ঢাকাস্থ মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের পক্ষপাতদুষ্ট আচরণে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি।
বৃহস্পতিবার সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মো. নিজামুল হক ভূইয়া স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘‘১৪ ডিসেম্বর মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাস যেভাবে মানবাধিকারের দোহাই দিয়ে একটি বিশেষ রাজনৈতিক পক্ষের স্বার্থ-সিদ্ধির সহায়ক ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছেন তা উদ্বেগজনক।
সংবাদপত্রের মাধ্যমে জানা যায় যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত বিএনপি সমর্থিত ‘মায়ের ডাক’ নামক একটি সংগঠনের আহ্বানে ২০১৩ সালে একজন বিশেষ ব্যক্তির নিখোঁজ হওয়ার অভিযোগ শুনতে ঢাকা শহরের একটি বাড়িতে উপস্থিত হন। একই সময়ে খবর পেয়ে ‘মায়ের কান্না’ নামক সংগঠনের কর্মীরা তাদের মানবাধিকার লংঘনের বিষয়টি তাকে অবহিত করার জন্য একটি স্মারকলিপি প্রদানের চেষ্টা করেন। এ বিষয়ে তিনি কোনো কর্ণপাত করেননি।

উল্লেখ্য যে,‘মায়ের কান্না’ নামক সংগঠনটি সামরিক স্বৈরাচার জেনারেল জিয়ার সময়ে ১৯৭৭-৭৮ সালে বিচারের নামে হত্যা ও গুমের যে ঘটনা ঘটেছে এতে যারা স্বজন হারিয়েছেন তাদের মানবাধিকার রক্ষার আবেদন নিয়ে রাষ্ট্রদূতের স্মরণাপন্ন হয়েছিল। এদের সাথে কথা শুনতে অপারগতা মার্কিন রাষ্ট্রদূতের দ্বৈত আচরণের বহিঃপ্রকাশ, যা দুঃখজনক।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক বিষয়ে কয়েকটি দেশের কূটনীতিকগণ যেভাবে বক্তব্য রাখছেন ও অংশগ্রহণ করছেন তা দৃষ্টিকটুও কূটনৈতিক শিষ্টাচারের লঙ্ঘন। পরিতাপের বিষয় হলো যে, পশ্চিমা দেশগুলো যেমন- যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও যুক্তরাজ্য আমাদেরকে বিভিন্ন সময়ে মানবাধিকারের কথা বলে। অথচ তারাই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তাঁর পরিবারের স্বঘোষিত খুনী ও একাত্তরের বুদ্ধিজীবী হত্যাকারীদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দিয়ে যাচ্ছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি যেকোনো ধরনের মানবাধিকার লংঘনের বিরুদ্ধে সর্বদা সোচ্চার। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথিতযশা শিক্ষকসহ দেশের শ্রেষ্ঠ বুদ্ধিজীবীদের পরিকল্পিত হত্যার ঘটনা, ৭১-এর গণহত্যা ও মানবাধিকার লংঘন, এবং বিভিন্ন সামরিক শাসনামলে হত্যা ও গুমের যে ঘটনা ঘটেছিল আমরা সেসব বিয়য়েও মার্কিন রাষ্ট্রদূতসহ যারা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার রক্ষার দাবি করেন তাদের সুস্পষ্ট বক্তব্য দাবি করছি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি বিদেশি কূটনীতিকদের শিষ্টাচার বজায় রেখে পেশাগত দায়িত্ব পালনে ও সমাজের সকল শ্রেণি-গোষ্ঠীর মানুষের মানবধিকার রক্ষায় সরকারকে সহযোগিতার আহ্বান জানাচ্ছে।’’