টেস্ট ক্রিকেটে ১৪৫ বছরের ইতিহাসে এক ইনিংসে ছয়জন ব্যাটারের শূন্য রানে আউট হওয়ার নজির রয়েছে কেবল সাতবার। এর মধ্যে তিনবারই সেই লজ্জার সামনে পড়ল বাংলাদেশ।
অ্যান্টিগা টেস্টের প্রথম দিনে ক্যারিবীয়দের বিপক্ষে ১০৩ রানে অল আউট হয় সাকিব আল হাসানের দল। টাইগার অধিনায়ক নিজে ৫১ রানের ইনিংস খেললেও বাকিদের কাছ থেকে পাননি সমর্থন। ছয়জন ব্যাটার কোনো রান না করেই ড্রেসিং রুমে ফেরেন।
১৯৮০ সালে করাচি টেস্ট এক ইনিংসে ৬ ব্যাটারের শূন্য রানে আউট হওয়ার সাক্ষী হয়। পাকিস্তান প্রথমবার এই লজ্জার রেকর্ড গড়ে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বোলারদের তোপের মুখে পড়ে প্রথম ইনিংসে ১২৮ রানে অলআউট হলেও তারা ম্যাচটি ড্র করতে পেরেছিল।
১৯৯৬ সালে আহমেদাবাদ টেস্টে ভারতের বিপক্ষে জয়ের জন্য ১৭০ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ১০৫ রানে গুটিয়ে যায় সাউথ আফ্রিকা। দলটির ছয় ব্যাটারই করতে পারেনি কোনো রান।
তৃতীয়বার এমন লজ্জার মুখে পড়ে বাংলাদেশ। ২০০২ সালে ঢাকা টেস্টে ইনিংস ও ৩১০ রানে হারে স্বাগতিকরা। দ্বিতীয় ইনিংসে ৩ উইকেটে ৮০ রান থেকে ব্যাটিং ধসের মুখে পড়ে ৮৭ রানে অলআউট হয়, শূন্য রানে ফেরেন ৬ ব্যাটার।
এরপর ২০১৪ সালে ম্যানচেস্টার টেস্টে আগে ব্যাট করতে নামা ভারতের ৬ ব্যাটার শূন্য রানে আউট হন। অলআউট হওয়ার আগে সফরকারীরা করেছিল ১৫২ রান। ইনিংস ও ৫৪ রানে হারে টিম ইন্ডিয়া। এই সিরিজে ভারত ৩-১ ব্যবধানে হারের পর টেস্ট অধিনায়কত্ব ছেড়ে দেন মহেন্দ্র সিং ধোনি।
২০১৮ সালে দুবাই টেস্টে পাকিস্তানের বিপক্ষে ইনিংস ও ১৬ রানে হারে নিউজিল্যান্ড। প্রথম ইনিংসে ৯০ রানে গুটিয়ে গিয়ে ফলোঅনে পড়েছিল কিউইরা। তখন দলটির ৬ ব্যাটার রানের মুখ দেখেননি।
ষষ্ঠ নজিরটি বেশিদিন আগের নয়। গত মার্চে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে মিরপুর টেস্টে বাংলাদেশের ৬ ব্যাটার শূন্য রানে ক্রিজ ছাড়েন। তবু মুশফিকুর রহিমের অপরাজিত ১৭৫ ও লিটন দাসের ১৪১ রানের ইনিংসে ভর করে প্রথম ইনিংসে ৩৬৫ রান করেছিল স্বাগতিকরা। যদিও দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিং ব্যর্থতার খেসারত দিয়ে মুমিনুল হকের নেতৃত্বাধীন দল ১০ উইকেটে হারে।
এরপরই গতকাল অ্যান্টিগা টেস্টে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ইতিহাসে প্রথম দল হিসেবে পর পর দুই টেস্টে ছয় জন ব্যাটারের কোনো রান না করেই ফিরে যাওয়ার লজ্জাজনক কাণ্ড ঘটাল টাইগাররা।
কেমার রোচের বলে মাহমুদুল হাসান জয় প্রথম বলেই আউট হন। এরপর নাজমুল হোসেন শান্তর পরের ওভারে রোচের সিমিং ডেলিভারিতে কোনো রান না করেই পরিষ্কার বোল্ড হয়ে ফেরেন। মুমিনুল হক দ্বিতীয় স্লিপে ক্যাচ দিয়ে, নুরুল হাসান সোহান শট না দিতে গিয়ে এলবিডব্লিউ হয়ে মাঠ ছাড়েন। মুস্তাফিজুর রহমান ও খালেদ আহমেদও রান যোগ করতে ব্যর্থ হন।