আগামী ১-৯ এপ্রিল মেয়েদের ফুটবলের ফিফা উইন্ডো। এ সময়ের মাঝে বাফুফে মিয়ানমারে গিয়ে বাংলাদেশ জাতীয় নারী ফুটবল দলের ম্যাচের পরিকল্পনা করছে। দেশটির অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক অস্থিরতার পাশাপাশি রোহিঙ্গা ও সীমান্ত ইস্যুতে দুই দেশের মধ্যকার পরিস্থিতির কারণে সফরটি নিয়ে রয়েছে অনিশ্চয়তা। এবার সফরটি বাতিলের শঙ্কার মুখে পড়েছে।
মিয়ানমারের বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় এই মুহূর্তে ম্যাচ আয়োজন না করার পরামর্শ দিয়েছে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাফুফের সাধারণ সম্পাদক ইমরান হোসেন তুষার।
গণমাধ্যমকে তুষার বলেন, ‘যখন মিয়ানমার থেকে আমন্ত্রণ পেয়েছি, তাৎক্ষণিকভাবে আমরা মেয়েদের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটা সুপারিশপত্র চেয়েছিলাম। আমরা আজকে একটা চিঠি পেয়েছি। তাতে উল্লেখ রয়েছে, আমরা এখন না গিয়ে পরবর্তীতে যেন ম্যাচের সূচি পুনরায় নির্ধারণ করি।’
‘আমরা মিয়ানমারের সাথে কথা বলছি। আমরা এখনই যাচ্ছি না এরকম কিছু বলবো না। নিরাপত্তার বিষয়ে আরও তথ্য পাওয়া যায় কিনা, সেই বিষয়ে কথা বলবো।’
হিমালয়ের দেশে ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে আয়োজিত হয় মেয়েদের সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ। তারপর ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারির ১৩ থেকে ২৫ তারিখের মধ্যে ফিফা উইন্ডোতে ফুটবল কন্যাদের দুটি আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচের সূচি ছিল। লাল-সবুজ জার্সিতে সাবিনা-মারিয়াদের মাঠে নামাই হয়নি সেসময়। বছরের প্রথম উইন্ডোতেই খেলার সুযোগটা হাতছাড়া করে বাফুফে।এপ্রিলে প্যারিস অলিম্পিকের জন্য মেয়েদের এশিয়া অঞ্চলের বাছাইপর্বে খেলার কথা ছিল। আর্থিক সংকটের কারণ দেখিয়ে বাফুফে দল পাঠায়নি।
দীর্ঘ ১০ মাস পর আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলা দেশের মাটিতে নেপালের সঙ্গে খেলতে নেমে ড্র করে। পরেরটিতে টাইব্রেকারে হেরে বসে। এশিয়ান গেমসে জাপান ও ভিয়েতনামের মতো শক্তিশালী দলের বিপক্ষে খেলে বড় ব্যবধানে হারে। নেপালের সঙ্গে আবারো ফলাফল ছিল ড্র। কমলাপুরে সিঙ্গাপুরের সঙ্গে দুই প্রীতি ম্যাচে বড় জয়ের পর আবারো লম্বা বিরতির ফাঁদে সাবিনার দল। মিয়ানমার সফরে না গেলে সেই বিরতি আরও দীর্ঘ হবে।
অক্টোবরে আসন্ন সাফের আসর শুরু হতে এখনো বাকি সাত মাস। এই সময়ের মধ্যে ঠিকঠাক প্রস্তুতি নিতে না পারলে ট্রফি আবারো নিজেদের করে নেয়াটা কঠিন হবে বলেই সম্প্রতি চ্যানেল আই অনলাইনকে একান্ত আলাপনে জানিয়েছিলেন ফুটবল কন্যাদের সাবেক কোচ গোলাম রব্বানি ছোটন। তার কোচিংয়েই ২০২২ সালে সাবিনা-মারিয়ারা জিতেছিল সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা।
সেই সাক্ষাৎকারে সাফের আসন্ন আসরে ফুটবল কন্যাদের প্রস্তুতির ঘাটতির কথা উল্লেখ করেন ছোটন। পাশাপাশি শক্তিশালী প্রতিপক্ষ ভারত ও নেপাল জোর প্রস্তুতি নিচ্ছে জানিয়ে বলেছিলেন, ‘এবার সাফের শিরোপা ধরে রাখাটা কঠিন হবে। ভারত ও নেপাল কিন্তু কঠিন প্রতিপক্ষ হিসেবে থেকেই গেছে। তারা বেশ ভালো প্রস্তুতি নিচ্ছে। আমরা সেই তুলনায় ম্যাচ কম খেলছি। ভারতের মেয়েরা কিন্তু কসোভোর মতো শক্ত দলের সাথেও খেলেছে। তাদের ফুটবলারদের কেউ কেউ দেশের বাইরে লিগ খেলছে।’