চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ

নন্দিতা বড়ুয়ার কর্নিয়ায় দু’জনের চোখের আলো ফিরেছে

নন্দিতার অবদান মানবজাতি মনে রাখবে: বিএসএমএমইউ উপাচার্য

ঢাকার বাসাবোর সদ্য প্রয়াত বাসিন্দা নন্দিতা বড়ুয়ার (৬৯) মরণোত্তর দেহদানের কর্নিয়ায় কাওখালি কলেজের ব্যবস্থাপনার বিভাগের অনার্স প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী জান্নাতুল ফেরদৌস (২৩) ও পটুয়াখালীর দলিল লেখক  আব্দুল আজিজের (৫০) চোখের আলো ফিরেছে।

বৃহস্পতিবার ২ ফেব্রুয়ারি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে এনাটমি বিভাগের পক্ষে  উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ নন্দিতা বড়ুয়ার মরণোত্তর দেহগ্রহণকালে এ বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

গত ৩১ জানুয়ারি মঙ্গলবার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের চক্ষু বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ শীষ রহমান পটুয়াখালীর দশমিনা সাব-রেজ্রিস্ট্রি অফিসের দলিল লেখক  আব্দুল আজিজের চোখে ও অপথালমোলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. রাজশ্রী দাস ঝালকাটি জেলার কাওখালি কলেজের ব্যবস্থাপনার বিভাগের অনার্স প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী জান্নাতুল ফেরদৌসির চোখে একটি  করে কর্নিয়া সফলভাবে প্রতিস্থাপন করেন।

এসময় উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, নন্দিতা বড়ুয়ার এই ধরণের মহৎ উদ্যোগের প্রশংসা করি। মরণোত্তর দেহদানকারির দুই কন্যা শাপলা বড়ুয়া এবং সেজুতি বড়ুয়াসহ পরিবারের সকলকে এই ত্যাগের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। দেশের প্রথম ক্যাডাভেরিক অঙ্গদাতা হিসেবে সারা ইসলাম বাংলাদেশের মানবকল্যাণে দেহদানে ইতিহাস হয়ে রয়ে যাবেন। সারার পথ অনুসরণ করে আজকে অনেকেই ক্যাডাভেরিক অঙ্গদান ও মরণোত্তর দেহদানের আন্দোলনে সামিল হচ্ছেন। আজকে নন্দিতা বড়ুয়ার অবদান মানব জাতি মনে রাখবে। নন্দিতা বড়ুয়ার কর্নিয়ার নতুন করে চোখের আলো ফিরে পেয়েছেন আরও  দুজন। গত একমাসে মরণোত্তর চক্ষু দান প্রক্রিয়ায় ১২ জনের চোখে সফলভাবে কর্নিয়া প্রতিস্থাপন করেছি। কর্নিয়াগ্রহীতারা বেশ ভাল আছেন।

অনুষ্ঠানে নন্দিতা বড়ুয়ার মরদেহটি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের এনাটমি বিভাগে সংরক্ষণ, এবং শিক্ষণ প্রশিক্ষণ ও গবেষণার কাজে ব্যবহারের আবেদনপত্রটি বিভাগীয় চেয়ারম্যানের নিকট প্রদান করা হয়।  এদিন নন্দিতা বড়ুয়ার দুই মেয়ে শাপলা বড়ুয়া এবং সেজুতি বড়ুয়াও মরণোত্তর দেহদানের ইচ্ছা পোষণ করেন।

গত ৩০ জানুয়ারি রাত ২টা ৩০ মিনিটে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় নন্দিতা বড়ুয়া ৬৯ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন। দীর্ঘদিন ধরে তিনি কিডনিজনিত জটিল রোগে ভুগছিলেন। কিডনি রোগের পাশাপাশি এসএলই ও ব্রেইন স্ট্রোকে আক্রান্ত ছিলেন। তিনি তার জীবদ্দশাতেই মরণোত্তর দেহদানের ব্যাপারে সন্তানদের কাছে নিজের ইচ্ছেপোষণ করে গিয়েছিলেন। তার মৃত্যুবরণ করার পর পরিবারের সম্মতিতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্নিয়া বিশেষজ্ঞরা তার কর্নিয়া সংগ্রহ করেন।