বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির বর্তমান কমিটির একজন সক্রিয় কর্মী সাইমন সাদিক। ইলিয়াস কাঞ্চন ও নিপুন পরিষদ থেকে সহ সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচিত এই সংগঠক ও অভিনেতা সমিতির দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি নিলেন।
শিল্পী সমিতির সভাপতি বরাবর অব্যাহতির চিঠিতে সাইমন লিখেছেন, “আমি সাইমন সাদিক। আপনার নেতৃত্বাধীন শিল্পী সমিতির নির্বাচিত সহ সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছি। বিগত দিনে আমি আমার দায়িত্ব পালনে সর্বোচ্চ নিবেদিত ছিলাম। কিন্তু সম্প্রতি সমিতির নেয়া কিছু সিদ্ধান্তে ও নীতির সঙ্গে আমি একমত হতে পারছি না। বিশেষ করে সাফটা চুক্তিতে বিদেশি ভাষার সিনেমা আমদানি করে দেশীয় চলচ্চিত্র শিল্পকে হুমকিতে ফেলে বিদেশি সিনেমা মুক্তির প্রেক্ষিতে বিতর্কিত পরিস্থিতিতে সমিতির নিষ্ক্রিয়তা আমার কাছে সমর্থনযোগ্য নয়।”
চিঠিতে সাইমন আরো উল্লেখ করেন,“আমার ‘শেষ বাজি’ সিনেমাটি গতকাল মুক্তি পেয়েছে। একই দিনে নিয়ম নীতি না মেনে বিদেশি আর একটি সিনেমা শিল্পী এবং আমার ক্যারিয়ার যথেষ্ট ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। কিন্তু অত্যন্ত হতাশার বিষয় এ সম্পর্কে আমাদের সমিতি নীরব রয়েছে। এসব বিষয়ে মত পার্থক্য থাকায় সমিতির কার্যকরী কমিটিতে থাকা আমি অযৌক্তিক ও অনুচিত মনে করছি। তাই সহ সাধারণ সম্পাদক থেকে অব্যাহতি চাইছি। তবে আমি অতীতের মতোই দেশীয় চলচ্চিত্রের বিকাশের পক্ষে কাজ করে যাবো।”
সাইমনের অব্যাহতির বিষয়ে শিল্পী সমিতির সভাপতি ইলিয়াস কাঞ্চনের কাছে জানতে চাইলে তিনি চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন,“বর্তমান সমিতির মেয়াদই তো শেষের পথে। ফেব্রুয়ারিতে আবার নতুন নির্বাচন। এখন আর অব্যাহতি চাওয়ার কী আছে!”
সাফটা চুক্তিতে বিদেশি ভাষার সিনেমা আমদানি করে দেশীয় চলচ্চিত্র শিল্পকে হুমকিতে ফেলা হচ্ছে, সেখানে শিল্পী সমিতির নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ এনেছেন সাইমন। ইলিয়াস কাঞ্চনের কাছে সাইমনের অভিযোগ তুলে ধরলে তিনি বলেন,“সাইমন নিজেও তো এই কমিটির গুরুত্বপূর্ণ নেতা। কই যেসব বিষয়ে এখন তিনি কথা বলছেন, সেগুলো তিনি কমিটির মিটিংয়ে বসে বলেননি কেন! সমিতির পক্ষে তারও তো সিদ্ধান্ত নেয়ার এখতিয়ার আছে। এগুলো তো তিনি কখনো উপস্থাপনই করেননি।”
শিল্পী সমিতির এই সভাপতি ও নায়ক বলেন, “আমার তো মনে হয়, আমদানি ছবির সাথে এখন তার ছবি মুক্তি পেয়েছে বলেই হঠাৎ প্রতিবাদী হয়ে উঠলেন। না হলে আগে কেন তিনি এ বিষয়ে সোচ্চার হলেন না। তিনিওতো গুরুত্বপূর্ণ নেতা, তিনি আগে নিষ্ক্রিয় ছিলেন কেন!”
শুক্রবার দেশের প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেয়েছে ৩টি ছবি। যদিও নিয়ম আছে, উৎসব ছাড়া একসাথে দুটি ছবির বেশী মুক্তি দেয়া যাবে না। মুক্তি পাওয়া ৩টি ছবির মধ্যে ভারতীয় ছবি ‘হুব্বা’ পেয়েছে ষাটের বেশী প্রেক্ষাগৃহ। অন্যদিকে সাইমন অভিনীত ছবি ‘শেষ বাজি’ পেয়েছে ১৯টি প্রেক্ষাগৃহ, আর চয়নিকা চৌধুরীর ছবি ‘কাগজের বউ’ পেয়েছে মাত্র ৮টি হল।