউন মাছ আর তার ছেলেকে নিয়ে তৈরি হয়েছে ফাইন্ডিং নিমোর কাহিনী। বাবা ক্লাউন মাছের নাম মারলিন। আর ছেলে মাছের নাম হলো নিমো। বাবা-ছেলের নিখাদ ভালোবাসা এবং বন্ধুত্ব ফুটিয়ে তোলা হয়েছে ছবিতে।
দ্য রিটার্ন: বাসায় এসে হঠাৎ নিরুদ্দেশ থাকা বাবা’কে আবিষ্কার করে দুই ভাই। তাদের মা বলে তাদের বাবা এসেছে। তখন বিস্ময়ের ঘোর কাটতে চায়না তাদের। মা কেন্দ্রিক জীবনে হঠাৎ করে বাবার উপস্থিতি অন্যরকম মনে হয় তাদের কাছে। বাবা হিসেবে সহজে মানতে পারছেনা তারা, আবার বাবার সান্নিধ্য পেতেও ভালো লাগছে। বাবা এবং ছেলেদের মাঝে দূরত্ব, সময় কাটানো, কঠিন বাবার সন্তানের সঙ্গ পাওয়ার আকুতি দেখানো হয়েছে পুরো ছবি জুড়ে।
মিনারি: ১৯৮০ সালের এক অভিবাসী পরিবারকে নিয়ে ‘মিনারি’ ছবির কাহিনী। জীবনযাত্রার মান উন্নত করার জন্য তারা যুক্তরাষ্ট্রের আরকানসার একটি ফার্মে কাজ করা শুরু করে।