নেইমার, লিওনেল মেসি, সার্জিও রামোস হয়ে কাইলিয়ান এমবাপের বড় অঙ্কের চুক্তির সময়েই আশঙ্কা জেগেছিল— উয়েফার জরিমানার মুখে পড়তে পারে পিএসজি। শঙ্কাটাই শেষে সত্যি হল, আর্থিক শর্ত না মানায় শাস্তিস্বরূপ ১০ মিলিয়ন ইউরো গুনতে হবে লিগ ওয়ান চ্যাম্পিয়ন ক্লাবের।
ইউরোপীয় ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থার আর্থিক ফেয়ার প্লের বলি হয়েছে আরও ৭টি ক্লাব। আয়ের চেয়ে ব্যয় বেশি হওয়ার কারণে ক্লাবগুলোকে এই জরিমানা দেওয়া হয়েছে। আটটি ক্লাব থেকে ইউরোপীয় প্রতিযোগিতার মোট ২৬ মিলিয়ন ইউরো পুরস্কারের অর্থ আটকে রাখার নির্দেশ দিয়েছে উয়েফা।
ক্লাবগুলোর মাঝে সবচেয়ে বেশি আর্থিক জরিমানার দিবে পিএসজি। এছাড়া, ইতালিয়ান ক্লাব এস রোমাকে ৫ মিলিয়ন ইউরো, ইন্টার মিলানকে ৪ মিলিয়ন, জুভেন্টাসকে ৩.৫ মিলিয়ন ও এসি মিলানকে ২ মিলিয়ন ইউরো জরিমানা করা হয়েছে। অতিরিক্ত ব্যয়ের শাস্তিস্বরূপ ৩ লাখ ইউরো করে জরিমানা গুনবে লিগ ওয়ানের ক্লাব মার্শেই ও এস মোনাকো। ৬ লাখ ইউরো জরিমানা গুনতে হবে তুরস্কের ক্লাব বেসিকটাসের।
২০১৮ সাল থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত সময়ে অতিরিক্ত ব্যয়ের জন্য ৮ ক্লাবকে তদন্ত সাপেক্ষে শাস্তির আওতায় এনেছে উয়েফা। আগামী তিন থেকে চার বছরের মধ্যে ক্লাবগুলো আর্থিক লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে না পারলে আরও বড় জরিমানার মুখে পড়তে পারে। অর্থের অঙ্ক তখন ১৪৬ মিলিয়ন ইউরো ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে সতর্ক করেছে সংস্থাটি।
ফুটবল ক্লাবকে দীর্ঘমেয়াদী টিকিয়ে রাখার লক্ষ্যে আর্থিক এই নিয়মটি আনে উয়েফা। ক্লাবের আয়ের সঙ্গে ব্যয়ের সামঞ্জস্য রেখে সামনে এগিয়ে যাওয়া নিশ্চিত করা নিয়মটির লক্ষ্য। শুধু স্টেডিয়াম ও যুব উন্নয়ন প্রকল্পে যতখুশি খরচ করার অনুমতি দিয়েছে সংস্থাটি। এছাড়া, খেলোয়াড় কেনা-বেচা, বেতন-ভাতা সহ অনেকগুলো বিষয়ে একটা নির্দিষ্ট অর্থ বেধে দেয় উয়েফা। আয়ের চেয়ে ব্যয় বেশি হলেই পড়তে হয় জরিমানার মুখে।
উয়েফার এই আর্থিক এই নিয়মে ২০১৪ সালে কাতার ভিত্তিক পিএসজির গুনেছিল ২০ মিলিয়ন ইউরো। একই পরিমাণ অর্থ দিতে হয়েছে আবুধাবি ভিত্তিক ক্লাব ম্যানচেস্টার সিটিকেও।
সংস্থাটির জরিমানা এড়াতে এবার অনেক সতর্ক ছিল পিএসজি। প্যারিসের ক্লাবটি ঢেলে সাজিয়েছিল। আর্থিক খরচ কমিয়ে আনতে স্কোয়াডের বাড়তি খেলোয়াড় ছেড়ে দিয়েছিল, চুক্তি নবায়ন করেনি অনেক খেলোয়াড়ের। তবে শেষ পর্যন্ত জরিমানা রুখতে পারল না ক্লাবটি।
পিএসজি বা অন্য সব ক্লাব উয়েফার জরিমানা ও সময় বেধে দেওয়া নিয়ে মন্তব্য না করলেও ইতালিয়ান চ্যাম্পিয়ন এসি মিলান আশাবাদী তারা ঠিক পথেই হাঁটছে। এক বিবৃতিতে ক্লাবটি বলেছে, ‘আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে আর্থিক টেকসইতার দিকে এগিয়ে যাব আমরা।’
করোনাকালীন সময়ে কারিগরিতার ব্রেক-ইভেন স্টান্ডার্ড (ক্লাবের ক্ষতি ও লাভের একটি রূপ রেখা) পূরণ করতে পেরেছে ম্যানসিটি সহ ১৯টি ক্লাব। ব্রেক-ইভেন স্টান্ডার্ড পূরণে ব্যর্থ হওয়া পর্তুগিজ ক্লাব পোর্তোকে আরেকটি সুযোগ দিয়েছে উয়েফা। নতুন এই লক্ষ্যমাত্রা পূরণে ব্যর্থ হলে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ থেকে এক বছরের নিষেধাজ্ঞার হুমকি দিয়েও রাখা হয়েছে।