দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী ১০৭ বছর বয়সী বীর সৈনিক কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলার বড় আজলদী গ্রামের ল্যান্স নায়েক আবদুল মান্নান। বয়সের ভার এখনও কাবু করতে পারেনি তাকে। কারও সহযোগিতা ছাড়া একা চলাফেরা করতে তিনি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন। বিশ্বযুদ্ধ বিজয়ী সেই বীর সৈনিক ল্যান্স নায়েক আবদুল মান্নান শেষ বয়সে এসে জীবন সংগ্রামে হাবুডুবু খাচ্ছেন। এমন পরিস্থিতি জানিয়ে তিনি ব্রিটিশ রানিকে চিঠি দিয়ে উত্তরও পেয়েছিলেন।
এতে নিয়মিতকরণ করা হয়েছিল যৎসামান্য সম্মানী ভাতা। আত্মমর্যাদা সম্পন্ন জীবনযাপন এবং সরকারি কোনো সুযোগ থাকলে তাকে সহায়তা করার দাবি তার।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের দামামা বেজে উঠলে স্বশিক্ষিত কিশোর আবদুল মান্নান ২৫ বছর বয়সে ১৯৪২ সালে সৈনিক হিসেবে নাম লেখান কিশোরগঞ্জের ডাকবাংলো মাঠে। ট্রেনিং নেন ভারতের হায়দ্রাবাদে। তারপর যুদ্ধ জাহাজে এক মাস বিভিন্ন রণাঙ্গনে ঘুরে শেষ পর্যন্ত ১৯৪৫ সালে বার্মায় অবস্থান নেন। যুদ্ধ ক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকার জন্য ল্যান্স নায়েক হিসাবে পদোন্নতিও পান তিনি। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধশেষে আবারও চার হাজার সৈন্যবাহী জাহাজে চড়ে রণাঙ্গন ছেড়ে আসেন। ফিরে আসেন হায়াদ্রাবাদ হয়ে কলকাতায়। সেখানে পাঁচ শ’ টাকা ধরিয়ে দিয়ে বাড়িতে পাঠানো হয় তাকে।
তারপর থেকে সম্মানি হিসেবে সাড়ে ৩ হাজার টাকা পাওয়ার কথা থাকলেও সেটি অনিয়মিত হয়ে পড়ে। নব্বইয়ের দশকে এমন পরিস্থিতিতে ব্রিটেনের রানি এলিজাবেথকে চিঠি লিখে তার দুর্দশার কথা জানান তিনি। তার সেই চিঠির উত্তরও দেন রানি।
ব্রিটিশ হাইকমিশনের সহযোগিতায় ওই সম্মানী নিয়মিত করার ব্যবস্থা করা হয়। পরে মাঝে দীর্ঘ ১৫ বছর পর্যন্ত বন্ধ হয়ে যায় সম্মানী। তবে কয়েক বছর আগে আবারও পেতে থাকেন সম্মানী। এখন পর্যন্ত বছরে প্রায় ৩৬ হাজার টাকা সম্মানী মিলে তার।