টুইটার এবং ইউটিউব থেকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে নিয়ে তৈরি ‘বিতর্কিত’ বিবিসির তথ্যচিত্র সরানো নিয়ে বিরুপ প্রতিক্রিয়া প্রকাশ করেছেন ভারতের বিরোধী দলীয় নেতারা।
তাদের মধ্যে কেউ কেউ টুইটারে একটি বিকল্প লিঙ্ক টুইট করেন যেখানে দুই পর্বের তথ্যচিত্রের কিছু অংশ দেখা যায়। ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভি এ তথ্য জানিয়েছে।
এনডিটিভি প্রতিবেদনে বিবিসির ওই আলোচিত তথ্যচিত্র ও বিভিন্নজনের মন্তব্যের ১০টি দিক তুলে ধরা হয়।
১.
বিবিসি ডকুমেন্টারি “ইন্ডিয়া: দ্য মোদি কোয়েশ্চেন”-এর উপর ভারত সরকারের নিষেধাজ্ঞা সম্পর্কে জানতে চাইলে দেশটির কংগ্রেসের সদস্য গৌরব বল্লভ সাংবাদিকদের বলেন, ভারত সরকারের একটি স্কিম আছে, যার নাম ‘ব্লক ইন ইন্ডিয়া’। সরকার এই মুহূর্তে কোন কঠিন প্রশ্নের মুখোমুখি হতে নারাজ। বিবিসির সদর দপ্তর যদি দিল্লিতে অবস্থিত হত, তাহলে হয়তো এতক্ষণে ইডি (এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট) সেখানেই থাকত।”
২.
তৃণমূল কংগ্রেসের সদস্য ডেরেক ওব্রায়েন তথ্যচিত্রটির ভিডিও লিঙ্ক টুইটারে শেয়ার করেছেন। লিঙ্কটিকে “সেন্সরশিপ” বলে অভিহিত করে ওব্রায়েন বলেন, “টুইটার তার আগের করা পোস্টটি সরিয়ে নিয়েছে, যা লক্ষাধিক ভিউ পেয়েছিল।”
৩.
সংসদে জোরালো মতামত প্রদানের জন্য পরিচিত তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র বিজেপি সরকারকে “নিরাপত্তাহীন” বলে অভিহিত করেছেন। সম্প্রতি একটি টুইট করে তিনি বলেন, “এটা লজ্জাজনক যে, বিশ্বের বৃহত্তম গণতন্ত্রের রাজা এবং প্রজারা এতটাই নিরাপত্তাহীন। দুঃখিত, সেন্সরশিপ গ্রহণ করার জন্য, বিশ্বের বৃহত্তম গণতন্ত্রের প্রতিনিধিত্ব করার জন্য তিনি নির্বাচিত হননি। এখানে লিঙ্কটি রয়েছে। যেকোনো সময় দেখতে পারেন।”
Sorry, Haven’t been elected to represent world’s largest democracy to accept censorship.
Here’s the link. Watch it while you can.
(Takes a while to buffer though) https://t.co/nZdfh9ekm1
— Mahua Moitra (@MahuaMoitra) January 22, 2023
৪.
শিব সেনার সদস্য প্রিয়াঙ্কা চতুর্বেদী, ভিপিএন এর যুগে বিবিসির তথ্যচিত্র নিষিদ্ধ করার জন্য আইএন্ডবি মন্ত্রণালয় দ্বারা বর্ণিত জরুরি ধারাগুলির অধীনে এই নিষেধাজ্ঞা কতটা প্রভাবশালী হবে তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। তিনি টুইটে বলেন, “তারা যত বেশি নিষেধাজ্ঞা জানাবে, তত বেশি মানুষ তা দেখতে আগ্রহী হবে।”
৫.
ভারতের কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী কিরেন রিজিজু টুইট করেছেন, “ভারতের কিছু লোক এখনও ঔপনিবেশিক নেশা কাটিয়ে উঠতে পারেনি, তারা বিবিসিকে ভারতের সুপ্রিম কোর্টের ঊর্ধ্বে মনে করে এবং তাদের নেতাদের খুশি করার জন্য দেশের মর্যাদা এবং ভাবমূর্তিকে যে কোনও মাত্রায় ক্ষুন্ন করতে পারে।”
৬.
“সংখ্যালঘু বিষয়ে ভারতের প্রতিটি সম্প্রদায় ইতিবাচকভাবে এগিয়ে যাচ্ছে। ভারতের অভ্যন্তরে বা বাইরে চালানো বিদ্বেষপূর্ণ প্রচারাভিযানের দ্বারা ভারতের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করা যাবে না,” ভারতের কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী কিরেন রিজিজু তার আরেকটি টুইটে একথা জানান।
৭.
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় (আইএন্ডবি) টুইটার এবং ইউটিউবকে বিবিসির তথ্যচিত্রের প্রথম পর্বটি ব্লক করতে বলেছে, যেখানে ২০০২ সালের গুজরাট দাঙ্গার কিছু দিক তদন্ত করার দাবি করা হয়েছে। সেই সময় প্রধানমন্ত্রী মোদি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন। এছাড়াও কেন্দ্র থেকে সিরিজটির প্রতি নিন্দা জানানো হয়।
৮.
“বিষয়টি একটি প্রোপাগান্ডার অংশ যা একটি কালো অধ্যায়কে ধাক্কা দেওয়ার জন্য নকশা করা হয়েছে। এখানে পক্ষপাতিত্ব , বস্তুনিষ্ঠতার অভাব এবং ঔপনিবেশিক মানসিকতা স্পষ্টভাবে দৃশ্যমান রয়েছে।” বলে জানিয়েছে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
৯.
৩০০ জনেরও বেশি প্রাক্তন বিচারক, আমলা এবং বিশিষ্ট নাগরিক বিবিসিকে নিন্দা জানিয়ে বলেছেন, “এটি ভারতের অতীত ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদের আদিরূপ।” এছাড়া ব্রিটিশ নাগরিক লর্ড রামি রেঞ্জার বলেছেন, “বিবিসি এক বিলিয়নেরও বেশি ভারতীয়দের ক্ষতি করছে।”
১০.
এই সপ্তাহের শুরুতে, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক নিজেকে সিরিজ থেকে দূরে সরিয়ে নেন। পাকিস্তানী বংশোদ্ভূত সাংসদ ইমরান হুসেন ব্রিটিশ পার্লামেন্টে বলেন, তিনি তার ভারতীয় প্রতিপক্ষের বৈশিষ্ট্যের সাথে একমত নন।
Indian Liberals are attacking PM Modi using BBC Documentary on Gujarat Riots. Pak origin UK MP Imran Hussain raised the issue.
Rishi Sunak- "I don't agree at all with the characterization".
Only Congress and Pakistan trusts BBC propaganda. pic.twitter.com/0eMH6hEjYK
— Ankur Singh (@iAnkurSingh) January 19, 2023