এক মাসেরও বেশি সময় পার হয়েছে চলমান বিপিএলের। ইতোমধ্যেই শেষ হয়েছে লিগপর্বের ম্যাচগুলো। প্লে-অফের চারটি দলও নিশ্চিত হয়ে গেছে। সাকিব-তামিম-লিটন ও তানজিদরা লড়বে ফাইনালের পথে। ৭টি দলের প্রত্যেকে একে-অপরের মুখোমুখি হয়েছে দু’বার করে। মাঠে গড়িয়েছে ৪২টি ম্যাচ।
ঢাকায় তিন দফায়, সিলেট ও চট্টগ্রামে এক রাউন্ড করে মোট ৫ রাউন্ডে শেষ হয়েছে বিপিএলের লিগপর্বের খেলা। সোমবার থেকে গড়াতে চলেছে পরবর্তী পর্বের খেলা। দিনের প্রথম ম্যাচে এলিমেনেটর ম্যাচে লড়বে পয়েন্ট টেবিলের তিনে ও চারে থাকা ফরচুন বরিশাল ও চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স। দিনের দ্বিতীয় ম্যাচে প্রথম কোয়ালিফায়ারে লড়বে শীর্ষে রংপুর রাইডার্স ও দুইয়ে থাকা কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ার গড়াবে বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায়। এলিমেনেটরে জয়ী দল ও প্রথম কোয়ালিফায়ারে পরাজিত দল খেলবে ম্যাচটি। দুই কোয়ালিফায়ারে জয়ী দল ফাইনাল খেলবে পহেলা মার্চ।
চলতি আসরে এখন পর্যন্ত ব্যাটে-বলে আলো ছড়িয়েছেন দেশি ক্রিকেটাররা। বিদেশি ক্রিকেটারদের আসা যাওয়ার মধ্যে দেশিরা সুযোগ পেয়েছেন পারফর্ম করার। সেই সুযোগ কাজেও লাগিয়েছেন তারা। ব্যাটে-বলে দুই বিভাগেই দাপট টাইগার ক্রিকেটারদের।
তাওহীদ হৃদয় ও তানজিদ তামিম দুজনেই মেলে ধরেছেন নিজেদের। আসরে এখন পর্যন্ত তিনটি সেঞ্চুরির দুটিই এই দুই তরুণ ব্যাটারের। যদিও শেষ দিকে এসে ধারাবাহিক ব্যাটিংয়ে রান সংগ্রাহকের তালিকায় শীর্ষে পৌঁছেছেন তামিম ইকবাল। ৩২.৫৮ গড়ে ফরচুন বরিশাল অধিনায়কের মোট রান ৩৯১। ১২ ম্যাচে তামিমের ফিফটি রয়েছে দুটি, সর্বোচ্চ রান ৭১।
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের হয়ে ঝলক দেখানো হৃদয় আছেন টেবিলের দুইয়ে। ১২ ইনিংসে ৩৮.৩ গড়ে তার রান সংখ্যা ৩৮৩। সর্বোচ্চ রান ১০৮, এছাড়া ৯১ রানের অপরাজিত ইনিংসও খেলেছেন তিনি।
তৃতীয় স্থানে রয়েছেন চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের ওপেনার তানজিদ হাসান তামিম। ১১৬ রানের দুর্দান্ত একটি ইনিংস এসেছে তার ব্যাট থেকে। ১১ইনিংসে ৩৪.৭২ গড়ে রান করেছেন ৩৮২।
রান সংগ্রাহকের শীর্ষ দশে রয়েছেন আরও পাঁচ টাইগার ক্রিকেটার। ৩১৪ রানে পাঁচে মুশফিকুর রহিম, ৩১০ রান করে ছয়ে দুর্দান্ত ঢাকা নাঈম শেখ, সাতে আছেন খুলনার অধিনায়ক এনামুল হক বিজয়, তার রান সংখ্যা ২৯৬। কুমিল্লার অধিনায়ক লিটন দাস ২৯২ রান করে আছেন আটে। ২৭৮ রান করে নয়ে খুলনার আফিফ হোসেন।
সেরা দশে জায়গা পাওয়া দুই বিদেশি হলেন দুর্দান্ত ঢাকার অ্যালেক্স রোস ও চট্টগ্রামের টম ব্রুস। ১১ ম্যাচে ৩৯.১১ গড়ে ৩৫২ রান করে রোস আছেন তালিকার পাঁচে। আর ৮ ম্যাচে ২৬১ রান করে দশে আছেন ব্রুস।
ব্যাট হাতে হতাশ করেননি সাকিব-মাহমুদউল্লাহরা। শুরুর দিকে ছন্দে না থাকলেও পরে ছন্দে ফিরেছেন সাকিব। রংপুর রাইডার্সের এই ক্রিকেটার ১১ ম্যাচে ২৭.৬৬ গড়ে করেছেন ২৪৯ রান। বরিশালের হয়ে খেলা সৌম্য সরকারও রান পেয়েছেন। ২৪ গড়ে ১২ ম্যাচে করেছেন ২৪০ রান। ২৮.৭৫ গড়ে মাহমুদউল্লাহ করেছেন ২৩০ রান।
বল হাতেও দাপট দেখিয়েছেন টাইগার বোলাররা। তালিকায় সবার শীর্ষে আছেন দুর্দান্ত ঢাকার শরীফুল ইসলাম। ১২ ম্যাচে তার উইকেট সংখ্যা ২২টি। ১৫.৮৬ গড়, ৭.৮১ ছিল ইকনোমি রেট। ১৭ উইকেট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছেন সাকিব। ১৫.৫২ গড় এবং ৬.২৩ ইকনোমি রেট তার।
তৃতীয় স্থানে আছেন শেখ মেহেদী হাসান। ১৬.৯৩ গড় এবং ৬.৯৯ ইকনোমি রেটে নিয়েছেন ১৫ উইকেট। ১৪ উইকেট নিয়ে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের বিলাল খান রয়েছেন চার নম্বরে। একমাত্র বিদেশি এই ক্রিকেটার হিসেবে রয়েছেন সেরা দশের তালিকায়।
দেশি বোলারদের মধ্যে হাসান মাহমুদ ও তাসকিন আহমেদ নিয়েছেন ১৩টি করে উইকেট। কুমিল্লার তানভীর ইসলাম ১১ ম্যাচে নেন ১২টি। মাথায় আঘাত পেয়ে ছিটকে যাওয়া মোস্তাফিজুর রহমানও নিয়েছেন ৯ ম্যাচে ১১ উইকেট। তানজিম হাসান সাকিব ও শহীদুল ইসলাম ১১টি করে এবং মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন ৬ ম্যাচে নিয়েছেন ১০টি উইকেট।