সিনেমার তারকা অভিনেত্রী বিদ্যা সিনহা মিমের যাত্রা শুরু চ্যানেল আই থেকে। ২০০৭ সালে ‘লাক্স চ্যানেল আই সুপারস্টার’ এর মুকুট মাথায় ওঠার পর বদলে যায় এ অভিনেত্রীর জীবন। শুরুতে নাটকে অভিনয় করলেও ইমপ্রেস টেলিফিল্মের প্রযোজনায় নন্দিত কথা সাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের পরিচালনায় ‘আমার আছে জল’ মিমকে বড়পর্দায় নিয়মিত করে।
পরে সুপারস্টার শাকিব খানের সঙ্গে ‘আমার প্রাণের প্রিয়া’র মাধ্যমে সব শ্রেণির দর্শকের কাছে নজর কাড়েন এই তারকা। শুরু থেকে সব মাধ্যমেই সরব ছিলেন মিম। এই অভিনেত্রীকে ক্যারিয়ারের ১৫ বছরে মাথায় গেল ঈদে পাওয়া গেল নতুনভাবে। বলছি মিম অভিনীত সময়ের আলোচিত সিনেমা ‘পরাণ’। মিম নিজেও মনে করেন, তাকে নতুন করে জন্ম দিয়েছে ‘পরাণ’ সিনেমাটি!
মুক্তিপ্রাপ্ত ‘পরাণ’-এ দুর্দান্তভাবে ধরা দিয়েছেন বিদ্যা সিনহা মিম। গ্ল্যামার এর খোলস ভেঙে নতুনভাবে নিজেকে মেলে ধরেছেন তিনি। ছবিতে অনন্যা চরিত্রে দুর্দান্তভাবে নিজেকে তুলে ধরেছেন মিম। দর্শকরা বলছেন, পরাণ-এর অনন্যা চরিত্র দিয়ে নিজেকে অনন্য উচ্চতায় নিয়েছেন মিম।
মুক্তির একমাস হতে চলছে ‘পরাণ’-এর। ঢাকার সবগুলো সিনেপ্লেক্সে প্রতিদিনই হাউজফুল দিচ্ছে মিম অভিনীত রায়হান রাফী পরিচালিত ‘পরাণ’।
ছবির প্রযোজনা সংস্থা লাইভ টেকনোলজিস এর পরিচালক ইয়াসির আরাফাত জানান, বাজেটের তুলনায় ‘পরাণ’ কয়েকগুণ বেশি ব্যবসা করেছে, যা মন্দার বাজারে নজিরবিহীন! তিনি আরও বলেন, বাংলা সিনেমার ক্রান্তিকালে পরাণ-এর এই সাফল্যে সত্যিই উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।
‘পরাণ’-এর সাফল্যে মিমের বৃহস্পতি এখন তুঙ্গে। প্রতিদিনই হাজার হাজার মানুষের প্রশংসায় সিক্ত হচ্ছেন ‘তারকাঁটা’ ছবির এ অভিনেত্রী। চ্যানেল আই অনলাইনের সঙ্গে আলাপে মিম বলেন, পরাণ-এর কারণে লাখ লাখ মানুষ প্রতিনিয়ত আমাকে ভালোবাসা দিচ্ছে। সারাদেশে যদি মাল্টিপ্লেক্স বা সিনেপ্লেক্স থাকতো তাহলে দেশের সব মানুষ ‘পরাণ’ দেখতে পেত।
তিনি বলেন, প্রতিদিনই শত শত এসএমএস পাই মানুষের। লাইভে গেলে বিভিন্ন জেলা থেকে মানুষ ‘পরাণ’ দেখার জন্য মন্তব্য করেন। তারা সুন্দর পরিবেশ ও মাল্টিপ্লেক্সের অভাবে ‘পরাণ’ দেখতে পাচ্ছেন না। যেহেতু আমাদের হল সংকট তাই আমাদের এই সমস্যা ফেইস করতে হচ্ছে। শুধু দেশে নয়, বিদেশেও ‘পরাণ’ ব্যাপক আগ্রহ সৃষ্টি করেছে। অস্ট্রেলিয়ায় মুক্তির আগেই টিকেট সোল্ট আউট!
‘পরাণ’ দেখে অনেক দর্শকই বলেছেন, এই মিমকে আগে দেখেননি তারা। কেউ কেউ বলছেন, নতুন মিমের জন্ম হয়েছে। দর্শকের এই ভালোবাসা ছুঁয়ে গেছে মিমকেও। বলেন, এর আগে যে ছবিগুলো করেছি সেগুলো আলোচিত ছিল কিন্তু ‘পরাণ’-এর মতো ব্লকবাস্টার হিট ছিল না। মুক্তির একমাস হয়ে গেলেও এখনো হাউজফুল যাচ্ছে পরাণ। আমার ক্যারিয়ারে এটাই প্রথম। আমি মনে করি, বাংলা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতেও এই চিত্র অনেক বছর পর দেখা গেল।
যোগ করে মিম বলেন, ‘মানুষের কী পরিমাণ শুভেচ্ছাবার্তা যে পাচ্ছি, বলে শেষ করা যাবে না। যেখানেই যাচ্ছি, অনন্যার চরিত্রের প্রশংসা। মনে হচ্ছে পরাণকে ঘিরে সব জায়গায় উৎসব হচ্ছে। আমি পরিবার নিয়ে দেখতে গিয়েছিলাম। শো শেষে মায়ের বয়সী একজন এসে আমাকে জড়িয়ে ধরে আদর করেছেন। অভিনয়ের প্রশংসা করেছেন। আমার চোখে পানি চলে এসেছিল। এমন হাজারো দর্শকের প্রশংসায় সিক্ত আমি। বলতে পারেন, ‘পরাণ’ আমাকে সিনেমায় নতুন জীবন দিয়েছে। এর চেয়ে ভালো লাগা আর কিছু হতে পারে না।
মুক্তির চতুর্থ সপ্তাহে প্রায় ৫০টি সিনেমা হলে চলছে পরাণ। মিম ছাড়াও এতে অভিনয় করেন শরিফুল রাজ, ইয়াশ রোহান, নাসির উদ্দিন, শহিদুজ্জামান সেলিম, রোজি সিদ্দিকি, রাশেদ অপু। সিনেমা সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ঈদে মুক্তির পর থেকে পরাণ-এর যে জয়যাত্রা অব্যাহত, এতে অনেকেই নিশ্চিত সিনেমায় সুদিন ফিরে এসেছে। মিম মনে করেন, তিনি ইতিহাসের অংশ হয়ে থাকবেন। এটা তার ক্যারিয়ারের অন্যতম পাওয়া যা কখনও ভুলবেন না।