চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Nagod

আগামী প্রজন্মের স্বার্থে এখনই ই-সিগারেট নিষিদ্ধ করতে হবে

বাংলাদেশে প্রধানত নগরাঞ্চলের কিশোর-তরুণরাই ই-সিগারেট ব্যবহার করছেন। তাই ভ্রান্ত ধারণা আর উদ্দেশ্যমূলক অপপ্রচারের ফলে দ্রুতই এই বয়সী নাগরিকদের মধ্যে ই-সিগারেটের ব্যবহারের হার বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এমনিতেই তামাক ব্যবহারের বিচারে বাংলাদেশ বিশ্বের শীর্ষ দেশগুলোর একটি। এর মধ্যে আরও একটি নতুন তামাক পণ্যের প্রাদুর্ভাব আগামী প্রজন্মের স্বাস্থ্যের জন্য বড় হুমকি। তাই তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনের মাধ্যমে দেশে ই-সিগারেট নিষিদ্ধ করা একান্ত জরুরি বলে মনে করেন দেশবরেণ্য চিকিৎসক, নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি এবং তামাক-বিরোধী সামাজিক সংঠনের অংশীজেনেরা।

সোমবার ২০ নভেম্বর বেসরকারি গবেষণা সংস্থা ‘উন্নয়ন সমন্বয়ে’র আয়োজনে ‘ই-সিগারেটের ভয়াবহতা ও আগামী প্রজন্মের স্বাস্থ্য ঝুঁকি’ শীর্ষক ওয়েবিনারে এমন অভিমত ব্যক্ত করেছেন অংশগ্রহণকারীরা।

Bkash

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. আতিউর রহমানের সভাপতিত্বে এই অনলাইন আলোচনায় সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক ড. এবিএম আব্দুল্লাহ। প্যানেল আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশনের এপিডেমিওলজি ও রিসার্চ বিভাগের প্রধান ড. সোহেল রেজা চৌধুরী, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা)-এর সাধারণ সম্পাদক আলমগীর কবির, এবং জাতীয় চলচিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরী। এ ছাড়াও চ্যানেল আই এর সিনিয়র সাংবাদিক জান্নাতুল বাকিয়া কেকা আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন।

আলোচনার শুরুতে উন্নয়ন সমন্বয়ের তৈরি একটি সংক্ষিপ্ত তথ্যচিত্রের মাধ্যমে ই-সিগারেটে থাকা নিকোটিন ও অন্যান্য রাসায়নিকের ধোঁয়া সেবনের স্বাস্থ্যগত ঝুঁকি এবং বিশেষ করে আগামী প্রজন্মের নাগরিকদের ওপর ই-সিগারেটের সম্ভাব্য কুপ্রভাব তুলে ধরা হয়।

Reneta June

স্বাগত বক্তব্যে ড. আতিউর রহমান বলেন, বাংলাদেশে ই-সিগারেট এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে বাজারজাত করা হচ্ছেনা। তবে ক্রমেই এটি যুবসমাজের জন্য বড় হুমকি হয়ে ‍উঠছে। চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটে ই-সিগারেটের ওপর শুল্ক আরোপের মাধ্যমে বাংলাদেশে আনুষ্ঠানিকভাবে ই-সিগারেট আমদানির যে সুযোগ তৈরি হয়েছে তাকে বড় দুর্ভাবনার বিষয় বলে মনে করেন ড. আতিউর।

তামাক কোম্পানিগুলো সচরাচর জনস্বার্থ বিবেচনায় না নিয়ে বাণিজ্যিক লাভকে মূল বিবেচনায় রেখে থাকে বলে অভিমত ব্যক্ত করেন বাপা’র সাধারণ সম্পাদক আলমগীর কবির। অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরী তার বক্তব্যে ই-সিগারেটসহ সকল তামাক পণ্য ব্যবহারে শিশু-কিশোরদের নিরুৎসাহিত করতে স্কুল পর্যায়ে সচেতনতা কার্যক্রম এবং সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলার ওপর জোর দেন।

ই-সিগারেট ব্যবহারের ক্ষতি সাধারণ সিগারেটের ক্ষতির চেয়ে কম- এমন একটি বিভ্রান্তিকর প্রচারণার মাধ্যমে তামাক কোম্পানিগুলো বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কিশোর-তরুণদের হাতে হাতে ই-সিগারেট তুলে দিয়ে অপূরণীয় ক্ষতি করেছে বলে জানান ড. সোহেল রেজা চৌধুরী। বাংলাদেশেও যেন এ ঘটনার পুনরাবৃত্তি না হয় তা নিশ্চিত করতে এখনই বিদ্যমান তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনটি সংশোধনের মাধ্যমে ই-সিগারেট নিষিদ্ধ করার দাবি জানিয়েছেন তিনি।

বিজ্ঞাপন

সম্মানিত অতিথির বক্তব্যে ড. এবিএম আব্দুল্লাহ বলেন, বিদ্যমান তামাক ব্যবহারকারীদের একটি বড় অংশই তরুণ। আর নতুন ও আকর্ষণীয় পণ্য হিসেবে ই-সিগারেটের প্রতিও এদের আকৃষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি। এর ফলশ্রুতিতে ই-সিগারেটের নিকোটিনের মাধ্যমে এই তরুণদের বিপজ্জনক অসংক্রামক রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনাও বেড়ে যাবে।

স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের বিদ্যমান আইন সংশোধনের মাধ্যমে ই-সিগারেট পুরোপুরি নিষিদ্ধের যে উদ্যোগ নিয়েছে তা অচিরেই বাস্তবায়িত হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন ওয়েবিনারে অংশগ্রহণকারীরা।

উল্লেখ্য, ভারত ও শ্রীলঙ্কাসহ বিশ্বের ২৩টি দেশে ইতোমধ্যেই ই-সিগারেট নিষিদ্ধ হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

Nil Joler Kabbo
Bellow Post-Green View