রিদুয়ান ইসলাম: জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের একমাত্র ছাত্রী হল ‘বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল।’ ২০২২ সালের ১৭ মার্চ ১২০০ শিক্ষার্থীকে সিট বরাদ্দ দিয়ে হলে তোলা হয় ছাত্রীদের। হলে ওঠার একবছর পেরিয়ে গেলেও শিক্ষার্থীদের জন্য নেই কোনো মেডিকেল সুবিধা। একটি মাত্র হুইল চেয়ার ছাড়া হলটিতে মেডিকেল সরঞ্জাম বলার মতো কিছুই নেই। ফলে কোনো শিক্ষার্থী হঠাৎ করে অসুস্থ হয়ে গেলে প্রাথমিক চিকিৎসাও তেমনভাবে পাচ্ছে না।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০২০ সালের ২০ অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয় দিবসে উদ্বোধন করা হয় বহুল প্রতীক্ষিত বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল। এরপর প্রায় আড়াই বছর পরেও হলটিতে কোনো মেডিকেল সেন্টার খোলা হয়নি। যার কারণে শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যসেবা গ্রহণের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারের প্রতি নির্ভরশীল থাকতে হয়। কিন্তু দাপ্তরিক সময় ছাড়া অন্যান্য সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে বন্ধ থাকে মেডিকেল সেন্টারটিও।
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সাশ্রয়ের লক্ষ্যে একদিন অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রম চালু করে সপ্তাহে চারদিন ক্লাস নেওয়া হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভাগগুলোতে। স্বশরীরে ক্লাসের চারদিন ই-স্বাস্থ্যসেবা নেওয়ার সুযোগ থাকে শিক্ষার্থীদের। এতে স্বাস্থ্যসেবা সংক্রান্ত নানা সমস্যার সম্মুখীন হয়ে শিক্ষার্থীদের হয়তো ঢাকা মেডিকেল, সুমনা হাসপাতাল অথবা ঢাকা ন্যাশনাল মেডিকেলে ছুটতে হচ্ছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষার্থী জানান, আমাদের একমাত্র হলে তেমন কোনো সুবিধা নেই। শুধু থাকা যায় আর খাবারের কথা নাইবা বললাম। অসুস্থ হলে যে প্রাথমিক চিকিৎসা সুবিধা দেবে সেটারও কোনো ব্যবস্থা নেই।
হলে আবাসিক তৃতীয় বর্ষের এক ছাত্রী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘থাকার মতো থাকা আর খাওয়ার জন্য একটা অপরিচ্ছন্ন ক্যান্টিন ছাড়া কিছুই নাই এই হলে। গ্যাসের লাইন নাই, পানির ফিল্টার নস্ট। আমরা এত এত ছাত্রী হঠাৎ কোনো সমস্যা হলে কোথায় যাব আমরা, এটা তো উনাদের (প্রশাসন) বোঝা উচিত।’
চিকিৎসা সেবা নিয়ে তিনি বলেন, প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র তো থাকবে। কিন্তু এই হলে আমরা কোনো সুবিধাই পাচ্ছি না। কর্তৃপক্ষের আছে অনুরোধ করব যত দ্রুত সম্ভব আমাদের জন্য যেন একটি মেডিকেল সেন্টারের ব্যবস্থা করা হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জানায়, আমাদের প্রশাসন চাইলে জবির মেডিকেল সেন্টারকে উন্নত করে, সার্বক্ষণিক সেবা দিয়ে শিক্ষার্থীদের কাজে লাগাতে পারে। সেখানে ডাক্তার থাকে চারটা পর্যন্ত। এরপরে পাওয়া যায় না। সার্বক্ষণিক এই সেবার ব্যবস্থা করলে ভালো হবে।
সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. দীপিকা রানী সরকার বলেন, ‘উপাচার্য স্যারের সঙ্গে এ বিষয়ে আমাদের কথা হয়েছে। আমরা ঈদের পরেই একটা রুম নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিনে দেব। আর হলে মেডিকেল সেন্টারের বিষয়ে আমি ভিসি স্যারের সঙ্গে কথা বলব।’
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. ইমদাদুল হক-এর সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।