সন্তানদের ভালো মানুষ গড়তে শিক্ষকের পর সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন মা। মায়ের কারণে তার সন্তান হতে পারেন দেশের প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী, ডাক্তার কিংবা আইনজীবী। শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ এমনটি উল্লেখ করে বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক হলেন মূল নিয়ামক আর পরিবারের মূল শিক্ষক মা।
সেই বিবেচনা মাথায় রেখে শুরু হলো মা সমাবেশ। এখন থেকে মা সমাবেশটি সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিয়মিত করা হবে বলে জানান শিক্ষামন্ত্রী।
বুধবার আজিমপুর গভর্নমেন্ট গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজ প্রাঙ্গণে মা সমাবেশ, স্মার্ট ক্লাসরুম ও শেখ রাসেল ডিজিটাল ক্লাবের উদ্ধোধন করে নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, মা সমাবেশে এসে আমার মায়ের কথা মনে পড়ে গেল। একসঙ্গে এতো মা কখনো এর অাগে দেখিনি।
‘শিক্ষা পরিবারে অনেকটা অংশ জুড়ে রয়েছে মা। মায়েদের কারণে জাতির ভবিষ্যতরা আজ মানুষের মতো মানুষ হচ্ছে। আজ তাদের নিয়েই দেশ এগিয়ে যাচ্ছে।’
শিক্ষকদের পর মায়ের ভূমিকা অপরিসীম মন্তব্য করে তিনি বলেন, মা ছাড়া যেমন জগতে আসা যায় না তেমনি ভালো মানুষ হতে হলেও মায়ের দরকার হয়। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পর একজন মা ভালোভাবে তার সন্তানকে ভালো মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে পারেন। আধুনিক শিক্ষা ব্যবস্থায় শিক্ষার সঙ্গে সঙ্গে একজন ভালো মানুষ হওয়া খুব প্রয়োজন। তা না হলে দেশের জন্য সেটি ক্ষতিকর দিক হয়ে যায়।
‘সেজন্যই মায়েদের বলবো, আপনার সন্তানটি কখন কী করছে, কোথায় যাচ্ছে, কার সঙ্গে মিশছে সেগুলোর দিকে খেয়াল রাখবেন। তারা যেন জঙ্গিবাদ বা সন্ত্রাসবাদে জড়িয়ে পড়তে না পারে সেটাও খেয়াল রাখবেন।’
বইয়ের বোঝা কমবে, টিফিন বক্সও ভারী করবেন না
অনেক মায়ের অভিযোগ বইয়ের ভারে ছেলে-মেয়েরা নুয়ে যাচ্ছে। তাদের উদ্দেশে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, শিক্ষা নীতিমালায় পাঠ্যপ্রস্তুক কমিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে শিক্ষা ব্যবস্থার উপযুক্ত বই থেকে যাবে।
‘বই বেশি হলে বইয়ের বোঝা কমবে। টিফিনের পরিমাণটা একটু কমিয়ে দিবেন। অনেকের টিফিনের ওজন থাকে দু’ কেজি। এর সঙ্গে বই-খাতা যুক্ত হলে ব্যাগ ভারী হয়ে যায়।’
তিনি বলেন: ব্যক্তিগতভাবে বলতে চাই– সন্তানদের হাতে মোবাইল বা আধুনিক গেজেট না দিয়ে উপন্যাস বা গল্পের বই দিবেন। আমরা যেমন আধুনিক প্রযুক্তি দ্বারা উন্নত হচ্ছি, ঠিক তেমনি বিপথে যাওয়ার জন্যও এটাকে বেছে নিয়েছি।
স্কুলে বেশি বেশি পরীক্ষা নেওয়ার প্রবণতা কমিয়ে নিয়ে যেটা গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা সেগুলোতে বেশি মনোযাগ দেওয়ার কথাও বলেন শিক্ষামন্ত্রী।
নতুন প্রজন্মকে আধুনিকভাবে এগিয়ে নেওয়ার জন্য বিশ্বমানের জ্ঞান, দক্ষতা ও প্রযুক্তি দিয়ে এগোতে হবে মন্তব্য করে নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন: আমাদের প্রজন্মের সবাই মেধাবী। সঠিক শিক্ষা ও পরিবারের সঠিক পরিচালনা– এই দুইয়ের সমন্বয়ে তারাই একদিন বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্ব করবে বিশ্ব দরবারে।
‘শুধু পড়াশোনায় নয়, গবেষণার দিক দিয়েও তাদেরকে এগোতে হবে। সেই লক্ষ্যে প্রত্যেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ডিজিটাল ল্যাব, মাল্টিমিডিয়া ক্লাস রুম করা হয়েছে। শিক্ষার এই ধারাকে অব্যাহত রাখতে হলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেত্বত্বে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। তা না হলে দেশ উন্নয়নের গর্তে পড়ে যাবে।’