ঢাকার ৯টি ভেন্যুতে হবে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের বিজয় উৎসব
অসাম্প্রদায়িক চেতনা ও উদারবাদী সংস্কৃতির ধারা সমুন্নত রাখতে সক্রিয় থাকার অঙ্গীকার
রাজধানী ঢাকার মোট ৯টি ভেন্যুতে বিজয় উৎসবের আয়োজন করেছে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট। সোমবার (১২ ডিসেম্বর) রাজধানীর ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের নেতারা।
সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক মো. আহ্কাম উল্লাহ্’র সঞ্চালনায় সংবাদ সম্মেলনে মূল বক্তব্য পাঠ করেন সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ। প্রশ্নোত্তর পর্বে আলোচনা করেন সিনিয়র সহ-সভাপতি কবি মুহাম্মদ সামাদ ও ঝুনা চৌধুরী। সে সময় ছিলেন আহমেদ গিয়াস, সাংগঠনিক সম্পাদক আজহারুল হক আজাদ এবং অন্যরা।
সংগঠনের সভাপতি গোলাম কুদ্দুস জানান, ১৩ ডিসেম্বর বিকেল ৪টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে উৎসবের উদ্বোধন করবেন অভিনেত্রী ফেরদৌসী মজুমদার। কেন্দ্রীয়ভাবে ঢাকার ৯টি মঞ্চে একক ও দলীয় সংগীত, নাটক, নৃত্য, একক ও দলীয় আবৃত্তি, শিশু সংগঠনের পরিবেশনা ও স্মৃতিচারণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। ৯টি বিজয় মঞ্চে এসব অনুষ্ঠান শুরু হবে বিকেল ৪টা থেকে।
ঢাকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ১৩ থেকে ১৬ ডিসেম্বর, ধানমন্ডির রবীন্দ্র সরোবর মঞ্চে ১৪ থেকে ১৬ ডিসেম্বর, রায়ের বাজার বুদ্ধিজীবী স্মৃতিস্তম্ভে ১৪ থেকে ১৬ ডিসেম্বর, মিরপুর ৬ নম্বর মুকুল ফৌজ মাঠে ১৫ থেকে ১৬ ডিসেম্বর, দনিয়া মাসুদ মঞ্চে ১৪ থেকে ১৬ ডিসেম্বর, ভিক্টোরিয়া পার্কে ১৯ থেকে ২০ ডিসেম্বর, মতিঝিল টিঅ্যান্ডটি কলোনি মাঠে ১৬ ডিসেম্বর, উত্তরা বঙ্গবন্ধু মুক্তমঞ্চে ১৫ ডিসেম্বর ও পূর্বাচল জয় বাংলা স্কয়ারে ১৬ ডিসেম্বর বিজয় উৎসবের অনুষ্ঠান চলবে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।

এছাড়া, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সহযোগিতায় বাংলাদেশ আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদ ১৫ ও ১৬ ডিসেম্বর কলকাতায় বাংলাদেশ ডেপুটি হাইকমিশন, ১৭ ডিসেম্বর বেনাপোল ও যশোর এবং ২৩ ডিসেম্বর ঢাকার গুলশানে বিচারপতি শাহাবুদ্দিন পার্কে বিজয় উৎসব উপলক্ষে অনুষ্ঠান আয়োজন করেছে। ১৫০টির বেশি সংগঠনের ৩ হাজার ৫শ’র বেশি শিল্পী এবারের বিজয় উৎসবে অংশ নেবেন।
সংবাদ সম্মেলনে জোট নেতারা জানিয়েছেন, সাম্প্রদায়িক শক্তির উত্থান রোধ ও সম্প্র্রীতির বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য নিয়ে এবারের বিজয় উৎসব এবং আগামী বছরের জানুয়ারি থেকে দেশজুড়ে ‘সম্প্রীতি’র সংগ্রাম’ কর্মসূচি পালন করবে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট।
সংবাদ সম্মেলনে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ বলেন, করোনা ও রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে নাজুক বিশ্ব পরিস্থিতিতে পুরো জাতি যেমন ঐক্যবদ্ধভাবে মোকাবেলা করার কথা ছিল, তা না করে আগামী জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে কোন কোন রাজনৈতিক মহল পরিস্থিতির সকল দায় এককভাবে সরকারের উপর চাপিয়ে দিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করা এবং রাজনৈতিক ফায়দা লাভে তৎপর হয়েছে। এ অবস্থা কাম্য নয়।
জোটের সাধারণ সম্পাদক মো. আহ্কাম উল্লাহ্ বলেন, একাত্তরের ঘাতক-দালাল, পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ তার পরিবারের সদস্যদের হত্যাকারী, ৩ নভেম্বর ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে জাতীয় চার নেতার হত্যাকারী এবং ২১ আগস্ট শেখ হাসিনার ওপর গ্রেনেড হামলাকারী- সবাই একই বাংলাদেশবিরোধী অপশক্তি। তাদের সাথে কোনো আপস করা চলবে না।
সিনিয়র সহ-সভাপতি কবি মুহাম্মদ সামাদ বলেন, অগণতান্ত্রিকভাবে ক্ষমতা দখলকারী গোষ্ঠী বারবারই মুক্তিযুদ্ধের বিপরীতে পুরনো পাকিস্তানি ভাবাদর্শে বাংলাদেশকে পরিচালনা করার নীতি অপকৌশল নিয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় প্রগতিশীল উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তুলতে এই অপশক্তিকে আর প্রশ্রয় দেওয়া যাবে না।
বিজয় উৎসবের মধ্য দিয়ে সম্প্রীতির সংগ্রামে ধারাবাহিক কর্মসূচী আরও গতিশীল হবে বলেও আশা প্রকাশ করেন সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের নেতারা।
