বল দখল, আক্রমণ কিংবা গোলে শট— মালদ্বীপ অনূর্ধ্ব-১৭ ফুটবল দলের বিপক্ষে সবদিকে দাপট দেখিয়ে ৫-০ ব্যবধানের বড় জয় তুলল বাংলাদেশ। মিরাজুল ইসলামের হ্যাটট্রিকের দিনে একটি করে গোল পেয়েছেন নাজমুল হুদা ফয়সাল ও মুর্শিদ আলী।
শ্রীলঙ্কার কলম্বো রেসকোর্স ইন্টারন্যাশনাল স্টেডিয়ামে এদিন ম্যাচের পুরোটা সময় দাপট দেখায় লাল-সবুজের দল। ‘এ’ গ্রুপে টানা দুই জয়ে যুবারা ৬ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে সেমিফাইনালে উঠেছে। ১২ সেপ্টেম্বর ‘বি’ গ্রুপের রানার্সআপ দলের সঙ্গে শেষ চারের লড়াইয়ে খেলবে বাংলাদেশ।
বাংলাদেশের মুহুর্মূহু আক্রমণে এলোমেলো থাকে প্রতিপক্ষের রক্ষণ। গোল মিসের মহড়ায় না মাতলে মালদ্বীপকে আরও বড় ব্যবধানে হারাতে পারত বাংলাদেশ। ৬০ শতাংশ বল দখলে রেখে ৩০ শট নেয় লাল-সবুজরা। প্রতিপক্ষ গোলরক্ষক পরীক্ষায় পড়েন ১৩টি শটে। বিপরীতে বাংলাদেশ গোলরক্ষক মোহাম্মদ আসিফের বেকার সময়ই কাটে। মালদ্বীপ তিনটি শট নিয়ে লক্ষ্যে রাখতে পারে মোটে একটি।
প্রথম মিনিট থেকেই চেপে ধরা বাংলাদেশের সাফল্য আসে ম্যাচের চার মিনিটের মাথায়। মিরাজুল ইসলাম ক্ষিপ্রতায় বল নিয়ে ঢুকে পড়েন মালদ্বীপের বক্সে। সেখানে দুই ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে বক্সের ভেতরে থাকা নাজমুলের কাছে বল বাড়ান। দারুণ এক প্লেসমেন্ট শটে বল জালে জড়ান নাজমুল।
বাংলাদেশের দ্বিতীয় গোলটি আসে ৩৭ মিনিটে। রক্ষণ থেকে লম্বা পাস বাড়ানো হয় মুর্শিদ আলীর উদ্দেশ্যে। সেই পাসে বলের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে দারুণ কাটাকুটিতে ডি-বক্সে ঢুকে যান এ ফরোয়ার্ড। বক্সের বাইরে প্রথমে পড়ে গেলেও দারুণ এক শটে লক্ষ্যভেদ করেন মুর্শিদ।
প্রথমার্ধের শেষ মিনিটে আরেকবার বল জালে জড়িয়েছিল বাংলাদেশ। রাতুলের লম্বা থ্রো ধরে দারুণ এক শটে বল জালে জড়ান মিরাজুল ইসলাম। কিন্তু অফসাইডের পতাকা উঠলে ২ গোলে এগিয়ে থেকে বিরতিতে যায় লাল-সবুজের দল। অবশ্য আরও কয়েকটি গোল হতে পারত প্রথমার্ধে। ১৫ মিনিটে সহজ সুযোগ হাতছাড়া করেন মুর্শিদ আলী। বক্সে গোলরক্ষককে একা পেয়েও বল জালে জড়াতে ব্যর্থ হন।
বিরতির পর আক্রমণের ধার আরও বাড়িয়ে দেয় বাংলাদেশ। প্রতিপক্ষের রক্ষণ ছিড়েকুটেও তখন গোল আসছিল না। ম্যাচের ৭২ মিনিটে সেই ডেডলক ভাঙা হয়ে যেত। কিন্তু সেই প্রচেষ্টাও নষ্ট হয়। ৭৫ মিনিটে মিরাজুল ইসলাম আনেন তৃতীয় গোলটি।
দুই মিনিট পর স্কোর ৪-০ করে ফেলেন মিরাজুল। ৭৭ মিনিটে তার ডান পায়ের জোড়াল শটে পরাস্ত হন প্রতিপক্ষ গোলরক্ষক। ম্যাচের যোগ করা সময়ের শেষদিকে স্কোরলাইন ৫-০ করে বাংলাদেশ। মিরাজুলের হ্যাটট্রিকের পাশাপাশি বাংলাদেশ পায় বড় জয়।
ম্যাচ শেষে মিরাজুলও ভেসেছেন প্রশংসায়। সামনে আরও ভালো করার আশা শুনিয়ে ক্রেডিট দিয়েছেন সতীর্থদেরও, ‘খুব ভালো লাগছে। সতীর্থদের সাহায্যে গোল পেয়েছি। আসলে কতটা ভালো খেলতে পারছি তা দর্শক-সমর্থকদের উপর ছেড়ে দিচ্ছি। পরের ম্যাচেও দেশকে আরও ভালো কিছু এনে দেয়ার চেষ্টা করব।’