“সোহেল রানা ভাই, উজ্জ্বল ভাইদের মতো কিংবদন্তী নায়কেরা আমার মতো অতি ক্ষুদ্র মানুষের জন্মদিনে শুভেচ্ছা জানিয়ে যখন বলেন, ‘শিল্পীদের যোগ্য নেতা’- তখন তাদের মতো গুণীজনদের কাছে শ্রদ্ধায় মাথা নত হয়ে আসে। মনে হয়, আমার মতো নগন্য মানুষের আর পাওয়ার কিছু নাই। সব পাওয়া হয়ে যায় তাদের এমন ভালোবাসার কাছে।”
চ্যানেল আই অনলাইনকে কথাগুলো বলছিলেন চিত্রনায়ক ও শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক জায়েদ খান।
শুক্রবার (৩০ জুলাই) জায়েদ খানের জন্মদিন। বিশেষ এই দিনে এফডিসির মসজিদে মিলাদ ও দোয়ার আয়োজনের পাশাপাশি কোরআন খতম দেয়া হয়েছে বলে জানান জায়েদ। দিনের শুরু থেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের বদৌলতে নবীন প্রবীণ অভিনয়শিল্পী ও গণমাধ্যমকর্মীদের শুভেচ্ছা বার্তায় সিক্ত হচ্ছেন ‘অন্তর জ্বালা’ খ্যাত অভিনেতা।
বিপদে আপদে চলচ্চিত্রের যেকোনো শিল্পীদের পাশে সর্বদা জায়েদকে পাওয়া যায়। সুবিধাবঞ্চিত কিংবা অসচ্ছ্বল শিল্পীদের পাশে একজন যোগ্য সংগঠক হিসেবে পাশে থাকেন। গত বছরের মার্চ থেকে করোনাকালীন কয়েক দফায় অসহায় শিল্পীদের সহায়তার ব্যবস্থা করে দিতে দেখা গেছে তাকে। পৌঁছে দিয়েছেন নিত্য প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রী থেকে শুরু করে আর্থিক অনুদান!
হোক তা পরিমাণে অল্প, কিন্তু করোনার এই করুণ সময়ে সামর্থবানদের থেকে সহায়তা এনে অসহায়দের সমর্থনের এমন উদ্যোগ- প্রশংসা করছেন খোদ শিল্পীরাই। জায়েদের জন্মদিনেও সবার কাছ থেকে এসব কথাই ঘুরে ফিরে আসছে। এজন্য সবার কাছে কৃতজ্ঞতাও জানান জায়েদ।
তবে একটি কারণে আজ মন খারাপ তার। বললেন, এবারের জন্মদিনে বহু গুণী মানুষদের কাছ থেকে শুভেচ্ছাবার্তা পাচ্ছি, দারুণ অনুপ্রেরণামূলক কথা বলছেন সবাই। তবু এবারের জন্মদিনটি আমার জন্য মন খারাপের। কারণ এই প্রথম আমি বাবাকে ছাড়া জন্মদিন পালন করছি। প্রতি বছর জন্মদিনে বাবা-মায়ের পা ছুঁয়ে দিন শুরু হতো, কিন্তু এবারই ব্যতিক্রম ঘটলো। মাকে পেয়েছি, কিন্তু বাবার প্রয়াণে নিয়মের ব্যত্যয় ঘটলো। তবে জন্মদিনের পুরো দিনটি সবচেয়ে বেশি মিস করেছি বাবাকে। লকডাউন না থাকলে পিরোজপুরে বাবা যেখানে শায়িত আছেন, সেখানে চলে যেতাম। এই দিনে বাবার কবরের পাশে থাকতে পারলে ভালো লাগতো।
বাবাকে হারানোর বছরে নিজের জন্মদিনে বিশেষ কোনো আয়োজন না রাখলেও এদিন বিকেলে জায়েদ ছুটে গেছেন রাজধানীর উত্তরার ‘ফ্যামিলি ফর চিলড্রেন’ (এফএফসি) নামের অনাথ আশ্রমে।
জায়েদ জানান, গত রোজার ঈদে এই অনাথ আশ্রমে গিয়েছিলাম। ঈদের বিকেল-সন্ধ্যা সেখানকার সুবিধাবঞ্চিত ও বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন এসব শিশুদের সাথে কাটিয়ে অন্যরকম ভালোলাগা নিয়ে ফিরেছিলাম। আজকে আমার জন্মদিনে আবার সেখানে চলে এলাম। প্রায় দুইশো শিশুর সাথে সময় কাটিয়েছি, তাদের সাথেই কেক কেটেছি, খাইয়ে দিয়েছি, সবার মধ্যে চকলেট বিতরণ করেছি। নিষ্পাপ বাচ্চাদের সাথে কাটানো মুহূর্তুগুলোও দারুণ কেটেছে। আজ দুপুরে তাদের সাথে খাওয়ার কথা ছিলো, দুপুরে না থাকতে পারলেও নিজ উদ্যোগে দুপুরে সবাইকে খাইয়েছি।