বিতর্কিত ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালির প্রতারণামূলক কর্মকাণ্ডে সহযোগিতা ও অর্থআত্মসাতের অভিযোগে অভিনেতা ও গায়ক তাহসান খান, রাফিয়াথ রশিদ মিথিলা ও শবনম ফারিয়া রয়েছেন গোয়েন্দা নজরদারিতে। যেকোনো সময় হতে পারেন গ্রেপ্তারও। এমনটাই জানিয়েছে পুলিশ।
ইভ্যালির প্রতারণায় সহযোগিতার অভিযোগে গ্রাহক সাদ স্যাম রহমানের করা মামলায় তাদের গ্রেপ্তার করা হতে পারে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) রমনা বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) সাজ্জাদুর রহমান।
শুক্রবার (১০ ডিসেম্বর) দুপুরে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
সাজ্জাদুর রহমান বলেন, ‘তাহসান, মিথিলা, শবনম ফারিয়া গোয়েন্দা নজরদারিতে রয়েছেন। প্রতারণার শুরু থেকেই ইভ্যালি নামিদামি তারকাদের ঢাল হিসেবে ব্যবহার করেছে। গ্রাহকদের অভিযোগ জনপ্রিয় এসব তারকাদের দেওয়া মিথ্যা প্রতিশ্রুতির ফাঁদে পা দিয়েই সর্বস্বান্ত হয়েছেন তারা। আমরা গুরুত্ব দিয়ে মামলাটি তদন্ত করছি।’
এর আগে গত শনিবার ৪ ডিসেম্বর সাদ স্যাম রহমান নামে ইভ্যালির এক গ্রাহক ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে অভিনেতা ও গায়ক তাহসান খান, রাফিয়াত রশিদ মিথিলা, শবনম ফারিয়া সহ নয় জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন।
মামলার অন্যান্য আসামিরা হচ্ছেন, ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মোহাম্মদ রাসেল, তার স্ত্রী প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান শামীমা নাসরিন, আকাশ, আরিফ, তাহের ও মো. আবু তাইশ কায়েস।
জানা যায়, সাদ স্যাম রহমান নামে ইভ্যালির এক গ্রাহক গত শনিবার ৪ ডিসেম্বর ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে এ মামলা করেন। মামলার তদন্তের নথি সম্প্রতি রাজধানীর ধানমন্ডি থানায় এসেছে।
শুক্রবার ১০ ডিসেম্বর সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করে ধানমন্ডি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইকরাম আলী মিয়া চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন, আদালতের নির্দেশে আমরা থানায় মামলাটি (নং-৫) গ্রহণ করেছি।
সাদ স্যাম রহমান অভিযোগে উল্লেখ করেন, প্রতারণামূলকভাবে গ্রাহকদের টাকা আত্মসাৎ ও এতে সহায়তা করেছেন তাহসান, মিথিলা ও ফারিয়া। আত্মসাৎ করা টাকার পরিমাণ তিন লাখ ১৮ হাজার। যা তিনি এখনও উদ্ধার করতে পারেননি।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, তাহসান, মিথিলা ও শবনম ফারিয়া ইভ্যালির বিভিন্ন দায়িত্বে ছিলেন। তাদের উপস্থিতি এবং তাদের বিভিন্ন প্রমোশনাল কথাবার্তার কারণে আস্থা রেখে বিনিয়োগ করেন সাদ স্যাম রহমান। এসব তারকার কারণে মামলার বাদী প্রতারিত হয়েছেন বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।
তাহসান, মিথিলা ও ফারিয়া ইভ্যালির বিভিন্ন দায়িত্বে ছিলেন। ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানটির শুভেচ্ছাদূত ছিলেন তাহসান। মিথিলা ছিলেন ইভ্যালির ফেস অব ইভ্যালি লাইফস্টাইলের শুভেচ্ছাদূত। শবনম ফারিয়া প্রধান জনসংযোগ কর্মকর্তা ছিলেন।
প্রতারণা ও অর্থআত্মসাতের অভিযোগে গত ১৬ সেপ্টেম্বর আরেক গ্রাহক আরিফ বাকের ইভ্যালির বিরুদ্ধে রাজধানীর গুলশান থানায় মামলা করেন। মামলার পর ওইদিন বিকালে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের বাসায় অভিযান চালিয়ে রাসেল দম্পতিকে গ্রেফতার করে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। এরপর রাসেল দম্পতিসহ প্রতিষ্ঠানটির কয়েকজন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি মামলা হয়।