সরকারকে সব ধরনের পলিথিন ব্যাগের উপর বিদ্যমান সম্পূরক শুল্ক প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করার আহ্বান জানিয়েছে এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন- এসডো।
বৃহস্পতিবার আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সরকারের সাবেক সচিব ও এসডোর চেয়ারপারসন সৈয়দ মার্গুব মোর্শেদ এ আহ্বান জানান।
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মোস্তফা কামাল, সম্প্রতি প্রস্তাবিত ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেটে প্লাস্টিক পলিথিন ব্যাগের উপর থেকে ৫ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত দেয়। এই প্রস্তাবনায়, স্থানীয় পর্যায়ে উৎপাদনের সুবিধার্থে প্লাস্টিক ব্যাগ এবং পলিথিনের তৈরি মোড়কজোড়ক দ্রব্যাদির উপর শুল্ক হ্রাসের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
সাম্প্রতিক বাজেট প্রস্তাবের বিষয়ে এসডো একটি বিবৃতি প্রকাশ করেছে। যেখানে প্রাধান্য পেয়েছে বাংলাদেশ হাইকোর্টের সাম্প্রতিক একটি রায় যেখানে বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলে একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিককে নিষিদ্ধ করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। বাংলাদেশ হাইকোর্ট এর এই রায় অনুসারে, পরিবেশ বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় একটি গেজেটে, ২০২৩ সালের মধ্যে বাংলাদেশের উপকূলবর্তী ১২টি জেলাতে একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক পণ্য যেমন প্লেট, গ্লাস, কাপ, চামচ, স্ট্র, স্যাশে, যা পুনর্ব্যবহারযোগ্য নয় এবং অপচনশীল পণ্য সম্পূর্ণভাবে বন্ধের নির্দেশ দেয়।

এসডোর এই বিবৃতিতে প্লাস্টিক দূষণ বন্ধ করার ঐতিহাসিক রেজোলিউশনকেও তুলে ধরা হয়েছে। জাতিসংঘের পরিবেশ পরিষদে একটি আন্তর্জাতিক আইনগতভাবে প্রয়োগযোগ্য চুক্তি তৈরি করা হয়েছে যা ২০২৪ সালের মধ্যে বাস্তবায়ন হবে। যেখানে বাংলাদেশ সহ ১৭৫টি দেশ চুক্তিটিকে সমর্থন করেছে।
সম্প্রতি এসডোর মহাসচিব ড. শাহরিয়ার হোসেন, প্লাস্টিক দূষণ রোধে বাধ্যতামুলক আইন প্রণয়নের লক্ষ্যে সেনেগালে এডহক ওপেন এণ্ডেড ওয়ার্কিং গ্রুপ মিটিং অন প্লাস্টিক পলিউশন এ অংশ নিয়েছেন।
তিনি বলেছেন, একটি বিশ্বব্যাপী প্লাস্টিক চুক্তির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে এবং আমরা ২০২৪ সালের মধ্যে একটি রোডম্যাপ পাব। এখনই সময় আমাদের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া। আমাদের প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারত এবং কানাডা প্লাস্টিক দূষণ রোধে অসাধারণ কাজ করে যাচ্ছে। বাংলাদেশসহ অন্যান্য দক্ষিণ এশিয়া দেশগুলোরও পরিবেশ রক্ষার্থে আঞ্চলিক সহযোগিতা বৃদ্ধি করা উচিৎ।
তিনি আরও বলেন, একবার ব্যবহাযোগ্য প্লাস্টিক পণ্যগুলির উপর উচ্চ কর আরোপ করা দরকার যাতে এটির ব্যবহার হ্রাস পায়।
এসডোর নির্বাহী পরিচালক, সিদ্দীকা সুলতানা বলেন, যদি এই প্রস্তাবটি গৃহীত হয়, একবার ব্যবহাযোগ্য প্লাস্টিক পণ্যের ব্যবহার বৃদ্ধি পাবে, যেটি আমাদের পরিবেশের জন্য ক্ষতিকারক হবে। যেহেতু পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত এই একবার ব্যবহাযোগ্য প্লাস্টিক পণ্যের উৎপাদন ও বিক্রয় নিষিদ্ধ করে দিচ্ছে। সেই ক্ষেত্রে আন্ত:সীমান্ত অবৈধ বাণিজ্য বৃদ্ধি পাওয়ার শংকা আছে এবং বাংলাদেশ একটি প্লাস্টিক হাবে পরিণত হবে।
এসডো এই বিবৃতির পাশাপাশি বাংলাদেশের অর্থ মন্ত্রীর বরাবর প্লাস্টিক ব্যাগের উপর প্রস্তাবিত সম্পূরক শুল্ক প্রত্যাহার পুনর্বিবেচনার জন্য এবং একবার ব্যবহাযোগ্য প্লাস্টিক পণ্যগুলির উপর উচ্চ কর আরোপ করা জন্য আবেদন করে একটি পিটিশন জমা দিয়েছে।