বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপের প্রভাবে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় ‘সিত্রাং’য়ের প্রভাবে খুলনার কয়রায় বেশ কিছু স্থানে নদীর বাঁধ ভাঙ্গন দেখা দিছেয়ে। কিছু কিছু জায়গা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ থাকায় ভেঙে নোনা পানিতে প্লাবিত হওয়ার শঙ্কায় কয়রা উপকূলের অধিকাংশ মানুষ নির্ঘুম রাত কাটিয়েছে। এছাড়া পানি নিস্কাশনের যথাযথ ব্যবস্থা না থাকায় বৃষ্টির পানিতে জলাবদ্ধতায় মৎস্য ঘের ও বিলের আমন চাষ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার শঙ্কাও বিরাজ করছে।
সোমবার ২৪ অক্টোবর ভোরে হঠাৎ করে কয়রার কপোতাক্ষ নদের তীরের হরিণখোলা বেড়িবাঁধ ও শিবসা নদীর তীরে গাতিরঘেরী বেড়িবাঁধে ধস শুরু হয়।পানি উন্নয়ন বোর্ডের সদ্য নির্মিত হরিণখোলার ২৫০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে অত্যন্ত ঝুকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। যে কোন মুহূর্তে প্লাবিত হতে পারে কয়রা সদরসহ আশপাশের এলাকা।
সোমবার সকাল থেকে ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে খুলনা অঞ্চলে বৃষ্টি ও দমকা হাওয়া বইছে। সময় যত বাড়ছে ঠিক ততোই যেন আরও বেশি ভীতিকর পরিবেশ সৃষ্টি হচ্ছে খুলনার কয়রাবাসীর মাঝে।
স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, বাঁধের যা অবস্থা, ঘূর্ণিঝড় হলে জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হওয়া ছাড়া আমাদের নিস্তার নেই। বরাবরের মত আমাদের ভয় শুধু বেঁড়িবাধ। ঝড়ের নাম শুনলেই না থামা পর্যন্ত তাদের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করে এমনটা বলছেন উপকূলের বাসিন্দারা।
কয়রা উপজেলার ভাঙন কবলিত গোবরা এলাকার বাসিন্দা আল আমিন বলেন, কোনো দুর্যোগ এলে তা সবার আগে কয়রা উপকূলে আঘাত হানে। সিডর, আইলা, বুলবুলের আঘাতে এই এলাকার মানুষ চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এখন যদি সিত্রাং আঘাত করে তাহলে বেঁচে থাকা দায় হয়ে পড়বে।
কয়রা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রোকুনুজ্জামান জানিয়েছেন, উপজেলায় ১১৭টি ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। একই সঙ্গে সেখানে আশ্রয় নেওয়া মানুষের জন্য শুকনো খাবার ও খাবার পানি মজুত রাখা হয়েছে। সার্বক্ষণিক মনিটরিং সেল করা হয়েছে৷
কয়রা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এসএম শফিকুল ইসলাম বলেন, কয়রার হরিণখোলা ও গাতিরঘেরীর বাঁধে ভাঙন দেখা দিয়েছে। স্থানীয়দের নিয়ে মেরামতের কাজের প্রস্তুতি চলছে। এছাড়া কয়রায় হোগলা, দোশহালিয়া, মদিনাবাদ লঞ্চঘাট, ঘাটাখালী, গাববুনিয়ার, আংটিহারা, ৪ নং কয়রা সুতির গেট ও মঠবাড়ির পবনাও ঝুঁকিতে রয়েছে ।
স্থানীয় সংসদ সদস্য আক্তারুজ্জামান বাবু বলেন, প্রকৃতির উপর কারো হাত নেই বিগত দিনের তুলনায় বেঁড়িবাধের অবস্থা ভাল। কিছু জায়গায় ঝুঁকিপূর্ণ আছে আমরা পানি উন্নয়ন বোর্ড, স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং এর ক্ষয়ক্ষতি কমানোর জন্য সকলে একযোগে কাজ করার জন্য বারবার যোগাযোগ রাখছি। আমিও কয়রার পথে আমি সেখানে পূর্বের ন্যায় অবস্থান করবো।