কুমিল্লা সিটি করপোরেশন (কুসিক), উপজেলা, পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদসহ মোট ১৮৯টি নির্বাচনে ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এর মধ্যে বেশির ভাগ নির্বাচনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোটগ্রহণ হচ্ছে।
বুধবার (১৫ জুন) সকাল ৮টায় শুরু হওয়া ভোটগ্রহণ চলবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত।
সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান নির্বাচন কমিশনের (ইসি) দায়িত্ব নেওয়ার পর প্রথমবারের মতো নির্বাচন অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে কাজী হাবিবুল আউয়াল কমিশন। ভোটের মধ্যে কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের (কুসিক) ভোটকে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছে এ কমিশন।
নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের জনসংযোগ পরিচালক ও যুগ্ম সচিব এস এম আসাদুজ্জামান মঙ্গলবার (১৪ জুন) জানান, বুধবার সকাল ৮টা থেকে ভোট চলবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত। একই দিন একটি উপজেলায় সাধারণ নির্বাচন ও তিনটি উপজেলায় বিভিন্ন পদে উপনির্বাচন, পাঁচ পৌরসভায় সাধারণ ও একটি ওয়ার্ডে উপনির্বাচন, ১৩২টি ইউনিয়নে সাধারণ ও ৪৭টি ইউপিতে বিভিন্ন পদে উপনির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এর মধ্যে কুসিক, ১৩২ ইউপি ও দুটি পৌরসভায় ভোটগ্রহণ হবে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম)।
কুসিক নির্বাচনে পুরো ভোটকেন্দ্রই থাকছে ক্লোজ সার্কিট (সিসি) ক্যামেরা দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। এতে ১০৫টি ভোটকেন্দ্রে লাগানো হয়েছে ৮৫০টি সিসি ক্যামেরা।
এ বিষয়ে আসাদুজ্জামান জানান, কুমিল্লা সিটি নির্বাচনে মোট ১০৫টি ভোটকেন্দ্রের ৬৪০টি ভোটকক্ষের প্রতিটিতে বসানো হচ্ছে সিসি ক্যামেরা। এতে মোট ৮৫০টি সিসি ক্যামেরা পর্যবেক্ষণ করবে ভোটারসহ সবার গতিবিধি। এক্ষেত্রে ভোটকেন্দ্রের প্রবেশ পথ ও ভোটকক্ষের প্রবেশ পথে থাকবে সিসি ক্যামেরা।
কুমিল্লা সিটির ভোট নিয়ে প্রধান দুই রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ-বিএনপির ভোটাররা দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পড়েছেন। এই পরিস্থিতিতে সদ্য সাবেক মেয়র বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত মনিরুল ইসলাম সাক্কুর হ্যাটট্রিক বিজয় হবে, না কি প্রথমবারেই জয়ের মুকুট আওয়ামী লীগের প্রার্থী আরফানুল হক রিফাতের নিশ্চিত হবে তা দেখার জন্য অপেক্ষা করতে হবে আজ বুধবার ভোটের ফলাফল পাওয়া পর্যন্ত।
ভোটাররা বলছেন-সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে তারা তাদের নগর পিতা নির্বাচন করতে চান। এক্ষেত্রে তাদের দাবি বহিরাগত, কালো টাকা এবং ক্ষমতাসীন দলের প্রভাব মুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা বলছেন-নির্বাচনে নিরাপত্তা জোরদার করতে তাদের পক্ষ থেকে যত ধরনের ব্যবস্থা নেওয়ার দরকার সব নেওয়া হয়েছে।
নির্বাচনী এলাকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ। তিনি বলেন, কুমিল্লা সিটি করপোরেশন ও পৌরসভাগুলোয় ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরা বসানো হয়েছে।
নির্বাচন কমিশন সচিবালয় থেকে এক হাজার ৬শর বেশি সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করা হবে। নির্বাচনি পরিস্থিতি সম্পর্কে তিনি বলেন, নির্বাচনি এলাকায় এখন পর্যন্ত পরিস্থিতি ভালো। ভোটকেন্দ্রে মালামাল পৌঁছে গেছে। ভোট নিয়ে কোনো চ্যালেঞ্জ নির্বাচন কমিশন দেখছে না।
ইসি জানিয়েছে, ভোটগ্রহণ উপলক্ষ্যে নির্বাচনি এলাকায় সব ধরনের প্রতিষ্ঠানে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়নি। শুধু যেসব প্রতিষ্ঠানে ভোটকেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে, সেগুলোয় সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। তবে সংশ্লিষ্ট নির্বাচনি এলাকার স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ সব প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ভোটারদের ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ দিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ জানিয়েছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।