চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

হামলাকারীদের শনাক্তে ব্রাজিলের সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ

ব্রাজিলের কংগ্রেস, প্রেসিডেন্ট প্যালেস এবং সুপ্রিম কোর্টে সদ্য সাবেক প্রেসিডেন্ট ও কট্টরপন্থি নেতা বলসোনারোর সমর্থকদের হামলার ঘটনায় কারা নেতৃত্ব দিয়েছে তা তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে দেশটির সুপ্রিম কোর্ট।

এছাড়া হামলার সময় রাজধানীতে নিরাপত্তার ত্রুটি ছিল বলে অভিযোগ করেছে সুপ্রিম কোর্ট। এজন্য ব্রাসিলিয়ার গভর্নরকে ৯০ দিনের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি আলেকজান্ডার ডি মোরেস সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক, টুইটার এবং টিকটককে অভ্যুত্থান-প্রচারণাকে ব্লক করার নির্দেশ দিয়েছেন।

অন্যদিকে ব্যাপক হামলার প্রায় তিন ঘণ্টা পর ক্ষতিগ্রস্ত সরকারি ভবনগুলো পুনরুদ্ধার করা শুরু করেছে পুলিশ। এর আগে রোববার হাজার হাজার গণতন্ত্রবিরোধী বিক্ষোভকারী সুপ্রিম কোর্ট, কংগ্রেস এবং রাষ্ট্রপতির প্রাসাদে আক্রমণ করে এবং জানালা ভেঙে দেয়, আসবাবপত্র উল্টে দেয়, শিল্পকর্ম ধ্বংস করে এবং ১৯৮৮ সালে রচিত দেশের মূল সংবিধান চুরি করে। প্রেসিডেন্টের নিরাপত্তা অফিস থেকে বন্দুকও চুরি করা হয়েছে।

ব্রাজিলের বর্তমান বামপন্থি প্রেসিডেন্ট লুলা দা সিলভা গত বছরের অক্টোবরের নির্বাচনে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট বলসোনারোকে পরাজিত করেছিলেন এবং ১ জানুয়ারি দায়িত্ব গ্রহণ করেছিলেন। তবে বলসোনারো ও তার সমর্থকরা এই হার মেনে নিতে পারছে না। এর আগেও তারা বেশ কয়েকবার বিক্ষোভ করে।

রোববারের হামলার সময় ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুলা বন্যা বিধ্বস্ত আরারাকোয়ারা শহরে পরিদর্শনে গিয়েছিলেন। সেখানে থাকা অবস্থায় রাজধানী ব্রাসিলিয়ায় হামলার খবর পান তিনি। এরপর সেখান থেকেই একটি ডিক্রি জারি করেন তিনি। যেখানে রাজধানী ব্রাসিলিয়ায় আগামী ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত ফেডারেল নিরাপত্তা হস্তক্ষেপ ঘোষণা করেছেন। অথাৎ দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি বজায় রাখতে নিরাপত্তাবাহিনীকে বিশেষ ক্ষমতাও দেয়া হয়েছে।

হামলার নিন্দা করে প্রেসিডেন্ট লুলা বলেন, এই ফ্যাসিস্ট সমর্থকরা এমন কিছু করলো, যা এ দেশের ইতিহাসে আগে কখনও হয়নি। যারা এই হামলা চালিয়েছে, তাদের আমরা খুঁজে বের করবো এবং আইনের মাধ্যমে তাদের বিচার করা হবে।

প্রেসিডেন্ট লুলা ও তার দল সমর্থকদের উদ্দীপ্ত করার জন্য বলসোনারোকে দোষারোপ করেছেন। তবে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানরত বলসোনারো দাঙ্গা উস্কে দেয়ার অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছেন। তিনি সোমবার এক টুইট বার্তায় বলেন, শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ গণতান্ত্রিক, কিন্তু সরকারী ভবনগুলোতে আক্রমণ সীমা অতিক্রম করেছে, আমি এর নিন্দা জানাই।

সাবেক প্রেসিডেন্ট বলসোনারো এখন পর্যন্ত নিজের হার স্বীকার করেননি। বরং গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে আয়োজিত নির্বাচনে পরাজয়কে তিনি ভোট গণনায় কারচুপি হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। যদিও অক্টোবরে পরাজয়ের পরেই দেশ ছেড়েছেন বলসোনারো। তিনি বর্তমানে ফ্লোরিডায় থাকেন, যেখানে রয়েছেন ট্রাম্পও।

উল্লেখ্য, গত বছরের অক্টোবরে সাধারণ নির্বাচনে জাইর বলসোনারোকে হারিয়ে জয়ী হন লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভা। এরপরই থেকেই বলসোনারোর সমর্থকরা সামরিক অভ্যুত্থানের দাবিতে ব্রাজিলের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ শুরু করেন। রোববারের হামলাও এই বিক্ষোভেরই বহিঃপ্রকাশ।

ব্রাজিলের এই হামলা স্মরণ করিয়ে দিয়েছে দু’বছর আগের যুক্তরাষ্ট্রের স্মৃতি। মার্কিন ক্যাপিটাল হিলে ২০২১ সালের ৬ জানুয়ারি এভাবেই হামলা চালিয়েছিলেন সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সমর্থকেরা।