জয়ের জন্য অস্ট্রেলিয়ার তখনো দরকার ২০২ রান, হাতে ৬ উইকেট। এমন সমীকরণ সামনে রেখেই চতুর্থ দিনে সফরকারীরা ব্যাটিংয়ে নামে। দিনের শুরুতেই সাজঘরে ফেরেন ট্রাভিস হেড। তবে অ্যালেক্স ক্যারি, মিচেল মার্শ ও প্যাট কামিন্সের ব্যাটে দ্বিতীয় সেশনেই ৩ উইকেটে ক্রাইস্টচার্চ টেস্ট জিতেছে অস্ট্রেলিয়া।
টসে হেরে ব্যাটিংয়ে নামা নিউজিল্যান্ড প্রথম ইনিংসে ১৬২ রানে অলআউট হয়। জবাবে ২৫৬ রানে গুটিয়ে যায় অস্ট্রেলিয়া। দ্বিতীয় ইনিংসে কিউইরা ৩৭২ রানে থামলে অজিদের জয়ের লক্ষ্য দাঁড়ায় ২৭৯ রান। অতিথিরা ৭ উইকেটে খুইয়ে জয়ের বন্দরে পা দেয়।
দুই ম্যাচ টেস্ট সিরিজ ২-০ ব্যবধানে জিতে স্বাগতিকদের হোয়াইটওয়াশ করল অস্ট্রেলিয়া। টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের বর্তমান শিরোপাধারীরা বর্তমান চক্রের পয়েন্ট টেবিলের দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে। ১২ ম্যাচে মোট ৯০ পয়েন্ট পাওয়া অজিদের পয়েন্ট ৬২.৫০ শতাংশ। তিন নম্বরে থাকা নিউজিল্যান্ড ৬ ম্যাচে ৩৬ পয়েন্ট নিয়ে ৫০ শতাংশ পয়েন্ট পেয়ে তিন নম্বরে আছে। শীর্ষে থাকা ভারতের পয়েন্ট ৬৮.৫১ শতাংশ। টিম ইন্ডিয়ার ৯ খেলায় মোট পয়েন্ট ৭৪। চতুর্থ স্থানে থাকা বাংলাদেশ দুই ম্যাচে পেয়েছে ১২ পয়েন্ট, মোট শতকরা পয়েন্ট ৫০ শতাংশ।
৮০ রানের মাথায় পঞ্চম উইকেট হারানো ক্যাঙ্গারুদের উদ্ধার করেন ক্যারি ও মার্শ। ষষ্ঠ উইকেটে তারা ১৪০ রানের জুটি গড়েন। ব্যক্তিগত ২৮ রানে মার্শ ক্যাচ দিলেও জীবন পান। পরে ১০২ বলে ১০ চার ও এক ছক্কায় ৮০ রানের ইনিংস খেলার পর বেন সিয়ার্সের বলে বোল্ড হন।
মার্শ ড্রেসিংরুমে ফেরার পরের বলেই উইল ইয়াংয়ের হাতে তালুবন্দি হয়ে ফেরেন মিচেল স্টার্ক। হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনা জাগান অভিষিক্ত সিয়ার্স। ক্রাইস্টচার্চ টেস্টে ছড়ায় উত্তেজনা ও রোমাঞ্চ।
অজিদের জয়ের জন্য তখনো প্রয়োজন ৫৯ রান, হাতে বাকি ৩ উইকেট। অধিনায়ক প্যাট কামিন্সকে নিয়ে ৬১ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি গড়ে টানটান উত্তেজনাপূর্ণ খেলায় অজিদের জয় পাইয়ে দেন ক্যারি।
অল্পের জন্য সেঞ্চুরি না পাওয়া ক্যারি ১২৩ বলে ১৫ চারে ৯৮ রানে অপরাজিত থাকেন। তাকে যোগ্য সঙ্গ দেয়া কামিন্স ৪৪ বলে ৪টি চারে ৩২ রান করে দলের জয় নিশ্চিত করেই মাঠ ছাড়েন।
ব্ল্যাক ক্যাপসদের পক্ষে সিয়ার্স ৪টি্, ম্যাট হেনরি দুটি ও টিম সাউদি একটি করে উইকেট পান।
দ্বিতীয় ইনিংসে অপরাজিত ৯৮ রানের ইনিংস খেলার পাশাপাশি উইকেটের পেছনে ম্যাচে ১০ ক্যাচ নেয়ায় অবধারিতভাবেই ম্যাচ সেরা হন ক্যারি। দুই টেস্ট সিরিজে বল হাতে ১৭ উইকেট ও ব্যাট হাতে ১০১ রান করায় সিরিজ সেরা হন ম্যাট হেনরি।
চতুর্থ ইনিংসে ২৭৯ রান কিংবা তার বেশি লক্ষ্য তাড়ায় এ নিয়ে ১৪তম বারের মতো জিতল অস্ট্রেলিয়া। ২০০৬ সালের পর এ নিয়ে তৃতীয়বার জয়ের দেখা পেল টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপাধারীরা। গত তিন দশকে মাত্র একবার অজিদের সঙ্গে টেস্টে জয় পাওয়া নিউজিল্যান্ড চরম হতাশা নিয়ে মাঠ ছাড়ে।