দানিয়েল সুজিত বোস, নড়াইল: নড়াইলে পুলিশের উপস্থিতিতে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ স্বপন কুমার বিশ্বাসের গলায় জুতায় মালা পরানোর ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করেছে। ওই ঘটনায় এ পর্যন্ত ৩ জনকে আটক করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
গত ১৮ জুন মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) কে নিয়ে কটূক্তিকারী ভারতের বিজেপির বহিষ্কৃত নেতা নূপুর শর্মাকে সমর্থন করে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেয়ার অভিযোগ উঠে নড়াইলের মির্জাপুর ইউনাইটেড ডিগ্রী কলেজের প্রথমবর্ষের ছাত্র রাহুল দেব রায়ের বিরুদ্ধে।
এরপর ছাত্র রাহুল দেব কলেজে গেলে কয়েকজন ছাত্র উত্তেজিত হয়ে তাকে ধাওয়া দেয়। ধাওয়া খেয়ে রাহুল দেব কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ স্বপন কুমার বিশ্বাসের কক্ষে আশ্রয় নেন। এমন পরিস্থিতিতে ওই ছাত্রকে তাদের হাতে তুলে দেওয়ার দাবি জানায় বিক্ষুব্ধরা। অধ্যক্ষ বিষয়টি পুলিশে জানায়। এতে ওই ছাত্ররা আরও ক্ষুব্ধ হয়। পরে এলাকার আরও কিছু মানুষ এসে তাদের সাথে যোগ দিয়ে কলেজ ঘেরাও করে।
এক পর্যায়ে পুলিশ এসে ওই দুজনকে উদ্ধার করলেও তাদের উপস্থিতিতে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ তুলে বিক্ষুব্ধরা শিক্ষক স্বপন কুমার বিশ্বাস এবং শিক্ষার্থী রাহুল দেবের গলায় জুতার মালা পড়িয়ে দেয়।
সেই ঘটনার পর তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ জানায় সুশীল সমাজ। অন্যদিকে ঘটনা তদন্তে পুলিশ ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে পৃথক দুটি তিন সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটির তদন্ত অব্যহত রয়েছে।
এমন ঘটনার সঠিক তদন্তপূর্বক ঘটনায় উস্কানি দেওয়া ও জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির দাবি জানান শিক্ষক সমাজ ।
এ বিষয়ে নড়াইলের পুলিশ ও প্রশাসনের সাথে যোগাযোগ করা হলে ক্যমেরার সামনে আসতে না চাইলেও মুঠোফোনে পুলিশ সুপার জানান, বর্তমানে ওই এলাকার পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে আছে এবং ওই শিক্ষক নিরাপদে আছেন।
নড়াইলের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান বলেন, পুরো ঘটনাটি পুলিশ ও প্রশাসনের পৃথক তদন্ত কমিটির আওতায় তদন্তাধীন রয়েছে। ৩০ জুন তদন্ত প্রতিবদন পাওয়ার পর যে বা যারা এর সাথে জড়িত, তাদের কঠোর শাস্তির আওতায় আনা হবে।