পটুয়াখালীর বাউফলে মাদ্রাসা শিক্ষকের ধারাবাহিক বলৎকারের কারণে মলদ্বারে ক্যান্সার আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে মাদ্রাসার একজন শিশু শিক্ষার্থী, এই ঘটনায় অভিযুক্ত মাদ্রাসা শিক্ষক বর্তমানে পলাতক আছে।
গতকাল (২৫ আগস্ট) শুক্রবার রাত সাড়ে ৮টার সময় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় ১২ বছর বয়সী শিশু শিক্ষার্থী রাফি। মৃত রাফি পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার নাজিরপুরের তাতেঁরকাঠী ইউনিয়নের বড় ডালিমা মদিনাতুল উলুম কাওমিয়া হাফেজিয়া ও নুরানী কিন্ডার গার্ডেন মাদ্রাসা ও এতিম খানার হাফেজী বিভাগের ছাত্র এবং বড় ডালিমা গ্রামের রেজাউল আকনের ছেলে।
আল রাফিকে বিভিন্ন কৌশলে এক বছর ধরে বলৎকার করেন ৪০ বছর বয়সী মাদ্রাসা পরিচালক কাম শিক্ষক হাফেজ সেলিম গাজী। দুই সপ্তাহ আগে শিশুটি পেটের অসুখসহ নানা রোগে অসুস্থ হয়ে পড়ে। স্থানীয় চিকিৎসা শেষে তাকে ঢাকা জাতীয় ক্যান্সার গবেষণা ইনষ্টিটিউট হাসপাতালে ভর্তি করা হলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় রাফি।
এই ঘটনায় বাউফল থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানিয়েছে নিহতের পরিবার। শিশুটির পরিবার জানায়, দুই সপ্তাহ আগে পেটে ব্যাথাসহ শারিরীক নানা সমস্যা দেখা দিলে রাফি বিষয়টি তার মা-বাবাকে জানায়। এরপর শিশুটিকে বাউফল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে, সেখান তার অবস্থার অবনতি হলে ঢাকার মহাখালীর একটি হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়।
তারা বলে, কয়েকদিন চিকিৎসা শেষে হাসপাতালের চিকিৎসকরা শিশু রাফির মলদ্বারে ক্যান্সার হয়েছে বলে জানান। যা তার শরীরের রক্তে ছড়িয়ে পড়েছে। এরপর তাকে ভর্তি করা হয় জাতীয় ক্যান্সার গবেষণা ইনষ্টিটিউট হাসপাতালে। সেখানে চিকিৎসারত অবস্থায় শুক্রবার রাত সাড়ে ৮টার সময় শিশু রাফির মৃত্যু হয়।
এই ঘটনা জানাজানির পর থেকে অভিযুক্ত শিক্ষক হাফেজ সেলিম গাজী পলাতক। তার মোবাইল বন্ধ থাকায় তার কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে তার বড় ভাই নাজিরপুর-তাতেঁরকাঠী ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য হাবিব গাজী বলেন, হ্যাঁ। এমন ঘটনা আমি শুনেছি, বর্তমানে তিনি (ভাই সেলিম গাজী) পলাতক আছে। তিনি আমার ভাই হলেও আমরা আলাদা থাকছি।
ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে নাজিরপুর-তাতেঁরকাঠী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এস এম মহসিন বলেন, আমি এমন ন্যাক্কারজনক ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক বিচার চাই।
বাউফল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এটিএম আরিচুল হক বলেন, বিষয়টি আমরা জেনেছি। এই বিষয়ে সকল প্রকার আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।