সৌদি আরবে মৃত্যুদণ্ড পাওয়া এক ভারতীয়কে বাঁচাতে ‘ব্লাড মানি’ হিসেবে বিশ্বজুড়ে অনলাইনের মাধ্যমে ৪৫ কোটি সংগ্রহ করা হয়েছে। এই অর্থের বিনিময়ে মৃত্যুদণ্ড থেকে মুক্তি পাবেন আবদুল রহিম নামের ওই ব্যক্তি।
ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম এনডিটিভি জানিয়েছে, মৃত্যুদণ্ড পাওয়া আবদুল রহিম নামক এক ভারতীয় নাগরিক দেশটিতে থাকা অবস্থায় ১৫ বছর বয়সী এক নাবালকের দেখভালের দায়িত্বে ছিলেন। সেই নাবালক লাইফ সাপোর্টের সাহায্যে বেঁচে ছিল। একদিন সেই অবস্থায় নাবালককে গাড়িতে করে নিয়ে যাচ্ছিলেন রহিম। তখন সেই নাবালকের মৃত্যু হয়। পরে নাবালকের মৃত্যুর ঘটনায় দোষী সাব্যস্ত করা হয় রহিমকে।
২০০৬ সালে যখন ঘটনাটি ঘটে তখন রহিমের বয়স ছিল ২৬ বছর। এর দীর্ঘ ১২ বছর পর ২০১৮ সালে সৌদি আদালত রহিমকে মৃত্যুদণ্ডের সাজা শোনায়। পরে সেই রায়কে উচ্চ আদালতে চ্যালেঞ্জ জানানো হয়েছিল। সেখানেও সেই রায় বহাল ছিল। পরে মৃত নাবালকের পরিবার রহিমকে ৪৫ কোটি টাকা ‘ব্লাড মানি’র বিনিময়ে ক্ষমা করে দিতে রাজি হয়।
দেশটির আইন অনুযায়ী, সেখানে কোনও ব্যক্তির মৃত্যুর ঘটনায় দোষী সাব্যস্তকে ইচ্ছে করলে ক্ষমা করে মুক্তি দিতে পারে মৃতের পরিবার। এর বদলে জরিমানা দিতে হয় দোষী সাব্যস্ত হওয়া বন্দিকে। সেই জরিমানাকেই ‘ব্লাড মানি’ বলা হয়।
আগামী ১৬ এপ্রিলের মধ্যে এই ব্লাড মানি জমা দেওয়ার দিন ধার্য করা হয়েছে। এদিকে রহিমের পরিবারের সেই সামর্থ্য না থাকায় ভারতে তার গ্রামের বাড়িতে জরিমানার টাকা জোগাড় করতে একটি ‘অ্যাকশন কমিটি’ গঠন করে স্থানীয়রা। সেখান থেকে ‘সেভ আবদুল রহিম’ নামে একটি অ্যাপ চালু করা হয়। সেই অ্যাপের মাধ্যমেই স্বচ্ছতার সঙ্গে রহিমের জন্য ব্লাড মানি সংগ্রহ করা হয়।
জানা গেছে, মার্চের শেষের দিকে শুরু হওয়া এই অ্যাপের মাধ্যমে গত সপ্তাহ পর্যন্ত মাত্র কয়েক কোটি টাকা সংগ্রহ করা হয়েছিল। এরপর এই অ্যাপের কথা এবং রহিমের ঘটনা ইন্টারনেটে বেশ ভাইরাল হয়। এর কয়েকদিনের মধ্যেই বাকি টাকা সংগ্রহ করা হয় এই অ্যাপের মাধ্যমে।