বাণিজ্যিক সিনেমায় অনুদান দেয়া, প্রামাণ্যচিত্রকে অনুদান না দেয়া এবং স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রে অনুদানের সংখ্যা কমিয়ে দেয়াসহ অনুদান প্রাপ্তিতে রাজনৈতিক প্রভাব, প্রশাসনিক তদবির বা অন্যান্য অস্বচ্ছ প্রক্রিয়ার অবসানে সম্প্রতি ১০ দফা দাবি উত্থাপন করে বাংলাদেশ শর্টফিল্ম ফোরামসহ ৩৩টি চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্ট সংগঠন। তারই প্রেক্ষিতে এবার তথ্য মন্ত্রণালয়ে প্রতিবাদলিপি পাঠিয়েছে এফডিসি কেন্দ্রীক সমিতিগুলো।
প্রতিবাদলিপিতে বাণিজ্যিক চলচ্চিত্রে সরকারি অনুদান বন্ধের দাবিকে চলচ্চিত্র শিল্প ধ্বংসের ষড়যন্ত্র বলে মনে করছেন সমিতিগুলোর নেতারা। চলচ্চিত্র শিল্পী, পরিচালক, প্রদর্শক, চলচ্চিত্রগ্রাহক সমিতি ও ফিল্ম এডিটরস গিল্ড এর প্রতিনিধিদের স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে তারা বলেন, ‘গত ৪ জুলাই সোমবার রাজধানীর শাহবাগে কয়েকজন চলচ্চিত্র নির্মাতা বাণিজ্যিক চলচ্চিত্রে সরকারি অনুদান বন্ধের দাবি জানিয়েছেন। বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে এবং চলচ্চিত্র শিল্পের জন্য, দেশের জন্য এবং সর্বোপরি মানুষের সুস্থ বিনোদনের জন্য ক্ষতিকর এই দাবি আমরা কোনোভাবেই সমর্থন করি না এবং এটিকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে চলচ্চিত্র শিল্পের ঘুরে দাঁড়ানোর বিরুদ্ধে একটি ষড়যন্ত্র বলে মনে করি।
বাণিজ্যিক চলচ্চিত্রকে সহায়তা দেওয়া যারা বন্ধ করতে বলেন, তাদের সঙ্গে শিল্পীরা নেই উল্লেখ করে চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সভাপতি ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, ‘দেশের মানুষ যে চলচ্চিত্র দেখতে চায়, হলে যায়, সেই চলচ্চিত্রকে সহায়তা দেওয়া যারা বন্ধ করতে বলে, তাদের সঙ্গে শিল্পীরা নেই। এ ধরনের স্বার্থপর দাবির তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।’
চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির সভাপতি ও সম্মিলিত চলচ্চিত্র পরিষদের নেতা সোহানুর রহমান বলেন, ‘সরকারি নীতিমালা পুরোপুরি অনুসরণ করে দেশের চলচ্চিত্র নির্মাতা-বোদ্ধাদের নিয়ে গঠিত কমিটিই অনুদান প্রদান করে। সরকার যে চলচ্চিত্রশিল্পকে রক্ষার চেষ্টা করছে, একে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করতে সম্মিলিত চলচ্চিত্র পরিষদ বুকের রক্ত দিতেও দ্বিধা করবে না।’
চলচ্চিত্র প্রযোজক সমিতির পক্ষে সাবেক সভাপতি খোরশেদ আলম বলেন, ‘স্বার্থপর আন্দোলনকারীদের বক্তব্য ভিত্তিহীন, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও স্বার্থসিদ্ধিমূলক। আমরা এ ধরনের অপতৎপরতার তীব্র প্রতিবাদ জানাই।’
বাণিজ্যিক সিনেমায় না দিয়ে আর্ট ফিল্মে অনুদান দেওয়াকে জনগণের অর্থে জনগণের সঙ্গে প্রতারণা উল্লেখ করে চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতির প্রধান উপদেষ্টা সুদীপ্ত কুমার দাস বলেন, ‘সরকার যখন আর্ট ফিল্মের জন্য লাখ লাখ টাকা দিচ্ছে, তখন থেকেই আমরা বলে আসছি, সাধারণ দর্শক যে সিনেমা দেখার জন্য হলে আসে না, সেসব সিনেমাকে সরকারি অর্থ দেওয়া প্রকৃত সিনেমাপ্রেমীদের সঙ্গে প্রতারণা।’