রাজধানী ঢাকা শহরে বিএনপির সমাবেশকে কেন্দ্র করে দুষ্কৃতিকারীদের হামলায় বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর ২৫ জন সদস্য আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে দুই জনের অবস্থা গুরুতর।
শনিবার ‘২৮ অক্টোবর) বিএনপি ও জামায়াতের সমাবেশকে কেন্দ্র করে পুলিশের সঙ্গে বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর আনসার ও ব্যাটালিয়ন আনসার মোতায়েন করা হয়েছিল। এছাড়া বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ও প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তা রক্ষায় আনসার সদস্যরা দায়িত্ব পালন করে।
দায়িত্ব পালনকালে আনসার সদস্যরা দুস্কৃতিকারীদের হামলার শিকার হয়েছেন। এতে ২৫ জন সদস্য আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে ২ জনের অবস্থা অত্যন্ত গুরুতর। জীবন রক্ষার্থে শটগান থেকে গুলি ছুঁড়েছেন আনসার সদস্যরা।
বিষয়টি নিশ্চিত করে আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর উপ পরিচালক মো. জাহিদুল ইসলাম চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন: কাকরাইল মোড়ে ডিউটিরত অবস্থায় আনসার হোসেন আলী অতর্কিত হামলার শিকার হন। আক্রমণকারীরা আনসার সদস্য মো. হোসেন আলীর চোখ ও শরীরের বিভিন্ন অংশে প্রচণ্ড আঘাত করলে তিনি গুরুতর আহত হন। পরে তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের জরুরী বিভাগে ভর্তি করা হয়। কর্তব্যরত চিকিৎসক তার মাথায় ৫টি ও কপালে ৪টি সেলাইসহ প্রাথমিক চিকিৎসা দেন। এছাড়া তার শরীরের বিভিন্ন অংশে ক্ষত হয়েছে।
কমলাপুরে বিআরটিসি বাস ডিপো’তে কিছু দুষ্কৃতিকারী প্রবেশ করতে চাইলে দায়িত্বরত আনসার সদস্যরা বাধা দেয়। এতে দুষ্কৃতিকারীরা আনসার সদস্যদের উপর হামলা করে। এতে একজন আনসার সদস্য ইটের আঘাতে আহত হলে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। বিআরটিসি’র বাসের ডিপো রক্ষার্থে ও নিজেদের জীবন বাঁচাতে আনসার সদস্যরা শটগান থেকে গুলি ছুঁড়ে দুস্কৃতিকারীদেরকে ছত্রভঙ্গ করে দেয়।
তিনি আরও বলেন: পল্টনে দুষ্কৃতিকারীরা ইট-পাটকেল নিয়ে পুলিশ ও আনসার সদস্যদের উপর হামলাকালে সেখানে দায়িত্বরত আনসার সদস্যদের মধ্যে বেশ কয়েকজন আহত হন। তাদের মধ্যে আনসার মো. সুমন আলী বুকে মারাত্মক আঘাত পান।
বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে পুলিশের সাথে আনসার সদস্যরা দায়িত্বরত অবস্থায় হামলা শিকার হয়। সেখানে হামলাকারীদের আক্রমণ থেকে নিজেদের রক্ষার্থে এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য আনসার সদস্যরা শটগান দিয়ে রাবার ও সীসা কার্তুজ ফায়ার করেন।
জানা যায়, এদিন ১০০ জনের একটি আনসার ব্যাটালিয়ন কোম্পানি রাজারবাগ পুলিশ লাইন্স-এ অবস্থান করে বিভিন্ন গেট এর নিরাপত্তায় নিয়োজিত ছিল। আনুমানিক বিকাল ১৬৪৫ ঘটিকায় ২ নম্বর গেট-এ কতিপয় দুষ্কৃতিকারীরা অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টির লক্ষ্যে একটি বাসে আগুন লাগিয়ে দেয়। সাথে সাথে প্লাটুন কমান্ডার মো. লতিফ হোসেনের নেতৃত্বে ব্যাটালিয়ন সদস্যরা গেটের নিরাপত্তা জোরদার করে এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়।
ঢাকা মহানগর এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষার্থে ডিএমপি পুলিশকে সহায়তা জন্য বিভিন্ন পদবীর ১০০০ জন ব্যাটালিয়ন আনসার সদস্য এসএমজি, রাইফেল, শটগান, প্রয়োজনীয় সংখ্যক গোলাবারুদ ও রায়ট গিয়ার এবং ৫১২ জন আনসার সদস্য শটগান, প্রয়োজনীয় সংখ্যক গোলাবারুদ ও রায়ট গিয়ারসহ মোট ১৫১২ জন সদস্য স্ট্যান্ডবাই অবস্থায় ছিল। এর মধ্যে ১০০ জনের একটি আনসার ব্যাটালিয়ন কোম্পানি রাজারবাগ পুলিশ লাইনের ০৫ টি গেইটে অবস্থান করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় দায়িত্ব পালন করেছে।
ঢাকা মহানগর এলাকায় ৬৮৩টি গার্ডে ১৩২৭১ জন আনসার সদস্য নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করছে। এর মধ্যে ২৪০০ জন আনসার ঢাকা মহানগর পুলিশের সাথে বিভিন্ন থানায় মোতায়েন রয়েছে।