
অস্ট্রেলিয়ার ইতিহাসের প্রথম আদিবাসী নারী ক্রীড়াবিদ ফেইথ থমাস ৯০ বছর বয়সে মারা গেছেন। ১৯৫৮ সালে ফেব্রুয়ারিতে মেলবোর্নের জংশন ওভালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে অজিদের হয়ে তিনি একটি টেস্ট ম্যাচ খেলেছিলেন। গত ১৫ এপ্রিল সাবেক ফাস্ট বোলার ফেইথের মৃত্যুর খবরটি গণমাধ্যমে দুদিন পর প্রকাশিত হল।
এক সময় অস্ট্রেলিয়ায় স্টোলন জেনারেশন নীতি নামের একটি আইন জারি ছিল। এই আইনের মাধ্যমে দেশটির আদিবাসী এবং টরেস স্ট্রেইট আইল্যান্ডার বংশোদ্ভূত সন্তানদেরকে ফেডারেল এবং রাজ্য সরকারী সংস্থা এবং চার্চ মিশন তাদের নিজ নিজ সংসদের আইনের অধীনে পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন করেছিল। ফেইথ থমাস স্টোলন জেনারেশন নীতি সময়ের একমাত্র জীবিত ব্যক্তি ছিলেন।
সাউথ অস্ট্রেলিয়ার ফ্লিন্ডার রেঞ্জের কোলব্রুক হোমে বেড়ে ওঠা প্রয়াত এ ক্রিকেটার ছোটবেলায় বল না থাকলে বাড়িতে তৈরি ব্যাট এবং একটি পাথর ব্যবহার করে নোংরা রাস্তায় ক্রিকেট খেলতেন। তিনি অ্যাডিলেডের রয়্যাল অ্যাডিলেড হাসপাতালে নার্সিং পড়ার সুযোগ পেয়েছিলেন। সেখানে তিনি হকি এবং ক্রিকেট খেলতেন।
অ্যাডিলেডে ক্লাবের হয়ে খেলার মাধ্যমে ফেইথ তার কর্মজীবন শুরু করেন। অল্প সময়ের মধ্যেই তিনি সাউথ অস্ট্রেলিয়ার হয়ে খেলার জন্য ডাক পান। এর এক বছর পর অস্ট্রেলিয়ার হয়ে টেস্ট ম্যাচ খেলেন। এরপরে তাকে ইংল্যান্ড এবং নিউজিল্যান্ড সফরের জন্য দলে নেয়া হয়েছিল। কিন্তু তিনি ওই সময়ে নার্সিংকে ক্যারিয়ারে হিসেবে বেছে নিয়ে তাতে মনোনিবেশ করেন।

২০১৯ সালে ফেইথ ক্রিকেট এবং আদিবাসী এবং টরেস স্ট্রেট আইল্যান্ডার সম্প্রদায়ের জন্য অবদান রাখায় অর্ডার অফ অস্ট্রেলিয়ায় ভূষিত হন। অ্যাডিলেড স্ট্রাইকার্স প্রতি বছর ডব্লিউবিবিএল-এ ফেইথ থমাস ট্রফির হয়ে খেলার মাধ্যমে তাকে সম্মান জানায়।
ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার প্রধান নির্বাহী নিক হকলি শোক প্রকাশ করে বলেন, ‘ফেইথ থমাস ক্রিকেট এবং তার সম্প্রদায়ের জন্য এক বিস্ময়কর ও যুগান্তকারী অবদান রেখেছেন। যারা তাকে চেনেন বা জানেন, তারা সৌভাগ্যবান। তার অনেক অর্জনে যারা প্রভাবিত হয়েছিলেন, তাদের জন্য অত্যন্ত দুঃখের একদিন।’
‘টেস্ট ক্রিকেটে অস্ট্রেলিয়ার প্রতিনিধিত্বকারী প্রথম আদিবাসী মহিলা হিসেবে তিনি অনুপ্রেরণা ছিলেন এবং সবার জন্য খেলাটিতে বিশেষ চিহ্ন রেখে গেছেন। তিনি যে পরিমাণ মানুষকে সাহায্য করেছিলেন এবং তাদের জন্য যে সেবা এবং সহানুভূতি প্রদর্শন করেছিলেন, তা সত্যিই অসাধারণ ছিল।’
‘অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটজুড়ে সকলের পক্ষ থেকে আমি ফেইথের পরিবার, বন্ধুবান্ধব, সতীর্থ এবং যারা অস্ট্রেলিয়ার সবাই তার বিশাল অবদান থেকে উপকৃত হয়েছেন, তাদের প্রতি আমার আন্তরিক সমবেদনা জানাই।’