বাজারে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের দাম রীতিমত আগুন! ফলে ‘দিন আনে দিন খায়’ মানুষদের ক্রয় ক্ষমতা অনেকটা নাগালের বাইরে! এই অবস্থার জন্য একটি সিন্ডিকেটকে দায়ী করছেন সাধারণ মানুষ। খেটে খাওয়া এসব মানুষদের পক্ষে কথা বললেন রুপালী পর্দার চিত্রনায়ক বাপ্পী চৌধুরী।
এই নায়ক মনে করেন, সাধারণ মানুষের ভালোবাসায় তিনি আজ বাপ্পী চৌধুরী হতে পেরেছেন। এই মানুষরাই তার সিনেমার দর্শক। এ কারণে তিনি সবসময় আম জনতাদের নিয়ে ভাবেন।
চ্যানেল আই অনলাইনের সঙ্গে আলাপে বাপ্পী চৌধুরী বলেন, খেটে খাওয়া থেকে অবহেলিত এসব মানুষদের জন্য সবসময় কাজ করতে চাই। কিন্তু আমি একা সবাইকে ভালো রাখতে পারবো না। দেশের নীতি নির্ধারক যারা আছেন তাদেরও এসব ভাবতে হবে।
দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণ সিন্ডিকেট উল্লেখ করে বাপ্পী বলেন, যারা আজ সিন্ডিকেট করে সবকিছুর দাম বাড়াচ্ছে আমার মনে হয় তারা একসময় রাস্তায় থেকে তাদের সন্তানদের মানুষ করেছেন। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির ফলে নিজেদের উৎপাদিত চাল, আলু, ডিম, ইলিশের দামও বেড়েছে। এগুলো আমাদের উৎপাদিত পণ্য, ইমপোর্ট করতে হয় না; তবুও এগুলোর দাম লাগাম ছাড়া। এর মানে বুঝতে হবে এর মধ্যে কারচুপি আছে, সিন্ডিকেট আছে।
দেশের কিছু সুবিধাবাদী মানুষ যারা অল্পতে বড়লোক হতে চায়, তাদের জন্য দ্রব্যমূল্যের চড়া দাম বলে মনে করেন বাপ্পী। তিনি বলেন, এইসব মানুষদেরও সামনে এমন দিন আসবে যারা টাকা থাকলেও কিছু পাবে না। এমনও হতে পারে তাদের হাজার কোটি টাকা আছে, কিন্তু এমন রোগ হবে যেটার কোনো চিকিৎসা নেই। বেশি দূরের উদাহরণ দিচ্ছি না। করোনার মধ্যে মেহনতি মানুষ, শ্রমিক, কৃষক তারা কজন করোনাতে মারা গেছেন? আসলে সিন্ডিকেট করে যারা জিনিস পত্রের দাম বাড়াচ্ছেন, তাদের নিজেদের বিবেকের কাছে প্রশ্ন করা উচিত। কারণ বিবেকই সবচেয়ে বড় আলাদত।
শুধু দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নয়, বাপ্পী কথা প্রসঙ্গে আলাপ করেন শহরের ট্র্যাফিক জ্যাম নিয়েও। যেমনটা বললেন, “আমার কাছে আরও মনে হয় ঢাকা শহরের ট্র্যাফিক সিস্টেমও অনেক বাজে। এতে করে দৈনিক জীবন থেকে বহু সময় ও স্বপ্ন শেষ হয়ে যাচ্ছে। ভিআইপি মুভমেন্টের জন্য রাস্তায় যদি জ্যাম হয়, তাহলে সেইসব ভিআইপিদের চলাচলের জন্য আলাদা এলিভেটেডওয়ে বানানো উচিত। নইলে আমরা আপামর জনতারা জ্যামে ভীষণ কষ্ট পাচ্ছি।”
বাপ্পী জানান, তিনি প্রতিনিয়ত চারপাশের এসব সমস্যা নিয়ে ভাবেন। প্রায়ই রাতে বের হয়ে মানুষ দেখেন। তাদের সঙ্গে কথা বলেন। তিনি জানান, সাধারণ মানুষের কষ্টে তিনি ব্যথিত হন। রিক্সাচালকের রিক্সা চালিয়ে দেখেন তিনি কতটা শ্রম দেন, মাঝেমধ্যে নিরবে কাঁদেন। ভালোবাসার রঙ, সুলতানা বিবিয়ানা খ্যাত এই নায়ক বলেন, দেশ যারা চালান তাদের বলবো আপনারা এই মানুষের সাথে মিশে দেখেন তারা কেমন অবস্থায় আছে।
তাহলে ভবিষ্যতে রাজনীতিতে আসার ইচ্ছে আছে? জানতে চাইলে বাপ্পী বলেন, আমি সাধারণ মানুষের জন্য কাজ করতে চাই। সামাজিক বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে জড়িতে থাকতে চাই। ইচ্ছে আছে এনজিও তৈরির। আসলে সিনেমা ইন্ডাস্ট্রিতে যে রাজনীতি হয় সেই রাজনীতিতে আমি ফেইল করেছি। তাই আমার মনে হয় জাতীয় রাজনীতিতে গিয়ে আমি কিছু করতে পারবো না। আমি আসলে সরাসরি রাজনীতিতে জড়িত থাকতে চাই না, কিন্তু সাধারণ মানুষের স্বেচ্ছাসেবক হতে চাই। আমার যদি মুকেশ আম্বানির মতো টাকা থাকতো, সেই টাকা দেশের সাধারণ মানুষদের মধ্যে বিলিয়ে দিতাম।