বিপিএল এবার মাতিয়ে রেখেছিল ফরচুন বরিশাল। দলটির ম্যাচের দিন দর্শকে ভরে উঠত পুরো স্টেডিয়াম। উৎসবের আঙিনা হয়ে উঠত পুরো প্রাঙ্গণ। সাকিব-মিরাজদের অসাধারণ ক্রিকেট খেলার মধ্য দিয়ে যে ফ্যান বেজ তৈরি হয়েছিল অবিশ্বাস্য। প্রতিদান অবশ্য পুরোপুরি দিতে পারেনি দলটির খেলোয়াড়রা। অনেক আগেই প্লে-অফ নিশ্চিত করা সাকিব আল হাসানের দল ছিটকে গেছে নকআউট পর্বে (এলিমিনেটর ম্যাচ) খেলতে নেমেই ।
শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামের এক নম্বর গেটের চায়ের দোকানি আব্দুল মালেক বলছিলেন, বরিশালের বাদ পড়ায় আমাদের ব্যবসা তেমন হবে না। এই একটি দলের ম্যাচেই মানুষ বেশি হতো। বিক্রিও বেশ ভালো হতো।’
বরিশালের ম্যাচের দিনগুলোতে ঢাকার বাইরের ভেন্যুতেও দেখা গেছে দর্শক উপস্থিতি বেশি। শুরুর ৬ ম্যাচে টানা পাঁচটি জয় পায় সাকিবের দল। দেখায় দাপট।
তবে শেষের সাত ম্যাচে তারা জিতেছে মোটে দুটি। বিপিএলে মুদ্রার দুই পিঠই দেখেছে দলটি। তেমনি দেখেছেন সাকিবও। তার ব্যাটিং ঘিরে উন্মাদনার শেষ ছিল না, এবার তার ব্যাটিংয়ে না নামা নিয়ে আক্ষেপ বরিশাল ভক্তদের।
সাকিবের নেতৃত্বে টুর্নামেন্টের মাঝামাঝি পর্যন্ত দারুণ ক্রিকেটীয় রোমাঞ্চ উপহার দেয়া বরিশাল শেষে এসে ভক্তদের প্রত্যাশা মেটাতে পারেনি। ব্যাট হাতে দারুণ করছিলেন সাকিব। ১১ ইনিংসে তিন ফিফটিতে ১৭৪.৭১ স্ট্রাইক রেটে করেছেন ৩৭৫ রান।
বিপিএলে ব্যাটিংয়ে তার আসরে রংপুর রাইডার্সের বিপক্ষে দলের বাঁচা-মরার ম্যাচে নামেননি ফরচুন বরিশালের অধিনায়ক। যা নিয়ে তাকে কাঠগড়ায় তুলেছে। ম্যাচ পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনেও বার বার উঠেছে এসেছে ব্যাপারটি।
ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে টিকে থাকার ম্যাচে মেহেদী হাসান মিরাজের দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে বড় সংগ্রহ গড়ার পথে ছিল বরিশাল। স্লগ ওভারে বিদেশি খেলোয়াড়দের ওপর বেশি ভরসা করে সাকিব নিজেকে পেছনের সারিতে নিয়ে যান। দারুণ ব্যাটিং উইকেট পেলেও ১৭০ রানের বেশি তুলতে পারে বরিশাল। যা পর্যাপ্ত ছিল না ম্যাচ জয়ে।
পুরো আসরে ৩ থেকে ৫ নম্বরের মধ্যে ব্যাট করেছেন সাকিব। পেয়েছেন সাফল্যও। রংপুরের বিপক্ষে ম্যাচে ৩ উইকেট পড়ে যাওয়ার পরও ব্যাটিংয়ে দেখা যায়নি তাকে। ম্যাচ হেরে বিদায় নেওয়ার পর দলের প্রধান কোচ নাজমুল আবেদিন জানান, নিজের সিদ্ধান্তেই ব্যাটিংয়ে নামেননি সাকিব।
বরিশালের ভেরিফায়েড ফেসবুক থেকে অধিনায়ককে কাঠগড়ায় তুলে পোস্ট করা হয়। যেখানে হারের দায় সাকিব নেবেন কি না, সে কথাও জিজ্ঞেস করা হয়।
খানিক পরেই অবশ্য পোস্টটি ডিলিট করে বরিশাল কর্তৃপক্ষ। পরে বরিশালের মিডিয়া ম্যানেজার মোহাম্মদ সেকান্দার আলী জানান, পেজের একজন এডমিন ভুল করে পোস্টটি করেছিলেন।
হতে পারে ‘আউট অব দ্য বক্স’ কিছু ভেবেই সাকিব পরে ব্যাট করতে চেয়েছিলেন। তার ভাবনা বা পরিকল্পনায় কী ছিল, সেটি জানা যায়নি ম্যাচ শেষে বরিশাল অধিনায়ক সংবাদ সম্মেলনে না আসায়। পাঠানো হয় কোচকে। শেষে সাকিব হয়ত নেমে ক্যামিও খেলতে চেয়েছিলেন। কিন্তু করিম জানাত ও ভানুকা রাজাপাকসে আর আউটই হননি। রান তুলতে পারেননি ব্যবধান গড়ার মতো। পরিকল্পনা মতো সব হলে আউট অব দ্য বক্স বলে সাকিবের প্রশংসায় ভাসতেন সবাই!