লক্ষ্মীপুরে সন্ত্রাসী হামলা ও গুলিতে আহত হওয়া ছাত্রলীগ নেতা এম সজীব মাহমুদ ঢাকার একটি হাসপাতালে মারা গেছেন। বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ভোররাতে ঢাকার পপুলার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা গেছেন।
মৃত্যুর খবর লক্ষ্মীপুরে ছড়িয়ে পড়লে চন্দ্রগঞ্জ বাজার এলাকাজুড়ে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে ওঠেছে পুরো এলাকা। খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে বাজারে জড়ো হতে থাকে দলীয় নেতাকর্মীরা। এ সময় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করে তারা। পরে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
স্থানীয় আওয়ামী লীগের একাংশের উদ্যোগে এ কর্মসূচি পালন করা হয়। এতে বক্তব্য রাখেন, চন্দ্রগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ছাব্বির আহমেদ, ওয়াহিদুজ্জামান বেগ বাবলু, চন্দ্রগঞ্জ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি গিয়াস উদ্দিন লিটন, সাধারণ সম্পাদক কাজী সোলায়মান, জেলা ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক শাহাদাত হোসেন ভূঁইয়া, চন্দ্রগঞ্জ থানা ছাত্রলীগের সভাপতি আবু তালেব প্রমুখ। তারা সজিব হত্যাকারীদের শাস্তির দাবি করে ২৪ ঘন্টার আল্টিমেটাম দেন বিক্ষোভকারীরা। না হয় কঠোর কর্মসূচির হুশিয়ারি করেন তাঁরা।
এদিকে সজিবের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, কান্নায় চন্দ্রগঞ্জের পাঁচপাড়া এলাকায় নেমে এসেছে শোকের ছায়া। মাত্র পাঁচ বছর বয়সী কন্যা সন্তান জানে না অল্প বয়সে বাবাকে হারিয়ে সে এতিম। নিহত সজীব চন্দ্রগঞ্জের পাঁচপাড়া এলাকার মৃত সিরাজ মিয়ার ছেলে ও চন্দ্রগঞ্জ কফিল উদ্দিন বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি প্রার্থী ছিলেন।
নিহতের মা বুলি বেগম ও স্বজনদের দাবি, ছাত্রলীগের পদের জন্য স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা কাজী বাবলুর সঙ্গে আর্থিক লেনদেন ছিল সজিবের। সম্প্রতি টাকা নিয়ে তাদের মাঝে বিরোধ দেখা দেয়।
এ বিরোধকে কেন্দ্র করে বাবলু তাকে হত্যার হুমকি দেয়। পূর্ব পরিকল্পিতভাবে সজিবকে বাবলু নির্মম ও নৃশংসভাবে গুলি করে ও কুপিয়ে হত্যা করেছে বলে দাবি তাদের। এ ঘটনায় আরও ৩ জন আহত হয়েছেন। হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন নিহতের স্বজনরা।
চন্দ্রগঞ্জ থানার ওসি মো. এমদাদুল হক বলেন, সোমবার রাতে হামলা ও গুলির ঘটনায় সজীবের মা বুলি বেগম বাদী হয়ে কাজী বাবলুকে প্রধান করে ১১ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করেন।
এতে আরও ১৮ থেকে ২০ জনকে আসামি করা হয়। পরে বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে মামলার দ্বিতীয় আসামি থানা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সদস্য সচিব তাজুল ইসলাম তাজু ভূঁইয়াসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে জেলা কারাগারে পাঠায় পুলিশ। অন্যদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে বলে জানান ওসি।