
আগামী নির্বাচন সাংবিধানিকভাবেই হবে উল্লেখ করে কৃষিমন্ত্রী ডক্টর আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, ‘সংবিদানের বাইরে নির্বাচন হওয়ার কোন সুযোগ নেই। কোন তত্ত্বাবধায়ক সরকার নয়, সাংবিধানিকভাবেই আগামী নির্বাচন হবে। আন্দোলনের নামে বিএনপি আগুন সন্ত্রাস-নৈরাজ্য সৃষ্টি করলে চূড়ান্ত খেলায় বিএনপিকে ব্যর্থতার গ্লানি নিয়ে মুখে কালি মেখে অস্তিত্ব হারাতে হবে।’
মঙ্গলবার ১৯ সেপ্টেম্বর দিনাজপুরে বাংলাদেশ গম ভুট্টা ইনস্টিটিউটে বার্ষিক গবেষণা পর্যালোচনা ও কর্মসূচি কর্মশালার উদ্বোধনী শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্ন উত্তরে তিনি এসব কথা বলেন।
কৃষিমন্ত্রী বলেন: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ২০০৮ সালে জনগণের বিপুল সমর্থন নিয়ে সরকার গঠন করে। ২০১৮ সালের নির্বাচন ছিল অত্যন্ত স্বচ্ছ, সুন্দর ও নিরপেক্ষ। সারা পৃথিবীর কাছে তা গ্রহণযোগ্য হয়েছে। সেই নির্বাচনকেও বিএনপি গ্রহণ করেনি। তারা বলেছে, এটি নাকি পক্ষপাতিত্ব নির্বাচন হয়েছে। তারপর তারা আন্দোলন করেছে, আগুন সন্ত্রাস করেছে, পুলিশ পিটিয়েছে, রেললাইন তুলে দিয়েছে, মানুষ হত্যা করেছে।
এছাড়াও ১৪ সালের নির্বাচন তারা বানচাল করতে পারেনি, তারা নির্বাচনে আসেনি। ১৫ সালে একটানা ৯০ দিন হরতাল অবরোধের নামে বাংলাদেশকে অচল করার চেষ্টা করেছে। সর্বশেষে বেগম খালেদা জিয়া পল্টনের অফিসে বসে শেখ হাসিনার পতনের দাবি তুলেন, শেখ হাসিনা দেশ থেকে না পালানো পর্যন্ত খালেদা জিয়া বিএনপি অফিস ছাড়বে না বলেও জানান। কিন্তু ৯০ দিন শেষে ব্যর্থতার গ্লানি নিয়ে মুখে কালি মেখে গুলশানের বাড়িতে গিয়ে উঠেন। এখন কখনও হাসপাতালে, কখনও জেলখানায় আবার কখনও নিজের বাড়িতে অবস্থান করেন তিনি। এখন দেশকে অস্থির ও অচল করার জন্য রাজনীতির নামে সহিংসতা সৃষ্টি করে, দেশকে অচল অবস্থায় নিয়ে যেতে চাইছে বিএনপি।

এখনও তাদের ওই একই দাবি, গত পাঁচ সাত বছর ধরে বলে আসছে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে, নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে হবে। আমরা বলেছি, সংবিধানে যেভাবে আছে, সেভাবেই নির্বাচন হবে। এর বাইরে নির্বাচন হওয়ার কোন সুযোগ নেই। নির্বাচনের সময় নির্বাচন কমিশন যেভাবে নির্দেশ দিবে সেইভাবেই নির্বাচন পরিচালনা হবে। কিন্তু এখন তাদের পদচারণা, পদযাত্রা, বিক্ষোভ, সমাবেশ একটার পর একটা করেই যাচ্ছে একটানা। কিন্তু কোনটাতেই সফল হয়নি।
মন্ত্রী তারেক জিয়ার কথা উল্লেখ করে বলেন: বরং তারেক জিয়া পালিয়ে বছরের পর বছর নির্লজ্জভাবে বিদেশে থাকছে। একজন রাজনৈতিককর্মী, দেশপ্রেমী সাহসী মানুষকে দেশেই থাকতে হবে। তিনি জেলেই থাকুক কিংবা বাইরে থাকুক, এই মন মানসিকতা থাকতে হবে। কিন্তু তারেক জিয়া রয়েছে লন্ডনের বিলাসবহুল বাড়িতে। সেখানে বসে রিমোট কন্টোলে রাজনীতি নানা নির্দেশনা দেয়।
মন্ত্রী আরও বলেন: এতদিন তারা মহড়া দিয়েছে। এখন সর্বশেষ ঝাকি দিতে চাইছে। মহড়ায় ব্যর্থ হয়েছে। এখনও হুমকি ও ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। বিদেশীদের সহযোগিতা চেয়েও তারা ব্যর্থ হয়েছে। বিএনপি কিছুতেই সফল হবে না। চূড়ান্ত খেলায় বিএনপিকে ব্যর্থতার গ্লানি নিয়ে মুখে কালি মেখে অস্তিত্ব হারাতে হবে।
মন্ত্রী বলেন: তাদের এই পরিণতি দেখে আমার কষ্ট হয়। বাংলাদেশে অবশ্যই একটি বিরোধী দলের দরকার আছে। পৃথিবীর সব দেশেই সরকারের জবাবদিহিতার জন্য, স্বচ্ছতার জন্য শক্তিশালী বিরোধী দল দরকার। পার্লামেন্টে বিরোধীদল দরকার। দু’টি বাহু ছাড়া যেমন কাজ করতে পারে না, তেমনি পার্লামেন্টেও দু’টি বাহু থাকা প্রয়োজন। আমরা চাই একটি শক্তিশালী বিরোধী দল থাক। কিন্তু এখন তারা যে পথে যাচ্ছে, দেশ অচল করার জন্য, দেশে নৈরাজ্য সৃষ্টি করার জন্য। সেটাতে তারা সফল হবে না। আমি মনে করি ব্যর্থতার গ্লানি নিয়ে তারা হতাশায় নিমজ্জিত হবে। বিএনপি’র অস্তিত্ব থাকবে বলেই আমার মনে হয় না।