মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস বলেছেন, দুর্নীতি এমন একটি পরজীবী যা একটি সমাজের সম্পদকে খেয়ে ফেলে এবং তার শক্তিকে শেষ করে দেয়। এটি ব্যবসা এবং সরকারের প্রতিটি স্তরকে ধ্বংস করতে পারে। দুঃখের বিষয়, আমার নিজের দেশেও দুর্নীতি হয়ে থাকে।
পিটার হাস আজ মঙ্গলবার (২১ মার্চ) রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে ‘কল টু অ্যাকশন অ্যাগেইনস্ট করাপশন’ সামিটে একথা বলেন।
তিনি বলেন, যখন সমাজ দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রচেষ্টা চালায়, তখন তারা সমৃদ্ধ হয়। আমি নিশ্চিত যে বাংলাদেশ তা করতে পারবে এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশকে এ ব্যাপারে সাহায্য করতে আগ্রহী। প্রেসিডেন্ট বাইডেনের অধীনে, মার্কিন সরকার দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াইকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থ হিসেবে বিবেচনা করে।
তিনি আরও বলেন, আমরা এমন উদ্যোগগুলোক সমর্থন করি যা বাংলাদেশী ব্যবসাকে আন্তর্জাতিক মান ও নিয়ম পূরণে সাহায্য করবে এবং যা তাদের বিশ্ব বাজারে আরও প্রতিযোগিতামূলক করে তুলবে। ‘নৈতিক ব্যবসায়িক অনুশীলন’ প্রচারের মাধ্যমে আমরা সকল ব্যবসার জন্য ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’ তৈরি এবং বাংলাদেশে বিদেশী বিনিয়োগকে উৎসাহিত করতে পারি।

বাংলাদেশ যদি নাগরিক ও বিনিয়োগকারীদের আশ্বস্ত করতে পারে যে অন্য বাজারের তুলনায় এখানে দুর্নীতি কম, তাহলে এখানে বিনিয়োগ বাড়বে এবং দেশকে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির পথে এগিয়ে যেতে সাহায্য করবে।
পিটার হাস জানান, ইউএস এজেন্সি ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট (ইউএসএআইডি) নতুন ব্যবসার জন্য একটি অনলাইন রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া চালু করতে বাংলাদেশের রেজিস্ট্রার অব জয়েন্ট স্টক কোম্পানির সাথে অংশীদারিত্ব করেছে যা নতুন ব্যবসার নিবন্ধনকে আরও স্বচ্ছ, দ্রুত এবং সাশ্রয়ী করে তুলবে৷
ইউএস ডিপার্টমেন্ট অব কমার্সের ‘কমার্শিয়াল ল ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম’ (সিএলডিপি) বাংলাদেশের আইনি ও ব্যবসায়িক পরিবেশের উন্নতির জন্য কর্মশালা পরিচালনার উদ্দেশ্যে প্রাইভেট পাবলিক পার্টনারশিপ অথরিটি বাংলাদেশের সাথে কাজ করে। সিএলডিপি ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) সাথেও কাজ করে যা পৌরসভার শাসন ব্যবস্থাকে উন্নত করতে সহয়তা করে।
পিটার বলেন, মার্কিন বিচার বিভাগ দুর্নীতি দমন কমিশনের তদন্তকারী এবং আইনজীবীদেরকে কীভাবে অর্থ পাচারের তদন্ত ও বিচার করতে হয়, কীভাবে ইলেকট্রনিক প্রমাণ ব্যবহার করতে হয় এবং কীভাবে আর্থিক অপরাধের তদন্ত করতে হয় সেগুলোর বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেয়৷ এরফলে বাংলাদেশের আর্থিক গোয়েন্দা ইউনিট এবং আন্তর্জাতিক দুর্নীতি দমন সমন্বয় কেন্দ্রের মধ্যে একটি সম্পর্ক গড়ে উঠেছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের তাদের কাজের জন্য জবাবদিহি করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র দুর্নীতি দূর করার লক্ষ্যে বাংলাদেশের সাথে কাজ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। যা বাংলাদেশী নাগরিকদের জীবনকে সুন্দর করতে এবং আরও আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ও বিদেশী বিনিয়োগ আনতে সক্ষম হবে।