চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Nagod

অবসরের বয়সেও অবৈধ নিয়োগে অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন

KSRM

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষা ও গবেষণা ইন্সটিটিউটের অধীনে পোগোজ ল্যাবরেটরি স্কুল এন্ড কলেজ। স্কুলটির অধ্যক্ষ মো. মনির হোসেনের বয়স ৬০ বছর পূর্ণ হওয়ায় ‘জনবলকাঠামো ও এমপিও ভুক্ত নীতিমালা-২০২১’ অনুযায়ী তার অবসরে যাওয়ার কথা। অবসরে গেলেও বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ ও স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ড. কামালউদ্দীন আহমদের যোগসাজশে তিনি সরকারি বিধিমালা ভঙ্গ করে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পেয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। তার এই নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে বিভিন্ন মহলে আলোচনা-সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০২১ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি পোগোজ ল্যাবরেটরি স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে পূর্ণ মেয়াদ সমাপ্ত করেন মনির হোসেন। এর আগেই একই বছরের ১৮ ফেব্রুয়ারী পোগোজ ল্যাবরেটরি স্কুল এন্ড কলেজের গভর্নিং বডির সভায় মনির হোসেনকে অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) হিসেবে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেন স্কুল পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. কামালউদ্দীন আহমদ। এই নিয়োগেই ভঙ্গ করা হয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের জনবলকাঠামো ও এমপিওভুক্ত নীতিমালা।

Bkash July

জনবলকাঠামো ও এমপিও ভুক্ত নীতিমালা ২০২১ এর অনুচ্ছেদ ১১ দশমিক ১১ ধারায় বলা হয়েছে, ঐতিহ্যবাহী ও মানসম্মত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানের স্বার্থে এবং সরকারের কোন আর্থিক সুবিধা বা এমপিও না নেয়ার শর্তে সরকারের অনুমোদনক্রমে শুধু প্রতিষ্ঠান প্রধানের ক্ষেত্রে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেয়া যাবে।

কিন্তু মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে মনির হোসেনের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগে কোনো অনুমোদন দেয়া হয়নি। স্কুল কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে আবেদন করা হলেও তা অনুমোদন হয়নি।

Reneta June

এঘটনায় মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরে (মাউশি) একটি অভিযোগ জমা পড়ে। অভিযোগের প্রেক্ষিতে ২০২৩ সালের ২ ফেব্রুয়ারি ঢাকা জেলা শিক্ষা অফিসার মো. আব্দুল মজিদ স্বাক্ষরিত একটি চিঠি স্কুল কর্তৃপক্ষকে পাঠানো হয়। সেই চিঠিতে থানা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারকে ৭ কর্ম দিবসের মধ্যে তদন্তপূর্বক সুস্পষ্ট মতামত উল্লেখ করে প্রমাণসহ প্রতিবেদন দাখিলের অনুরোধ করা হয়। পরে তদন্ত সাপেক্ষে একটি প্রতিবেদন দাখিল করা হয়।

এঘটনায় পরবর্তীতে চলতি বছরের ২৯ মার্চ ও ১৭ মে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মাধ্যমিক শাখার সহকারী পরিচালক এস.এম জিয়াউল হায়দার হেনরী স্বাক্ষরিত পৃথক দুটি চিঠি স্কুল পরিচালনা কমিটির সভাপতিকে পাঠানো হয়।

২৯ মার্চ পাঠানো চিঠিতে বলা হয়েছে, ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. মনির হোসেন বয়স ৬০ বছর অতিক্রম হওয়ার পরও সরকারের কাছ থেকে কোনোরূপ চুক্তিভিত্তিক নিয়োগে অনুমোদন ছাড়াই পরিচালনা কমিটির অনুমোদন নিয়ে স্বপদে বহাল আছেন এবং আয়ন ব্যায়ন কর্মকর্তার দায়িত্বসহ প্রতিষ্ঠান প্রধানের দায়িত্ব পালন করছেন। যা পুরোপুরি অবৈধ ও জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা-২০২১ এর অনুচ্ছেদ ১১দশমিক ১১ এর সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। কেননা উক্ত অনুচ্ছেদে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের ক্ষেত্রে সরকারের পূর্বানুমোদন নেয়ার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। সরকারের নির্দেশনা প্রতিপালন না করায় জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা ২০২১ এর ১৮ দশমিক ১(খ) ধারা অনুযায়ী কেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবেনা তার জবাব স্কুল পরিচালনা কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ড. কামালউদ্দীন আহমদ ও মনির হোসেনকে ৫ কর্মদিবসের মধ্যে দিতে বলা হয়।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মাধ্যমিক শাখার সহকারী পরিচালক এস.এম জিয়াউল হায়দার হেনরী বলেন, ‘অনুমোদন না দেয়া পর্যন্ত অধ্যক্ষের চেয়ারে কেউ অতিরিক্ত দায়িত্ব নিয়ে বসতে পারবে না। পোগোজ ল্যাবরেটরি স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষের বয়স পূর্ণ হওয়ায় ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের জন্য আবেদন জমা দিলেও তা এখনও গৃহীত হয়নি। এবিষয়ে ম্যানেজিং কমিটির কাছে অনিয়মের জন্য চিঠির মাধ্যমে উত্তর চাওয়া হয়েছে।’ চিঠির উত্তর পেয়েছেন কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সে বিষয়ে এখন বলতে পারছি না।

অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে মো. মনির হোসেন বলেন, আমাকে ম্যানেজিং কমিটি থেকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। তাই দায়িত্ব পালন করছি।’ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রনালয়ের অনুমোদন নিয়েছেন কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, অনুমোদনের জন্য আবেদন দেয়া হয়েছে।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ ও পোগোজ ল্যাবরেটরি স্কুল এন্ড কলেজের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ড. কামালউদ্দীন আহমদ বলেন, আমরা ভেবেছিলাম এটা খণ্ডকালীন তাই দেয়া যাবে। তবে মাউশির নিয়ম অনুযায়ী তো সেটা হয়না। তাই একটা তদন্ত কমিটি হয়েছিল। তদন্ত সাপেক্ষে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের অব্যাহতির সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। আগামী দুয়েকদিনের মধ্যেই নতুন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষকে দায়িত্ব দেয়া হবে।

 

I Screen Ami k Tumi
Labaid
Bellow Post-Green View