চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

সৌদি থেকে হুন্ডি পরিহার করে বৈধ পথে রেমিট্যান্স পাঠানোর আহ্বান

সৌদি আরব থেকে হুন্ডি পরিহার করে বৈধ পথে ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স প্রেরণ করার আহ্বান জানিয়েছেন রাষ্ট্রদূত ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী। তিনি বলেন, ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স প্রেরণ করা হলে তা অনেকাংশে বৃদ্ধি পেতে পারে।

রাষ্ট্রদূত জানান, চলতি অর্থ বছরের এপ্রিল মাস পর্যন্ত সৌদি প্রবাসীরা দেশে প্রায় ৩.৪ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন।

তবে সৌদি আরবে বসবাসরত ২৮ লক্ষ প্রবাসী বাংলাদেশী বৈধ পথে রেমিট্যান্স প্রেরণ করলে তা আরও অনেকাংশে বৃদ্ধি পেতে পারে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

রিয়াদস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসে “রেমিট্যান্স প্রবাহ বৃদ্ধি ও হুন্ডি প্রতিরোধে আমাদের করনীয়” শীর্ষক এক সেমিনারে এসব কথা বলেন রাষ্ট্রদূত।

সেমিনারে রিয়াদের কমিউনিটির বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধি, ব্যবসায়ী, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর, রিয়াদের বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের অধ্যক্ষ ও বিওডি সদস্যসহ অন্যান্যরা যোগ দেন। এছাড়া দূতাবাসের কর্মকর্তারা সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন।

এসময় রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশী কমিউনিটির সবাইকে হুন্ডি প্রতিরোধে সাধারণ প্রবাসীদের মধ্যে সচেতনতা তৈরির আহবান জানান।

রাষ্ট্রদূত বলেন, বিদেশে আসার আগে দক্ষতা অর্জন করে আসলে ভালো বেতনের চাকুরী পাওয়া সম্ভব। দক্ষ কর্মী প্রেরণ করা হলে রেমিট্যান্স প্রবাহ বেড়ে যাবে।

রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী বলেন, সৌদি আরবে বাংলাদেশি কর্মীদের গ্রহণযোগ্যতা বাড়ানোর পাশাপাশি শ্রমবাজার সম্প্রসারণে উদ্যোগ গ্রহণ করেছে বাংলাদেশ দূতাবাস। সৌদির সরকারি প্রতিষ্ঠান তাকামলের মাধ্যমে দক্ষতা যাচাই করার সুযোগ তৈরি হয়েছে সৌদি গমনে ইচ্ছুক বাংলাদেশি কর্মীদের।

সৌদির সরকারি প্রতিষ্ঠান তাকামল হোল্ডিং বাংলাদেশে বসেই দক্ষ/আধা দক্ষ কর্মীদের দক্ষতা যাচাইয়ের কাজ করবে এবং সনদ প্রদান করবে। প্লাম্বিং, ইলেকট্রিশিয়ান, মেকানিক, ওয়েল্ডিং, কার্পেন্টার পেইন্টার, প্লাস্টারার, বিল্ডারসহ ২৩টি বিষয়ে দক্ষতা যাচাই ও সনদ প্রদান করা হবে।

এছাড়া সৌদি প্রবাসীদের জন্য বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের আওতায় বিভিন্ন প্রোগ্রাম চালু আছে বলেও রাষ্ট্রদূত উল্লেখ করেন।

রাষ্ট্রদূত ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী বলেন, সৌদি আরবে আসার ব্যয় কমানোর লক্ষ্যে ভিসা ট্রেডিং বন্ধে দূতাবাস কাজ করছে এবং প্রত্যেকটি ভিসা যাচাই করার বিষয়ে উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। ভিসা ট্রেডিং বন্ধে কঠোর অবস্থান গ্রহণ করা হয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

তিনি বলেন, প্রবাসী কর্মীর মাইগ্রেশন কষ্ট না কমানো হলে তাদের আয়ের সুফল পাওয়া যায় না। কারন একজন প্রবাসী কর্মীর কয়েক বছর লেগে যায় তার বিদেশে আসার ব্যায় তুলে আনতে।

রাষ্ট্রদূত বৈধ পথে রেমিট্যান্স প্রেরণ করে সরকারি আড়াই শতাংশ প্রণোদনা গ্রহণ করার পাশাপাশি দেশের রিজার্ভ বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখার জন্য প্রবাসীদের প্রতি আহবান জানান। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশের বিভিন্ন ব্যাংকের এপস ব্যবহার করে নিজের একাউন্ট সৌদি আরবে বসেই পরিচালনা করার কথা উল্লেখ করেন তিনি। সৌদি আরবে বসেই সোনালী ব্যাংকের ই-ওয়ালেট ব্যবহারের বিষয়টি তিনি তুলে ধরেন।

যে সকল বাংলাদেশী প্রবাসীরা সৌদি আরবে ব্যবসা করছেন তাদের ব্যবসা নিজের নামে রেজিস্ট্রেশন করে বৈধভাবে ব্যবসা করার আহবান জানান রাষ্ট্রদূত। তিনি বলেন, এতে সৌদি আরবে বৈধ ব্যবসার সুযোগের পাশাপাশি দেশে রেমিট্যান্স প্রেরনেও সুবিধা পাওয়া যায়।

তিনি বিভিন্ন শ্রমিক ক্যাম্পে দূতাবাসের সোনালী ব্যাংকের সেবা প্রদানের জন্য নির্দেশনা প্রদান করেন।