‘হৃদয়ে বাংলাদেশ, ‘সম্ভাবনার শক্তি’ এবং ‘যে পৃথিবী আমরা গড়তে চাই ‘ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে আগামী ৯, ১০ এবং ১১ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর আর্মি স্টেডিয়ামে (বৃহস্পতি, শুক্র ও শনিবার) তিন দিনব্যাপী ‘হোপ ফ্যাস্টিভাল’ করবে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ব্র্যাক। প্রতিদিন সকাল এগারটা থেকে রাত দশটা পর্যন্ত চলবে অনুষ্ঠানমালা।
আজ বৃহস্পতিবার (১২ জানুয়ারি) রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এ ঘোষণা দেয় প্রতিষ্ঠানটি।
ব্র্যাকের কমিউনিকেশনস, পিপল অ্যান্ড কালচারের জ্যেষ্ঠ পরিচালক মৌটুসী কবীর বলেন, ২০২২ সালের ২১ মার্চ ৫০ বছর পূর্ণ করেছে ব্র্যাক। সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষে ২০২২ সালের মার্চ মাস থেকে বিভিন্ন কার্যক্রম হাতে নেয় ব্র্যাক। সেই আয়োজনের শেষ পর্ব সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত এই উৎসব।
সংবাদ সম্মেলনে ব্র্যাকের নির্বাহী পরিচালক আসিফ সালেহ্ বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি, অংশীদারিত্ব ছাড়া কোনো সামাজিক পরিবর্তন সম্ভব নয়। বাধা মোকাবিলায় নতুন ও উদ্ভাবনী সমাধান নিয়ে আমাদেরকে এগিয়ে আসতে হবে। তরুণ প্রজন্মের সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে ভবিষ্যতের নিত্যনতুন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সবাইকে একসাথে কাজ করতে হবে। এই উৎসবের মাধ্যমে আমরা আগামী দিনের পথচলায় ও সামাজিক সমস্যা সমাধানে সবাইকে যুক্ত করতে চাই।’
ব্র্যাক এন্টারপ্রাইজেস-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক তামারা আবেদ বলেন, ‘পঞ্চাশ বছরের পথচলায়, মানুষকে সাথে নিয়ে, তাদের সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে, সংগঠিত করে যে ভিন্ন ধারার উন্নয়ন কার্যক্রম ব্র্যাক পরিচালনা করেছে, তার স্বকীয়তা ও কার্যকারিতা আজ সারা বিশ্বে সমাদৃত। বাংলাদেশ ও দেশের বাইরে পাঁচ দশকের কাজ থেকে বিপুল অভিজ্ঞতা ও শিক্ষা অর্জন করেছি আমরা। আমরা মাঠ পর্যায় থেকে যা প্রতিনিয়ত শিখছি তা সবার সামনে উপস্থাপন করতে চাই। ভিন্ন ধারার উন্নয়ন চিন্তা ও সামাজিক সমস্যার উদ্ভাবনী সমাধানকে আমরা উৎসাহ দিতে চাই।”
আয়োজকরা জানান, এই আয়োজনের অন্যতম লক্ষ্য শিক্ষা, আর্থিক ক্ষমতায়ন, জেন্ডার সমতা, জলবায়ু পরিবর্তন, মানসিক স্বাস্থ্য – এই জনগুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি। বিশেষত তরুণ সমাজকে সামগ্রিকভাবে দেশের ও নিজ নিজ এলাকার সমস্যা সমাধানে এগিয়ে আসতে উৎসাহ জোগাতে চায় ব্র্যাক।
উৎসবে থাকছে আবহমান বাংলার চিরায়ত লোকজ সংস্কৃতির সম্মিলন, পুঁথিপাঠ, গল্পপাঠের আসর, বায়োস্কোপ, পুতুল নাচ, শিশুদের খেলার জগত, সারাদিনব্যাপী নানা প্রদর্শনী। এছাড়াও দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্পীদের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠানের মূল মঞ্চে প্রতিদিনই থাকছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। থাকছে গহনা বানানো, কারিগর ও কার্টুনিস্টদের সঙ্গে আনন্দদায়ক কর্মশালায় যোগ দেবার সুযোগ।
ইতিবাচক সামাজিক উদ্যোগের স্বীকৃতি হিসাবে “আমরা নতুন নেটওয়ার্ক ইয়াং চেঞ্জমেকার্স অ্যাওয়ার্ড”-এর মাধ্যমে সম্মাননা জানানো হবে তরুণদের। এই সম্মাননা তৃণমূল থেকে তুলে আনবে সামাজিক উদ্যোক্তাদের। এছাড়াও থাকছে কর্মক্ষেত্রে নারীদের জন্য বিশেষ সম্মাননা ‘টাগা আউটস্ট্যান্ডিং ইয়াং প্রফেশনাল অ্যাওয়ার্ড’।
তিন দিনের অনুষ্ঠানমালার বিভিন্ন আয়োজনে অংশ নেবেন ফজলুর রহমান বাবু, নগরবাউল জেমস, অর্ণব, ওয়ারফেইজ, লালন, নেমেসিস এবং আর্টসেলের মতো জনপ্রিয় ব্যান্ড।
উৎসবে সবার অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করতে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য থাকছে বিশেষ ব্যবস্থা। থাকছে প্রতিবন্ধীবান্ধব অবকাঠামো, অনুষ্ঠান পরিক্রমা, প্রতিবন্ধী মানুষের যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম ‘সাইন ল্যাঙ্গুয়েজ’ শেখার সুযোগ।
https://brachopefestival.net/ এই ওয়েবসাইটের লিংকে রেজিস্ট্রেশনের মাধ্যমে দর্শনার্থীরা কোনো প্রবেশমূল্য ছাড়াই উৎসবে অংশ নিতে পারবেন। বার বছরের কমবয়সি শিশুদের রেজিস্ট্রেশন বা নিবন্ধন করতে হবে না।