চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

ভারতের নাকের ডগা থেকে ১ উইকেটের জয় ছিনিয়ে নিল বাংলাদেশ

দারুণ বোলিংয়ে জয়ের যে সম্ভাবনা জেগেছিল তা বিষাদে রূপ নিতে বসেছিল ১৩৬ রানে ৯ উইকেট হারিয়ে। জয় থেকে ৫১ রানের দূরত্ব, হাতে একটি মাত্র উইকেট। অনেক দর্শকও মাঠ ছেড়ে তখন বাড়ির পথে। কিন্তু অসম্ভবকে সম্ভব করে বাংলাদেশকে জিতিয়েছেন মেহেদী হাসান মিরাজ ও মোস্তাফিজুর রহমান মিলে।

৭ বছর পর ওয়ানডেতে ভারতকে হারিয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ। মিরাজ ৩৮ ও মোস্তাফিজ ১০ রানে থাকেন অপরাজিত। গড়ে দেন ইতিহাস।

মিরপুরে ১ উইকেটের জয়ে তিন ম্যাচের সিরিজে ১-০তে লিড নিল বাংলাদেশ। মাঝের ওভারগুলোতে তালগোল পাকিয়ে দেড়শর আগেই অলআউট হওয়ার শঙ্কায় পড়েছিল লিটন দাসের দল।

ভারত: ১৮৬/১০ (৪১.২ ওভার), বাংলাদেশ: ১৮৭/৯ (৪৬ ওভার)

১৮৭ রানের সহজ লক্ষ্য কঠিন হয়ে যায় লোয়ার মিডলঅর্ডার ব্যাটারদের ব্যর্থতায়। মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, মুশফিকুর রহিম, আফিফ হোসেন ধ্রুব দ্রুত বিদায় নিতেই ম্যাচ হেলে যায় ভারতের দিকে।

তার আগে বাংলাদেশের জয়ের পাল্লাই ভারী ছিল। বিরাট কোহলির দুর্দান্ত ক্যাচে সাকিব আল হাসান সাজঘরে ফেরার পর ম্যাচের চিত্র বদলাতে থাকে। দারুণ বোলিংয়ের পর ব্যাট হাতেও পথ দেখাচ্ছিলেন সাকিব। দলের রান একশর কাছে নিয়ে সাজঘরে ফেরেন বাঁহাতি ব্যাটার।

ওয়াশিংটন সুন্দরের বলে কাভার ড্রাইভ করেছিলেন সাকিব। শূন্যে ঝাঁপিয়ে ক্যাচ লুফে নেন কোহলি। সাকিবের আগে সাজঘরে ফেরেন লিটন দাস। চতুর্থ উইকেট জুটিতে তারা যোগ করেন ৪৮ রান। ৬৩ বলে ৪১ রান করে লিটন আউট হন।

ব্যাটিংয়ে শুরুটা ভালো হয়নি বাংলাদেশের। ইনিংসের প্রথম বলেই দীপক চাহারকে উইকেট দেন নাজমুল হোসেন শান্ত। দলীয় ২৬ রানে মোহাম্মদ সিরাজের বলে আউট হন আরেক ওপেনার এনামুল হক বিজয়। তার ব্যাট থেকে আসে ২৯ বলে ১৪ রান।

শেষটা ছিল বড় হতাশার। ১৪ রান করে মাহমুদউল্লাহ ফেরার পরের বলেই মুশফিকুর রহিম উইকেট বিলিয়ে আসেন। তার ব্যাট থেকে আসে ১৮ রান। আফিফ ৬ রান করে ফিরলে জয়ের আশা ক্ষীণ হতে থাকে বাংলাদেশের।

ইবাদত হোসেন অদ্ভুতভাবে পা স্টাম্পে লাগিয়ে হিট উইকেট হন রানের খাতা খোলার আগেই। পরের ওভারে হাসান মাহমুদও আউট হন রানের খাতা না খুলেই। ৮ রানের মধ্যে বাংলাদেশ হারায় ৫ উইকেট।

১৩৬ রানে ৯ উইকেট হারানোর পর হারের ব্যবধান কমাতে থাকেন মিরাজ। স্ট্রাইক ধরে রেখে আগাতে থাকেন জয়ের নিশানায়। শেষে মোস্তাফিজও দেখিয়েছেন ব্যাটিং বীরত্ব। দুজনের অসামান্য লড়াইয়েরই জয় হয়েছে মিরপুরে।

মোহাম্মদ সিরাজ তিনটি উইকেট নেন। কুলদীপ সেন ও ওয়াশিংটন সুন্দর দুটি করে উইকেট নেন। শার্দূল ঠাকুর ও চাহার নেন একটি করে উইকেট।

দুপুরে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে ভারত ৪১.২ ওভারে ১৮৬ রানে গুটিয়ে যায়। ৭০ বলে ৭৩ রানের ইনিংস খেলেন লোকেশ রাহুল। অধিনায়ক রোহিত ২৭, শ্রেয়াস আয়ার ২৪, ওয়াশিংটন সুন্দর ১৯ রান করেন। বাকি কেউ ছুঁতে পারেননি দুই অঙ্ক। বিরাট কোহলির ব্যাট থেকে আসে ৯ রান।

ঘূর্ণি বৈচিত্র্যে ভারতকে চাপে রাখেন সাকিব। দুই ওভারে দেখা পান জোড়া শিকারের। ভারতের বিপক্ষে ওয়ানডেতে প্রথমবার নেন ৫ উইকেট। ১০ ওভারে ৩৬ রান খরচ করেন। যার মধ্যে মেডেন ওভার দুটি।

পেসারদের মধ্যে ইবাদতই কেবল পেয়েছেন সাফল্য। ৮.২ ওভারে ৪৭ রান খরচায় ৪ উইকেট শিকার করে পুষিয়ে দিয়েছেন অবশ্য।

মোস্তাফিজুর রহমান উইকেট না পেলেও রান দেয়ায় ছিলেন কিপটে। ৭ ওভার বোলিং করে খরচ করেন ১৯ রান। হাসান মাহমুদ ৭ ওভারে দেন ৪০ রান। শেখর ধাওয়ানকে বোল্ড করে ম্যাচের শুরুতেই ব্রেক থ্রু আনেন মেহেদী হাসান মিরাজ। অফস্পিনার ৯ ওভারে দেন ৪৩ রান।