সারাদেশে মহালয়ার মধ্য দিয়ে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়েছে। নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে ইতিমধ্যে দেশজুড়ে দুর্গাপূজা উদযাপনের সকল প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে।
ইতিবাচক দিক হচ্ছে, গত বছর সারাদেশে দুর্গাপূজার মন্ডপের সংখ্যা ছিল ৩২ হাজার ১১৮টি। এবার এ সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩২ হাজার ১৬৮টিতে। ঢাকা মহানগরে পূজামন্ডপের সংখ্যা ২৪১টি, যা গত বছরের থেকে ৬টি বেশি। শেষ সময়ে ব্যস্ত দেশের প্রতিমা শিল্পীরা।
আজ ২৫ সেপ্টেম্বর মহালয়ার মধ্য দিয়ে দুর্গাপূজার ঘণ্টা বাজলো। ১ অক্টোবর শুরু হবে মূল পূজা, যা আগামী ৫ অক্টোবর প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হবে।
অসাম্প্রদায়িকতার নীতিতে দেশের বিভিন্ন ধর্মের নানা পর্ব চললেও দুঃখজনক হলেও সত্য যে, প্রায় প্রতিবছরই পূজার আগে পরে কিছু না কিছু নেতিবাচক ঘটনা ঘটে। আর তাই দেশে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের আনন্দের উৎসব দুর্গাপূজার সময়ে তাদের মধ্যে ভয়ও জাগিয়ে তোলে।

২০২১ সালে কুমিল্লায় দুর্গাপূজার মধ্যে সাম্প্রদায়িক হামলার মধ্য দিয়ে সম্প্রীতির ঐতিহ্যে নতুন করে কলঙ্কের ছাপ পড়েছিল। সেবছরের ১৩ অক্টোবর ভোরে নানুয়ার দিঘির পাড়ে অস্থায়ী পূজামণ্ডপে কোরআন পাওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে এই নগরীর চারটি মন্দির ও সাতটি পূজামণ্ডপে হামলা, ভাংচুর, অগ্নিসংযোগ ঘটে; আক্রান্ত হয় সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বাড়ি-ঘর। ঘটনা শুধু কুমিল্লায়ই সীমাবদ্ধ ছিল না, তা ছড়িয়ে পড়ে চাঁদপুর, গাজীপুর, কুড়িগ্রাম, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চট্টগ্রাম, বান্দরবান, ফেনী, মৌলভীবাজার, কক্সবাজার, মুন্সীগঞ্জ, হবিগঞ্জ, বরিশালসহ বিভিন্ন জেলায়।
এবছর যেনো সেরকম কিছু না ঘটে, তার জন্য ইতিমধ্যে সরকার ও প্রশাসন সক্রিয় বলে আমাদের মনে হয়েছে। দেশের প্রতিটি জেলার প্রশাসনের পক্ষ থেকে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষায় সবধর্মের লোকজনদের নিয়ে কমিটি গঠন করা হয়েছে। ইতিমধ্যে আইন শৃঙ্খলা কমিটির বিশেষ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। মন্ডপ এলাকায় সিসি ক্যামেরা বসানোসহ নানা নির্দেশনাও এসেছে। এছাড়া আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়েছে বলে গণমাধ্যমে প্রকাশ।
আমাদের আশাবাদ, সচেতনতার এই ধারা পুরো পূজার সময়ে অব্যাহত থাকবে। এছাড়া প্রশাসনিকভাবে সাম্প্রদায়িক সহিংসতার কোনো আশংকা থাকলে তা অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সমাধান করার পাশাপাশি সামাজিকভাবে প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তোলা খুবই জরুরি।