চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

ঢাকার থ্রিলারে বাড়ছে কলকাতার দর্শকের মুগ্ধতা

করোনাকালীন দীর্ঘ সময়ে দর্শকদের কাছে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে ওটিটি প্লাটফর্ম। শুধু তাই নয়, কোনো কোনো ক্ষেত্রে বড়পর্দার জনপ্রিয়তাকেও ছাড়িয়ে যাচ্ছে এই মাধ্যমটি। আর তাইতো বদলে যাওয়া এই বিনোদন মাধ্যমের সঙ্গে পাল্লা দিতে নিজেদের ব্যবসায়িক পরিকল্পনা পাল্টাচ্ছে বিভিন্ন প্রোডাকশন হাউজগুলো।

যে ধাক্কা বাংলা কন্টেন্টেও দৃশ্যমান। এরইমধ্যে ‘চরকি’ সহ একাধিক নতুন প্লাটফর্ম আশা জাগানিয়া অবস্থান তৈরী করে ফেলেছে, বেশকিছু আছে পাইপলাইনে।

ওটিটির সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো, এর দর্শক শ্রেণি শুধু দেশেই সীমাবদ্ধ নয়। ভালো এবং যুগপোযোগি কন্টেন্ট হলে দেশের গণ্ডিও ছাড়াতে পারে। তেমনি কিছু শক্তিশালী কন্টেন্ট মহানগর, তাকদীর এবং বলি।

ইতিমধ্যে কন্টেন্টগুলো সাড়া ফেলেছে ওটিটিতে। শুধু বাংলাদেশি দর্শকদের মাঝে নয়, কলকাতার দর্শকদের মাঝেও সমান জনপ্রিয়তা পাচ্ছে কন্টেন্টগুলো। বাংলাদেশি কন্টেন্ট নিয়ে কলকাতার দর্শকদের ধারণাও পাল্টে দিতে সক্ষম হয়েছে এই এই থ্রিলার সিরিজগুলো। সম্প্রতি বাংলাদেশি কন্টেন্ট নিয়ে কলকাতার দর্শকের আলোচনা, পর্যবেক্ষণ অনন্ত সেটাই প্রমাণ করে।

এক্ষেত্রে সম্প্রতি বাংলাদেশি কন্টেন্ট নিয়ে সুদীপ্ত ঘোষ নামের কলকাতার এক দর্শকের পর্যবেক্ষণ বেশ আলোচিত হয়েছে। বাংলাদেশি কন্টেন্ট নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেয়া তার স্ট্যাটাসটি শেয়ার করেছেন নির্মাতা আশফাক নিপুণ, অভিনেতা মুস্তাফিজ নূর, রানা মণ্ডল সহ অনেকে।

সেখানে তিনি লিখেছেন, ‘বাংলাদেশের নাটক (মঞ্চ) বেশকিছু দেখেছি একসময়। টিভি নাটকগুলোও দেখতাম একসময়। যথেষ্টই উচ্চমানের। কিন্তু বাংলাদেশি সিনেমাগুলো একেবারেই মন ছুঁতো না, বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই। হইচইতে হঠাৎ করে বেশ ক’টা বাংলাদেশি সিরিজ নজরে এলো, থ্রিলার। যেহেতু বাংলাদেশি সিনেমা আমার একেবারেই ভালো লাগত না তাই প্রথম দিকে দেখিনি, তারপর একবার ভাবলাম যে দেখাই যাক না! ‘মহানগর’ দেখলাম এবং স্তম্ভিত, স্তব্ধ হয়ে গেলাম! কী দেখছি। এমন উচ্চমানের, এত সংযত, এত জীবন্ত অভিনয় কখনো সম্ভব হতে পারে? তাও প্রত্যেকের? যেমন চিত্রনাট্য, যেমন অভিনয়, তেমনই মেকিং, তেমনই ব্যাকগ্রাউন্ড স্কোর। তারপর তকদীর! না, এটা নিয়ে একটা শব্দও বলব না। কারণ চঞ্চল চৌধুরী বা সোহেল রানাকে নিয়ে একটা শব্দ বলবার যোগ্যতা আমি রাখিনা। তারপর ‘বলি’ এবং অবশেষে ‘মানি হানি’। এইটুকু বলতে বাধ্য হচ্ছি, এখানকার (কলকাতা) থ্রিলারগুলোর তুলনায় এগুলো কয়েক কোটি মাইল এগিয়ে। যারা নিয়মিত সিরিজ দেখেন, তারা এগুলো অতি অবশ্যই দেখবেন।’

শুধু হইচই নয়, ভারতীয় প্লাটফর্ম জি-ফাইভের বদৌলতে আরো কিছু বাংলাদেশি কন্টেন্ট দারুণ প্রশংসা পেয়েছে কলকাতার দর্শকের কাছে। এরমধ্যে আছে মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর ‘লেডিস এন্ড জেন্টলম্যান’ এবং তানিম নূর ও কৃষ্ণেন্দু চ্যাটার্জীর যৌথ পরিচালনায় থ্রিলার সিরিজ ‘কন্ট্রাক্ট’।

এছাড়া ‘রবীন্দ্রনাথ এখানে কখনও খেতে আসেননি’ নামে বাংলাদেশি লেখক মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিনের লেখা একই নামের উপন্যাস অবলম্বনে সৃজিত এবছর নির্মাণ করেছেন ওয়েব সিরিজ। যা এই বছর ঢাকা ও কলকাতার দর্শকের মধ্যে বেশ আলোচনার জন্ম দেয়।

বর্তমানে নির্মাতা, অভিনেতারাও সিনেমার চেয়ে ওটিটিতে কাজ করতেই বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। নিয়মিত ওটিটিতে কাজ করা বেশ কয়েকজন নির্মাতা, অভিনেতার সাথে কথা বলে জানা যায়, ভিন্ন ধরনের গল্পে কাজের সুযোগ যেমন ওটিটিতে বেশি, তেমনি বড় পরিসরে কাজ করা যায়। গল্পে যেটা বলতে চাওয়া হয় সেই সুযোগ থাকে। স্বাধীনতাও রয়েছে। আর এসব কারণেই কন্টেন্ট এর মান যেমন ঠিক থাকছে, তেমনি দেশ ও দেশের বাইরের দর্শকরাও আন্তর্জাতিক কন্টেন্ট উপভোগের স্বাদ নিতে পারছেন!