পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, বাংলাদেশ কোনো দেশের লেজুড় নয়। আমরা চীনেরও লেজুড় নই এবং চীনের দিকে কখনো ঝুঁকেও পড়েনি। কারণ ঢাকা একটি ‘ভারসাম্যপূর্ণ ও স্বাধীন’ পররাষ্ট্রনীতি বজায় রেখে চলে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী আজ শনিবার ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে ডিপ্লোম্যাটিক রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ডিক্যাব) সদস্যদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এই কথা বলেন।
তিনি বলেন, কিছু লোক মনে করে আমরা চীনের দিকে ঝুঁকছি, কিন্তু আমরা কারও দিকে ঝুঁকছি না। তিনি চীনা ঋণের ফাঁদে পড়ার কোনো ধরণের আশংকা নাকচ করে দিয়ে বলেন, এটি একটি ভুল ধারণা। কোনো কোনো পণ্ডিত এমন কথা বলেন। অনেকে এটা বিশ্বাস করে, বিশেষ করে কিছু বিদেশি প্রতিষ্ঠান। কোনো অবস্থাতেই আমরা ‘চীনা ঋণের ফাঁদে’ পড়ব না। বিদেশি ঋণ নেওয়ার ক্ষেত্রে আমরা খুবই বিচক্ষণ ও সতর্ক। আমরা অপ্রয়োজনীয় ঋণ নেই না।
তিনি আরও বলেন, আইএমএফের মতে একটি দেশ ঋণের ফাঁদে পড়ার ঝুঁকির সম্মুখীন হতে পারে যদি এর মোট বৈদেশিক ঋণের ৫৫ শতাংশের বেশি একটি একক উৎস বা দেশ থেকে আসে। বাংলাদেশের জিডিপিতে বৈদেশিক ঋণের অংশ মাত্র ১৩.৭৮ শতাংশ, যার মধ্যে ৬১ শতাংশ এডিবি, আইএমএফ এবং বিশ্বব্যাংকের মতো আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো সরবরাহ করেছে এবং জাপান ১৭ শতাংশ নিয়ে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ একক দেশের ঋণ প্রদানকারী হয়ে উঠেছে। চীন থেকে বাংলাদেশ ৩.৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ঋণ নিয়েছে, যা মোট জিডিপির ০.৭৫ শতাংশ।
মোমেন বলেন, জনকল্যাণের মাধ্যমে দেশের উন্নয়ন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে বাংলাদেশ অব্যাহতভাবে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক বৈদেশিক নীতি, ‘সকলের প্রতি বন্ধুত্ব, কারও প্রতি বিদ্বেষ নয়’ অনুসরণ করে চলেছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, প্রতিবেশী ভারতের সঙ্গে ঢাকার সম্পর্ককে ‘সুদৃঢ়’ এবং আমরা ভারতের সঙ্গে আমাদের সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটি সোনালী অধ্যায়ে রয়েছি। ঢাকা-ওয়াশিংটন সম্পর্কও ভালো এবং যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের মতে, ওয়াশিংটন বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়ন করতে চায়। ঢাকা সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও কাতারসহ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রাখছে। সব দেশের সঙ্গে আমাদের ভালো সম্পর্ক রয়েছে। সেজন্য জাতিসংঘে যে কোনো নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলে আমরা জয়ী হই।