নারায়ণগঞ্জ জেলার সদর উপজেলার উত্তর কাশিপুর দেওয়ানবাড়ি এলাকায় একটি অটোরিকশার শোরুমে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। এই বিস্ফোরণে অন্তত ১৬ জন আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে পাঁচজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে।
শনিবার ২৯ জুলাই সকাল ৯টার দিকে দেওয়ানবাড়ি এলাকার স্বপন মিয়ার মালিকানাধীন মুচকান ভবনের একতলায় অবস্থিত মুচকান মটরসে এই বিস্ফোরণ হয়। ভবনটি চারতলা। পঞ্চম তলার নির্মাণ কাজ চলছে।
ভবনের মালিকের আত্মীয় ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী আলী আহমেদ জানান, এর একতলায় মুচকান মটরস ও রফরফ মটরস নামের দু’টি অটোরিকশার শোরুম রয়েছে। সকাল সোয়া ৯টায় তিনি ভবনের পাশে তার দোকান খুলছিলেন। হঠাৎ মুচকান মটরস থেকে প্রচণ্ড বিস্ফোরণের শব্দ শুনতে পান। বিস্ফোরণে মনে হচ্ছিল কেউ তাকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিল। বিস্ফোরণে মুচকান মটরস সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত হয়ে যায়। এর দেয়াল ধ্বসে পড়ে। পিলার বাঁকা হয়ে যায়। পাশের রফ-রফ মটরসও একই রকম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
তিনি বলেন, আশপাশের প্রায় ২৫টি বাড়ির জানালার কাঁচ ভেঙ্গে বাড়ি ঘরের ভিতরে চলে গেছে। মনে হচ্ছে যেন বোমা বিস্ফোরণ হয়েছে। রাস্তা দিয়ে যেতে থাকা অটোরিকশাও উল্টে যায়। বিস্ফোরণে মুচকান মটরস’র বাড়ির লোকজনসহ, আশপাশের পথচারি, অটো রিক্সার ড্রাইভার, নির্মাণ শ্রমিকসহ কমপক্ষে ১৬ জন আহত হয়েছেন।
নারায়ণগঞ্জ ফায়ার ব্রিগেডের উপ-সহকারি পরিচালক ফখরুদ্দিন জানান, মুচকান ভবনের নিচ তলায় মুচকান মটরসে অটো রিক্সার শোরুমে আনুমানিক ৫০টি অটোরিক্সা ছিল, প্রচুর ব্যাটারি ও এসিড ছিল। যেগুলো দিয়ে হয়তো ব্যাটারি রিপেয়ার করা হতো। এখানে চার্জও দেয়া হতো ব্যাটারিতে। এসব থেকে বিস্ফোরণ ঘটে থাকতে পারে। সকালে এখানে বিস্ফোরণ ঘটে। বিস্ফোরণে নিচ তলার চারদিকের দেয়াল ধ্বসে পড়ে। বিল্ডিংয়ের কিছু অংশ খালের উপরেও আছে। সে অংশ কিছুটা দেবে গেছে। অটোরিকশাগুলো বিস্ফোরণে ছিটকে পড়ে।
তিনি বলেন, ফতুল্লা ফায়ার সার্ভিস, নারায়ণগঞ্জ ফায়ার সার্ভিস ও হাজীগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসসহ ফায়ার সার্ভিসের বেশ কয়েকটি ইউনিট এখানে কাজ করে। পুরো বিল্ডিংটি এখন ঝুঁকিপূর্ণ। কারণ বিল্ডিংয়ের কলাম, বেইজমেন্টের বীম ও কলামও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাই ভবনটি ধ্বসে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। আমরা এ ভবনে কাউকে যেতে মানা করছি। এখানে অটোরিকশার পার্টস কিনে এনে এসেম্বল করে বিক্রি করা হতো।
নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের আরএমও ডা. ফরহাদ জানান, বিস্ফোরণে আহত হয়ে হাসপাতালে মোট ১৬ জন আসেন। এদের মধ্যে পাঁচজনকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। মৃত কেউ আসেনি বা হাসপাতালে এসে মারা যায়নি। গুরুতর আহত অবস্থায় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে যাদের পাঠানো হয়েছে তারা হচ্ছে- হাসান (৩০), কাওসার (২০), মোহাম্মদ রানা (৩৫), টিটু (৭০) ও আব্দুর রাজ্জাক (৪৫)।
এছাড়া আহত বাকিরা হচ্ছে শাহেদা (৫০), আলী আকবর (২০), আশক আলী (২০), মিনু বেগম (৫০), আবুল হোসেন (৭৫), সাত্তার (২০), নাসিমা (৫০), মোর্শেদা বেগম (৫৫), রবিউল (২১), তাহের দেওয়ান (৫০) ও শাহানাজ (৩৮)।