ভারতের দিল্লিতে যমুনার উপচে পড়া পানির কারণে সৃষ্ট বন্যায় পানি কিছুটা কমে আসলেও কমছে না নগরবাসীর দুর্ভোগ। এমন অবস্থায় আবারো বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস দিয়েছে দিল্লির আবহাওয়া অফিস। বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, বৃষ্টিপাত হলে আগামীতে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে।
এনডিটিভি জানিয়েছে, দিল্লির ৪৫ বছরের রেকর্ড ভেঙ্গে যমুনা নদীর পানি শহরের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এই সপ্তাহের শুরুতে যমুনা নদীর পানির উচ্চতা ছিল ২০৮ দশমিক ৬৬ মিটার। আজ সকালে তা কমে ২০৭ দশমিক ৬৮ মিটারে নেমে এসেছে। তবে দিল্লির আবহাওয়া অফিস আজ আরও বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে এবং বেশ কিছু জায়গায় হালকা বৃষ্টি হয়েছে। আরও বৃষ্টির ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বৃষ্টির পানি উপচে পড়তে পারে এবং নিষ্কাশন হতে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি সময় নিতে পারে এবং জলাবদ্ধতা পরিস্থিতি আরও খারাপ করতে পারে।
নগরবাসীর দুর্ভোগ
দীর্ঘ জলাবদ্ধতায় দুর্ভোগ পোহাচ্ছে নগরবাসী। উত্তর-পশ্চিম দিল্লির মুকুন্দপুর চক এলাকায় বন্যার পানিতে সাঁতার কাটতে গিয়ে তিনজন ছেলে ডুবে গেছে। যমুনার পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করার পর শহরটিতে প্রথম মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। শহরের আইটিও এবং রাজঘাটসহ হনুমান মন্দির, যমুনা বাজার, গীতা কলোনি, সিভিল লাইনের বাইরের রাস্তাতে দেখা যাচ্ছে প্রবল জলাবদ্ধতা। এমনকি সুপ্রিম কোর্ট এবং কিছু শ্মশান এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে।
মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য
গতকাল সন্ধ্যায় মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল বলেন, পানি কমানোর জন্য যমুনা ব্যারেজের পাঁচটি গেট খোলার কাজ চলছে। ইতিমধ্যেই আইটিও ব্যারেজের প্রথম জ্যামড গেট খুলে দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, যমুনার পানি ধীরে ধীরে কমছে। বৃষ্টি না হলে দুই একদিনের মধ্যে পরিস্থিতি শীঘ্রই স্বাভাবিক হয়ে যাবে। তবে যদি বৃষ্টি হয়, তাহলে একটু বেশি সময় লাগতে পারে। তিনি জনগণকে সতর্ক থাকতে এবং একে অপরকে সাহায্য করতেও বলেছেন।
দুর্যোগ মোকাবেলায় তৎপরতা
শহরের উদ্ধার কাজ অব্যাহত রেখেছে কর্তৃপক্ষ। উদ্ধারকৃতদের মধ্যে কুকুর ও গবাদিপশুও ছিল। অতিরিক্ত দুটি টাস্ক ফোর্স মিরাট থেকে দিল্লিতে স্থানান্তরিত হচ্ছে, তাদের দুর্যোগ মোকাবেলায় স্ট্যান্ড বাই রাখা হবে। যানজট নিরসনে এবং যাত্রীদের সাহায্য করার জন্য ক্ষতিগ্রস্থ এলাকায় ৪,৫০০ এরও বেশি ট্রাফিক কর্মী মোতায়েন করা হয়েছে। দিল্লির পুলিশ বলেছে, বন্যার পানি কত দ্রুত হ্রাস পাবে তার ওপর নির্ভর করে ট্রাফিক বিধিনিষেধ তুলে নেওয়া হবে।
দিল্লি দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ গত বৃহস্পতিবার নির্দেশ দিয়েছে, প্রয়োজন ছাড়া সরকারি অফিস, স্কুল ও কলেজ রোববার পর্যন্ত বন্ধ থাকবে। রাজ্য সরকার সিংহুসহ চারটি সীমান্ত থেকে শহরে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র বহনকারী ভারী পণ্যবাহী যানবাহন প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে।