চ্যানেল আইয়ের দুই যুগে পদার্পণ উপলক্ষে শুভেচ্ছাবাণীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তথ্য প্রযুক্তির যুগে টেলিভিশনকে শুধু বিনোদনের মাধ্যম হিসেবে ভূমিকা রাখলে চলবে না। সামাজিক দায়বদ্ধতা বজায় রেখে বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ ও অনুষ্ঠান পরিবেশন করে এবং দেশজ শিল্প সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য তুলে ধরতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার আলোকে দেশের মানুষের উন্নত মনন গঠনে এবং সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদসহ নানা অপতৎপরতা দমনে জনসচেতনতা সৃষ্টি করতে অবদান রাখতে হবে।
তিনি বলেন, আজ বিশ্বে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে বাংলাদেশের যে উত্তরণ, সেই গৌরব অর্জনে গণমাধ্যম আমাদের গুরুত্বপূর্ণ সহযাত্রী। সরকারের ‘রূপকল্প-২০৪১’ বাস্তবায়নের মাধ্যমে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের ‘সোনার বাংলাদেশ’ গড়ার লক্ষ্য অর্জনে ‘চ্যানেল আই’ অব্যাহত সমর্থন রাখবে- এ প্রত্যাশা করি।
প্রধানমন্ত্রী বেসরকারি স্যাটেলাইট টেলিভিশন ‘চ্যানেল আই’ এর ২৪ বছরে পদার্পণ উপলক্ষ্যে পরিচালনা পর্ষদ, সাংবাদিক, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও কলাকুশলীসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানান।
বাণীতে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার সবসময়ই গণমাধ্যমের বিকাশে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে। ১৯৯৬ সালে দেশসেবার দায়িত্ব পাওয়ার পর আমাদের সরকার প্রথমবারের মতো দেশে বেসরকারি স্যাটেলাইট টেলিভিশন চালুর অনুমোদন দেয়। ফলে সম্প্রচার জগতে শুরু হয় এক নতুন অধ্যায়ের। ২০০৯ সালে সরকার গঠনের পর আমরা ‘তথ্য অধিকার আইন-২০০৯’ প্রণয়ন করি এবং ‘তথ্য কমিশন’ প্রতিষ্ঠা করি। বেসরকারি খাতে ৪৫টি টেলিভিশন, ২৮টি এফএম রেডিও এবং ৩২টি কমিউনিটি রেডিও চ্যানেলের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার দেশের গণমাধ্যমকে অবারিত করতে জাতীয় অনলাইন গণমাধ্যম নীতিমালা-২০১৭, জাতীয় সম্প্রচার নীতিমালা-২০১৪ সহ বিভিন্ন আইন ও নীতিমালা প্রণয়ন করেছে। চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন অনুষ্ঠান নির্মাণে দক্ষ, যোগ্য কলাকুশলী এবং নির্মাতা সৃষ্টির লক্ষ্যে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন ইনস্টিটিউট (সংশোধন) আইন-২০১৯ প্রণয়ন করা হয়েছে। আমরা সাংবাদিকদের কল্যাণে ‘বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট’ স্থাপন করেছি এবং ‘গণমাধ্যমকর্মী (চাকুরির শর্তাবলী) আইন-২০২২’ প্রণয়ন করতে যাচ্ছি। সংবাদপত্রে কর্মরত সাংবাদিক, কর্মচারী ও প্রেস শ্রমিকদের কল্যাণে ইতোমধ্যে নবম ওয়েজবোর্ড কার্যকর করা হয়েছে। ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় কর্মরত সাংবাদিকদেরকেও ওয়েজবোর্ডের আওতায় আনার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী জানান, বর্তমানে দেশে প্রায় ১২ কোটি ৫৫ লক্ষ মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করছে; যা অনলাইন মিডিয়া, আইপিটিভি এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ব্যাপক প্রসারে ও তথ্য প্রবাহে যুগান্তকারী পরিবর্তন নিয়ে এসেছে। বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ দেশের সম্প্রচার জগতে বিরাট সুযোগের সৃষ্টি করেছে। আমাদের দেশের সব টেলিভিশন চ্যানেল এখন অনেক সাশ্রয়ী ব্যয়ে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ এর মাধ্যমে সম্প্রচার কার্যক্রম পরিচালনা করছে। আমাদের সরকার কর্তৃক ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার ফলে গণমাধ্যমের স্মরণকালের সবচেয়ে বেশি বিকাশ ঘটেছে।
তিনি বলেন, আমি ‘চ্যানেল আই’-এর উত্তরোত্তর সমৃদ্ধি কামনা করছি।