বিভাগ থেকে সুপারিশ করা ছাড়াই অধ্যাদেশ লঙ্ঘন করে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের অভিযোগ উঠেছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) প্রশাসনের বিরুদ্ধে।
জানা যায়, আগামী ১৮ ডিসেম্বর বাংলা বিভাগের ৭টি পদে শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষার ঘোষণা দেওয়ার আগে নেওয়া হয়নি বিভাগের সুপারিশ।
এই বিষয়ে বাংলা বিভাগের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. তসলিমা বেগম চ্যানেল আই অনলাইনকে জানান, ২০২১ সালের ১ ডিসেম্বর ও ২০২২ সালের ২ ফেব্রুয়ারি বাংলা বিভাগে বিজ্ঞাপনযোগ্য শূন্য শিক্ষক পদের সংখ্যা জানতে চেয়ে চিঠি পাঠায় প্রশাসন। পরে ২৮ ফেব্রুয়ারি বাংলা বিভাগের প্ল্যানিং কমিটির সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, আপাতত শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দেওয়ার প্রয়োজন নেই। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাদেশের বিরুদ্ধে গিয়ে এবং প্ল্যানিং কমিটির সিদ্ধান্তকে অগ্রাহ্য করে প্রশাসন প্রভাষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে।
চলতি বছরের ১৬ মার্চ বাংলা বিভাগের প্ল্যানিং কমিটির সদস্যদের পক্ষ থেকে ড. মহীবুল আজিজ শিক্ষক সমিতির সভাপতি বরাবর একটি চিঠিতে উল্লেখ করেন, প্ল্যানিং কমিটি বিভাগে শিক্ষক নিয়োগের ন্যূনতম যোগ্যতা বিশ্ববিদ্যালয়ের মঞ্জুরি কমিশনের সাথে সামঞ্জস্য রেখে অনার্স ও মাস্টার্সে যথাক্রমে ৩.৫০ ও ৩.৩০ নির্ধারণ করে৷ অথচ প্রশাসন থেকে প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিটিতে ন্যূনতম যোগ্যতা অনার্স ও মাস্টার্স ডিগ্রীতে ৩.৩০ বলা হয়।
এছাড়াও চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে বিভাগীয় প্ল্যানিং কমিটি থেকে পাঠানো বিশেষজ্ঞ শিক্ষকদের নামের তালিকা যথাযথ অনুসরণ না করে প্রশাসন বিতর্কিত একজন শিক্ষককে নির্বাচিত করে। উক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে উত্তরপত্র মূল্যায়নে জালিয়াতির অভিযোগ তদন্ত কমিটি কর্তৃক প্রমাণিত হয়েছে।
চিঠিতে আরও বলা হয়, একজন শিক্ষার্থীর কলা অনুষদে ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে এসএসসি ও এইচএসসিতে ন্যূনতম ৭.৫০ জিপিএ প্রয়োজন। সেখানে একজন প্রভাষকের যোগ্যতা এই দুই পরীক্ষায় ৭.০০ নির্ধারণ করা হয়েছে। বিভাগের সিদ্ধান্ত অগ্রাহ্য করে এরূপ নিয়োগ নীতিবহির্ভূত ও অমর্যাদাকর।
বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. শফিউল আজম ডালিম বলেন, যেই জিপিএ নিয়ে একজন শিক্ষার্থী কলা অনুষদের ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারে না, সেই জিপিএ নিয়ে একজন প্রভাষক নিয়োগ হবে তা কোনোভাবেই কাম্য নয়। বিভাগের প্ল্যানিং কমিটি যাদের নাম নির্বাচন করবে তাদেরকেই শুধুমাত্র প্রবেশপত্র পাঠানোর নিয়ম থাকলেও সেই সিদ্ধান্ত অগ্রাহ্য করে পছন্দসই পরীক্ষার্থীদের প্রবেশপত্র পাঠানো ও এবং স্বজনপ্রীতির অভিযোগ তুলেছেন শিক্ষকেরা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রবীণ শিক্ষকদের দাবি, প্ল্যানিং কমিটির সিদ্ধান্ত ছাড়া নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাদেশের লঙ্ঘন।
এ বিষয়ে চবি রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) কে এম নূর আহমদকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, উপাচার্যকে সিণ্ডিকেট থেকে এই ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে যে, তিনি চাইলেই এই প্রক্রিয়ায় নিয়োগ দিতে পারবেন।
এ বিষয়ে মন্তব্য জানতে চবি উপাচার্য ড. শিরীণ আখতারের মুঠোফোনে যোগাযোগ করতে চাইলেও তিনি কল ধরেননি।