পৃথিবীর তাপমাত্রা আগামী কয়েক বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো তার আগের রেকর্ড ভেঙে ফেলতে পারে বলে ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন বিজ্ঞানীরা।
বিবিসি জানায়, গবেষকরা বলছেন, ৬৬ ভাগ সম্ভাবনা রয়েছে যে ২০২৭ সালের মধ্যে বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি পাবে ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এই সীমায় পৌঁছানোর অর্থ হলো, ১৯ শতকের দ্বিতীয়ার্ধের পর বিশ্ব ১ দশমিক ৫ সেলসিয়াস বেশি উষ্ণ।
এই চিত্রটি বিশ্বব্যাপী জলবায়ু পরিবর্তন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে। ২০১৫ সালের প্যারিস চুক্তির অধীনে বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে রাখতে দেশগুলো ‘প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে’ সম্মত হয়েছিল।
এক বা দুই দশক ধরে প্রতি বছর তাপমাত্রা ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের এর ওপরে গেলে উষ্ণায়নের অনেক বেশি প্রভাব দেখা যাবে। যেমন দীর্ঘতর তাপপ্রবাহ, তীব্র ঝড় এবং দাবানল।
তবে এর মানে এই নয় যে প্যারিস চুক্তি বিফলে গেছে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, কার্বন নির্গমন কমিয়ে বৈশ্বিক উষ্ণতা রোধ করার সময় আছে এখনও ।
২০২০ সাল থেকে ‘ওয়ার্ল্ড মেটিওরোলজিক্যাল অর্গানাইজেশন’ যেকোন এক বছরে বিশ্বের তাপমাত্রা ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস অতিক্রম করার একটি আশঙ্কার কথা জানিয়েছিল। তখন তারা ভবিষ্যদ্বাণী করেছিল, সামনের পাঁচ বছরে এই সম্ভাবনা ২০ শতাংশেরও কম।
১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস অতিক্রম করার মানে কী?
এটি বিশ্ব তাপমাত্রার সরাসরি পরিমাপক নয়, তবে দীর্ঘমেয়াদী ক্ষেত্রে পৃথিবী কত উষ্ণ বা শীতল হয়েছে তার একটি সূচকের গড়।
কয়লা, তেল এবং গ্যাসের ওপর আমাদের নির্ভরতার আগে পৃথিবী কতটা গরম ছিল তার পরিমাপ হিসেবে বিজ্ঞানীরা ১৮৫০ থেকে ১৯০০ সালের মধ্যে গড় তাপমাত্রার তথ্য ব্যবহার করে থাকেন।
কয়েক দশক ধরে তারা বিশ্বাস করছিলেন, পৃথিবী যদি ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস এর কাছাকাছি উষ্ণ হয় তবে তা বিপদজনক প্রভাবের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছাবে। কিন্তু ২০১৮ সালে তারা এই অনুমানটি সংশোধন করে জানায়, ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস অতিক্রম করা বিশ্বের জন্য বিপর্যয়কর।
গবেষকরা বলছেন, তারা ৯৮ ভাগ নিশ্চিত যে ২০২৭ সালের আগেই এটি অতিক্রম করবে।