সুনামগঞ্জের দিরাই-এ কালনী নদীর তীরের উজানধল-এ কালোত্তীর্ণ লোক গানের স্রষ্টা বাউল সম্রাট শাহ আবদুল করিমকে গানে গানে ও শ্রদ্ধায় স্মরণের মধ্য দিয়ে শেষ হলো দুই দিনের শাহ আবদুল করিম লোক উৎসব ২০২৪’। স্থানীয় জনগণের পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন অঞ্চল এবং দেশের বাইরে থেকে আসা ভক্ত-সুধীজনেরা অংশ নেন উৎসবে।
বাউল সম্রাটের ১০৯তম জন্মদিন উপলক্ষ্যে শাহ আবদুল করিম পরিষদ আয়োজিত উৎসবে এবারও সহযোগিতায় ছিলো দেশের বৃহত্তম মোবাইল আর্থিক সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান বিকাশ।
বাংলা লোকগানের এই বাউলসম্রাটের স্মরণে ২০০৬ সাল থেকে এ উৎসবের আয়োজন করা হচ্ছে। গত বৃহস্পতিবার শাহ আবদুল করিম পরিষদ এর সভাপতি ও বাউল সম্রাট পুত্র শাহ নুর জালাল এর সভাপতিত্বে আলোচনা অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে শুরু হয় উৎসব। সম্রাটের স্মরণে আয়োজিত উৎসবের উদ্বোধনীতে উপস্থিত ছিলেন সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রাশেদ ইকবাল চৌধুরী, বিকাশ-এর হেড অব রেগুলেটরি অ্যান্ড কর্পোরেট অ্যাফেয়ার্স হুমায়ুন কবিরসহ অন্যরা।
আলোচনার পর বাউলসম্রাটের ভক্ত-অনুরাগীরা তাঁর সৃষ্টিকে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে পৌঁছে দিতে তাঁরই গান গেয়ে তাঁকে স্মরণ করেন। ‘গ্রামের নওজোয়ান হিন্দু মুসলমান…’, ‘বন্ধে মায়া লাগাইছে, দিওয়ানা বানাইছে…’, ‘বন্ধুরে কই পাব সখী গো’, ‘কেন পিরিতি বাড়াইলা রে বন্ধু…’, ‘তুমি বিনে আকুল পরান…’ সহ তাঁর কালজয়ী সব গানের সুর ছড়িয়ে পড়ে উজানধলের বসন্ত বাতাসে। উৎসবকে কেন্দ্র করে উজানধল মাঠে নানা পণ্যের পসরা নিয়ে জমে ওঠে বর্ণিল মেলা।
আবদুল করিম-এর নামে একটি একাডেমি করার আশা করে শাহ আবদুল করিম পরিষদ এর সভাপতি ও বাউল সম্রাট পুত্র শাহ নুর জালাল বলেন, “শাহ আবদুল করিম এর বাড়িতে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল ও দেশের বাইরে থেকে ভক্ত-সুধীজনেরা আসেন। তাই এখানে যদি শাহ আবদুল করিম এর নামে একটি একাডেমী তৈরি করা যায়, তাহলে তাঁর সৃষ্টি ও স্বপ্নকে বাঁচিয়ে রাখা সম্ভব হবে। এ ব্যাপারে সবার সহযোগিতা চান তিনি।
উৎসবে বিকাশ-এর হেড অব রেগুলেটরি অ্যান্ড কর্পোরেট অ্যাফেয়ার্স হুমায়ুন কবির বলেন, “একুশে পদকপ্রাপ্ত বাউল সম্রাট শাহ আবদুল করিম এর জন্মস্থান উজানধল-এ আয়োজিত এই লোক উৎসবের আয়োজনের সাথে সহযোগিতা করতে পেরে বিকাশ অত্যন্ত আনন্দিত। তাঁর অনবদ্য সৃষ্টি সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়েছে। এরকম সুস্থ সংস্কৃতির বিকাশে এই ধরনের অনুষ্ঠানে বিকাশ সব সময় পাশে থাকতে চায়।”