বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলসে চার মহাদেশের বক্তাদের অংশগ্রহণে, ব্রাসেলস প্রেসক্লাব বাংলাদেশের গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি প্রদানের আহ্বান জানিয়েছে।
২৫ মার্চ গণহত্যা দিবস স্মরণে ব্রাসেলসে বাংলাদেশ দূতাবাস এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের মিশন দ্বারা আয়োজিত আলোচনা অনুষ্ঠানে এসময় গণহত্যায় নিহতদের পরিবারের সদস্য এবং গণহত্যা থেকে বেঁচে যাওয়া ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।
জেনোসাইড ওয়াচের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি অধ্যাপক গ্রেগরি এইচ স্ট্যান্টন গণহত্যায় ‘অস্বীকার’ করার গুরুত্বপূর্ণ দিকটি তুলে ধরে বলেন এটি বাংলাদেশের জন্য এবং যুগে যুগে অন্যান্য দেশে গণহত্যার ক্ষেত্রে খুবই প্রযোজ্য। তিনি উল্লেখ করেন যে, মার্কিন সরকার বাংলাদেশে ১৯৭১ সালের গণহত্যাকে এখনো স্বীকৃতি দেয়নি।
সাউথ এশিয়া ডেমোক্রেটিক ফোরামের (এসএডিএফ) প্রতিষ্ঠাতা ও নির্বাহী পরিচালক এবং ইউরোপীয় পার্লামেন্টের প্রাক্তন সদস্য জনাব পাওলো কাসাকা বলেন, বাংলাদেশের গণহত্যা হলো হলোকাস্টের পর সবচেয়ে বড় গণহত্যা। তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, পাকিস্তান ১৯৭১ সালে তার সামরিক জান্তা দ্বারা সংঘটিত জঘন্য অপরাধের জন্য এখনও ক্ষমা চায়নি।
১৯৭১ সালের গণহত্যা থেকে বেঁচে যাওয়া অধ্যাপক তাজিন মাহনাজ মুরশিদ বলেন, বাংলাদেশে গণহত্যায় বিশ্ব নাগরিকরা যখন ক্ষুব্ধ, তখন বিশ্বনেতারা নীরব ছিলেন।
রাষ্ট্রদূত এবং মিশন প্রধান মাহবুব হাসান সালেহ তার বক্তব্যে ২৫ মার্চ ১৯৭১ সালের অন্ধকার রাতের কথা স্মরণ করে বলেন, পাকিস্তান সেনাবাহিনী বর্তমান বাংলাদেশে ‘অপারেশন সার্চলাইট’ কোড নামে নিরপরাধ ও নিরস্ত্র বাঙালি বেসামরিক নাগরিকদের ওপর গণহত্যা শুরু করেছিল। এর একটি আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি দরকার কারণ এটি হাজার হাজার ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সদস্যদের সান্ত্বনা দেবে এবং ইতিহাসের সাথে ন্যায়বিচার করবে।
রাষ্ট্রদূত সালেহ এসময় ত্রিশ লাখ শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন যারা তাদের জীবন উৎসর্গ করেছেন। নিপীড়িত হাজার হাজার নারীর প্রতি গভীর শ্রদ্ধা এবং সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা জানান।
অনুষ্ঠানে মুক্তিযুদ্ধের শহীদ ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয় এবং ‘একাত্তরে গণহত্যা ও হত্যার ক্ষেত্র’ শীর্ষক একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।
অনুষ্ঠানে এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন সাবেক আইন প্রণেতা, কূটনীতিক, ইউরোপীয় কমিশনের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, আন্তর্জাতিক সংস্থা, একাডেমিয়া ও মিডিয়ার প্রতিনিধি এবং বাংলাদেশ কমিউনিটির সদস্যরা।