শ্রম আইন লঙ্ঘনের দায়ে সাজাপ্রাপ্ত নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের শক্ত ভিত্তি আছে। রায়ের বিরুদ্ধে তার উচ্চ আদালতে যাওয়ার সুযোগ আছে। শ্রম অধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ নিয়ে আদালত ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে যে রায় দিয়েছেন সেটি বাংলাদেশের আইন শাসনের আরেকটি জ্বলন্ত দৃষ্টান্ত বলে মনে করেছেন বক্তারা।
আজ মঙ্গলবার ২ জানুয়ারি ক্যাম্পেইন এডভোকেসি প্রোগ্রাম (ক্যাপ) এর আয়োজনে ‘একজন ড. মুহাম্মদ ইউনূস’ শীর্ষক সেমিনারে এসব কথা বলেন আলোচকরা। সেমিনারে বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক মুহাম্মদ শাহাদাত হোসেন সিদ্দিকী, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মঈন উদ্দিন এবং একাত্তর টেলিভিশনের বার্তা প্রধান শাকিল আহমেদ। সেমিনারটি সঞ্চালনা করেন ক্যাপ এর ইলেকশান এক্সপার্ট এবং রিসার্চ টিমের সদস্য কামরুল হাসান।
আলোচনায় ড. মো. মাঈন উদ্দিন বলেন, সব ধরণের আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করেই ড. ইউনূসের মামলার রায় দেওয়া হয়েছে। কারণ শক্তিশালী সাক্ষ্য ছাড়া এত বড় মানুষের বিরুদ্ধে মামলা করার সাহস কে রাখে? অবশ্যই তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের শক্ত ভিত্তি আছে। আমার অভিজ্ঞতা বলে তিনি কোন অবস্থাতেই আইনের অপব্যবহারের শিকার হতে পারেন না। যদি মনে করেন তিনি ন্যায় বিচার থেকে বঞ্চিত হয়েছেন তাহলে উচ্চ আদালতে যাওয়ার পথ খোলা আছে। বাংলাদেশের বিচার বিভাগ যে স্বাধীন এ রায়ের মাধ্যমে তার প্রতিফলন ঘটেছে।
অধ্যাপক মোহাম্মদ শাহাদাৎ হোসেন সিদ্দিকী বলেন, ড. ইউনূস সবসময় তার নিজের শেকড় ভুলে যান। এজন্যই তিনি পদ্মাসেতু ইস্যু বা রাজনীতি ইস্যুতে দেশের স্বার্থের বিপরীতেই থাকেন। বাংলাদেশে গ্রামীণ ব্যাংক অথবা ক্ষুদ্র ঋণের মাধ্যমে দারিদ্রতার হার কমেছে এরকম কোন বিষয় আজও কেউ পরিস্কার গবেষণা করে বলতে পারেনি।
একাত্তর টেলিভিশনের বার্তা প্রধান শাকিল আহমেদ বলেন, হতে পারেন ড. ইউনূস একজন আর্ন্তজাতিক ব্যক্তিত্ব। পদ্মাসেতু ঋণ অনুমোদনের শেষ মুহূর্তে ড. ইউনূস তার বিদেশি বন্ধুদের ব্যবহার করে পদ্মা সেতুর অর্থায়ন বন্ধ করে দেন। বাংলাদেশের সরকারকে শর্তারোপ করেন তাকে গ্রামীণ ব্যাংকে পূণর্বহাল করতে হবে। ড. ইউনূস অত্যন্ত সম্মানিত ব্যক্তি কিন্তু তিনি তার ব্যক্তি স্বার্থে নিজস্ব ইমেজকে ক্ষুণ্ণ করেছেন।
তিনি আরও বলেন, অত্যন্ত প্রচার প্রিয় একজন ব্যক্তি ড. ইউনূস । আর্ন্তজাতিক অঙ্গনে তিনি ইমেজ বাড়ানোর তাগিদেই সবসময় ব্যস্ত থাকেন। শ্রম অধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে নিয়ে আদালত ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে যে রায় দিয়েছেন সেটি বাংলাদেশের আইন শাসনের আরেকটি জ্বলন্ত দৃষ্টান্ত।