কম্পিউটার দিয়ে নিয়ন্ত্রণ হবে অন্যের চিন্তা-ধারণা: ড. মশিউর রহমান

নাসার ডিপ স্পেস ও ওয়ারলেস কমিউনিকেশন নিয়ে কাজ করা সফল বাংলাদেশি বিজ্ঞানী ড. মশিউর রহমান বলেছেন, অটোমেশন প্রযুক্তিতে আগামী ১০ থেকে ১৫ বছরের মধ্যে কোয়ান্টাম যোগাযোগ বিদ্যার আওতায় এমন পদ্ধতি বের হবে, যেখানে একজন কম্পিউটারের মাধ্যমে অন্যজনের চিন্তা-ধারণা নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে। একে বলা হয়, ব্রেইন কন্ট্রোল সার্ফেস (বিসিআই)।
রোববার (১১ নভেম্বর) চ্যানেল আই এর তারকা কথন অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে অংশগ্রহণ করে এসব কথা বলেন তিনি।
পৃথিবীতে ও চন্দ্রে মস্তিষ্কের ক্রিয়া বিষয়ে মশিউর রহমান বলেন, পৃথিবী এবং চন্দ্রে একইভাবে মস্তিষ্ক কাজ করে না। এটা বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত, পৃথিবীর পরিবেশ এবং আবহাওয়ায় আমাদের মস্তিষ্ক যেভাবে সংকেত ধারণ করে, চাঁদে সেটা সম্পূর্ণ ভিন্ন। কারণ পৃথিবীতে সংকেত আমাদের মস্তিষ্ক পর্যন্ত পৌছাতে অনেক বাঁধার সম্মুখীন হয়। সেই সব বাঁধা চন্দ্রে থাকে না।
তিনি বলেন, আগামী ২০২৫ সালের মধ্যে নাসা একটি টাওয়ার বিশিষ্ট চলমান স্যাটেলাইট চাঁদে পাঠাবে, যা সম্পূর্ণ চাঁদের কক্ষপথ ধরে ঘুরতে থাকবে। সেই স্যাটেলাইট মানুষ বহনে সক্ষম হবে।

কৃতি এই বিজ্ঞানী আরও বলেন, এখন পর্যন্ত চাঁদে যেসকল যান পাঠানো হয়েছে তা সবই ছিল মিডেল মুন অর্থাৎ, সেই সব যান চাঁদের মাটির মাঝামাঝি অবতরণ করেছে। তবে আমরা এবার চেষ্টা করছি চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে অবতরণ করতে যেখানে সামান্য শীতল পানির সন্ধান পাওয়া গেছে।
এই অটোমেশন প্রযুক্তির ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে মশিউর রহমান বলেন, ডিপ স্পেস হচ্ছে মূলত পৃথিবী থেকে চাঁদ এবং মঙ্গল গ্রহের মাঝামাঝি যোগাযোগ। এই যোগাযোগ ব্যবস্থা স্থাপনের জন্য আমরা ওয়ারলেস কমিউনিকেশন ব্যবহার করছি। এই ওয়ারলেস কমিউনিকেশনে পৃথিবী থেকে চাঁদে একটি টাওয়ার বিশিষ্ট চলমান মানুষ বহনকারী স্যাটেলাইট পাঠানো হবে। যেখানে পৃথিবী থেকে বসেই কম্পিউটারের মাধ্যমে চাঁদের অন্য ব্যক্তির চিন্তা-ধারণা নিয়ন্ত্রণ করা হবে।
তিনি আরও বলেন, আমাদের পরিকল্পনা এই স্যাটেলাইট চাঁদে স্থাপনের মাধ্যমে আমরা মঙ্গল গ্রহে যোগাযোগের চেষ্টা করবো। অর্থাৎ পৃথিবী থেকে মঙ্গল গ্রহে যোগাযোগ স্থাপনের স্টেশন হবে চাঁদ।
বিজ্ঞাপন
একজন বিজ্ঞানী হিসেবে এই মহাবিশ্বের কার্যক্রমকে কীভাবে দেখেন তিনি, এই প্রশ্নের জবাবে ড. মশিউর রহমান বলেন, আমি বিশ্বাস করি চাঁদে কিছু অতিমানবিক শক্তি আছে। কারণ আমরা যা দেখছি, যা জানতে পাচ্ছি সেই সব কিছু একটি নিজস্ব প্রক্রিয়ায় চলছে। তবে, এই প্রক্রিয়াটা কে পরিচালনা করছে বা কীভাবে পরিচালিত হচ্ছে তা আমরা কেউ জানি না। আজ পর্যন্ত পৃথিবীতে যা আবিষ্কার হয়েছে তা এই সম্পূর্ণ ব্রহ্মাণ্ডের ৫ শতাংশেরও কম। শুধু তাই নয়, আমরা যে অজানা আবিষ্কারের পিছনে ছুটে চলেছি যার জন্য আমাদের এতো আবিষ্কার সেই অজানাটা যে কী, আমরা তাও জানি না।
ভিন গ্রহের এলিয়েন ও ইউএফও সম্পর্কে নাসার এই বিজ্ঞানী বলেন, আসলে এই পৃথিবীতে এলিয়েন আছে কি না, তার কোনো প্রমাণ নাই। তবে এটি একটি বিষ্ময়কর ঘটনা যা মানুষ বিশ্বাস করতে চায়। কিন্তু মানুষ আসলেই ইউএফও দেখেছে এটা সত্য এবং এর প্রমাণও আছে।
বিজ্ঞাপন